ঘুষ ছাড়া চেক পাস হয় না, ওয়াসার ঠিকাদাররা হয়রানির শিকার

চট্টগ্রাম ওয়াসার ঠিকাদারেরা হয়রানির শিকার। এমন প্রশ্নের সদুত্তর মিলছে না ওয়াসা অফিসে। ৫/৬ দিন হিসাব বিভাগে ঠিকাদারদের প্রাপ্য বিল আটকে থাকার অভিযোগ তুলেন তারা। সম্প্রতি চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর একটি অভিযোগ জমা দিয়েছেন।

‘চট্টগ্রাম ওয়াসা ঠিকাদার সমিতি’র সংগঠনের প্যাডে বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক কর্তৃক হয়রানি প্রসঙ্গে এ লিখিত অভিযোগ দিয়েছে সংগঠনটি। অভিযোগ করে এর একটি কপি মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়েছে এমন দাবি ঠিকাদার সমিতির।

প্রত্যক্ষভাবে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম ওয়াসা ঠিকাদার সমিতি গত ১১ এপ্রিল এ প্রতিষ্ঠানের প্যাডে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অভিযোগ পাঠিয়েছে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর। এতে অভিযোগ বরাতে উল্লেখ করেন, সমিতির সদস্যরা পাইপ লাইন মেরামত কেমিক্যাল সরবরাহ করে আসছে দীর্ঘ ২০ বছরেরও বেশি সময়। কিন্তু বিভিন্ন কাজের বিলের ফাইল হিসাব শাখায় যাওয়ার পর বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক বিভিন্নভাবে হয়রানি করেন। এ দফতরে প্রতিটি ফাইল ৫/৬ দিন আটকা পড়ে থাকে। সমিতির পক্ষ থেকে বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপকের সঙ্গে দেখা করার পরও সমাধান করা যাচ্ছে না। তিনি ফাইলের জন্য চুক্তিমূল্য অনুসারে সুবিধা দাবি করেন। অনেক সময় বিলের ফাইলে স্বাক্ষর দিলেও চেকে স্বাক্ষর করেন না। সপ্তাহ খানেক পর চেকে স্বাক্ষর করেন। এছাড়াও পূর্বের রেটে কাজ করছে ঠিকাদাররা কারণ বর্তমান রেট অনেক বেশি। অনেক সময় লোকসান দিয়েও কাজ করতে হয়। অনেক ঠিকাদার ক্ষুব্ধ এখন কাজ করতে রাজি না তারা। তারপরও সমিতি তাদেরকে মানিয়ে কাজ করাচ্ছে ।

এ ব্যপারে চট্টগ্রাম ওয়াসার বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক আবু সাফায়াত মোহাম্মদ শাহেদুল ইসলাম সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, চট্টগ্রাম ওয়াসা ইজিপি ছাড়া টেন্ডার করে না। অফিসিয়াল মিটিং ছাড়াও ওয়াসার ভূ-সম্পত্তি বিভাগের জটিলতাও আমাকেই সমাধান করতে হয়ে। ফলে হিসাব বিভাগের ফাইলগুলো পর্যবেক্ষণ করতে সময় লাগতে পারে। তাছাড়া অডিট বিভাগের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হয়। না হয় অডিট আপত্তি পড়ে ঠিকাদারদের ফাইলের বিপরীতে। এছাড়া ইজিপি’র শর্তানুযায়ী বিল পেমেন্ট সিস্টেমের ৫৯ নং পৃষ্ঠায় ৬৫ নং ধারায় উল্ল্যেখ রয়েছে, হিসাব বিভাগ বিল পরিশোধে সর্বোচ্চ ২৮ দিন সময় নিতে পারবে। যদি আমি কর্মস্থলে থাকি তাহলে আমার কোন ফাইলে ২/৩ দিনের বেশি সময় ক্ষেপন হয়নি।

এ বিষয়ে ঠিকাদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবছার উদ্দিন কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জবাবে বলেন, হিসাব বিভাগে ৫/৬ দিন ফাইল আটকে থাকে। চেকের বিপরীতে কি পরিমাণ ঘুষ দাবি করেন এমন প্রসঙ্গে বলেন, শতকরা ১ ভাগ দিতে হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক ঠিকাদার বলেন, এই ১ পারসেন্ট ঘুষ দেওয়ার পর‌ও বাণিজ্যিক ব্যাবস্হাপক তাদের ফাইল আটকে রাখেন বলে দাবি করেন তারা।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *