সেনাবাহিনীকে আন্তর্জাতিক মানে রূপ দিতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে-প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। চট্টগ্রাম ডেস্ক : দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে নবীন সেনা সদস্যসহ সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সেনাবাহিনীকে আন্তর্জাতিক মানে রূপ দিতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, জাতির পিতার প্রণীত প্রতিরক্ষা নীতির আলোকে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে সেনাবাহিনীকে আধুনিকায়নের বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বাহিনীকে আধুনিকভাবে গড়ে তোলার জন্য ফোর্সেস গোল-২০৩০ প্রণয়ন করা হয়েছে এবং তা বাস্তবায়ণের কাজ শুরু হয়েছে।

রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারির বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতির কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদান ও সুযোগ্য নেতৃত্ব তৈরিতে জাতির পিতা যে মিলিটারি একাডেমির স্বপ্ন দেখেছিলেন, তারই সফল বাস্তবায়িত রূপ আজকের এই বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি (বিএমএ)।

তিনি বলেন, ভাটিয়ারি মিলিটারি একাডেমিকে অত্যাধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন একাডেমিতে পরিণত করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে সকল প্রকার অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়েছে।

বর্তমানে এই একাডেমিতে বিভিন্ন বিষয়ে চার বছর মেয়াদি অনার্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি চালু করা হয়েছে। একই সঙ্গে ক্যাডেটদের কমিশন লাভের সময়কাল দুই বছর থেকে তিন বছরে উন্নীত করা হয়েছে। একটি প্রশিক্ষিত ও আধুনিক সেনাবাহিনী গঠনে এই উদ্যোগ যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করবে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকের বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অবকাঠামোগত, কৌশলগত এবং প্রযুক্তিগত দিক থেকে অতীতের যে কোনও সময়ের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে আমাদের সেনাবাহিনী দক্ষতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের সকল দেশ থেকে আমাদের বাহিনী প্রশংসা অর্জন করেছে।

নবীন অফিসারদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বাহিনীর অর্জিত প্রশংসা ও সুনামগুলো অক্ষুন্ন রেখে আরও এগিয়ে নিতে হবে। বিশ্বের যে কোনও প্রান্তের মানুষ শান্তি আর সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে জানবে-এটিই আমার প্রত্যাশা।
সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে হলেও দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করাই হবে তোমাদের পেশাগত জীবনের প্রধান ব্রত।

তোমাদের মনে রাখতে হবে, তোমরা এ দেশের সন্তান। জনগণের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই তোমাদের সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ ও হাসি-কান্নার সমান অংশীদার হতে হবে। সুযোগ্য নেতৃত্ব, সার্বিক দিকনির্দেশনা, পেশাদারিত্ব, দেশপ্রেম ও আন্তরিকতার মাধ্যমে তোমাদের দেশের সেবা করে যেতে হবে।

এর আগে সকালে হেলিকপ্টার যোগে সকালে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের ভাটিয়ারী মিলিটারী একাডেমীর প্যারেড মাঠে পৌছান। এসময় সেনা প্রধান তাকে স্বাগত জানান। পরে ৭৭তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদী কোর্সের সমাপনী এবং রাষ্ট্রপতি প্যারেড পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে মাধ্যমে ২৩৪ জন বাংলাদেশী, ২৯ জন সৌদি, ১ জন ফিলিস্তিনি এবং ১ জন শ্রীলংকান ক্যাডেটসহ ২৬৫ জন কমিশন লাভ করেন। এদের মধ্যে ২৭ জন নারী রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে নবীন সেনা সদস্যসহ সকলের প্রতি আহবান জানান।

এবারের বিএমএ দীঘমেয়াদী কোর্সে সিনিয়র আন্ডার অফিসার সাবির নেওয়াজ শাওন সেরা ক্যাডেট হিসাবে ‘সোর্ড অব অনার’ এবং বরকত হোসেন সামরিক বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্বের জন্য ‘সেনা বাহিনী প্রধান স্বর্ণপদক’ অর্জন করেন। প্রধানমন্ত্রী কৃতি ক্যাডেটদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।

রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।

এছাড়াও চট্টগ্রামের সংসদ সদস্য, সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী প্রধান, আঞ্চলিক অধিনায়কসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা, মন্ত্রী-সংসদ সদস্য, কূটনীতিক ও শিক্ষা সমাপনী ব্যাচের কমিশনপ্রাপ্ত ক্যাডেটদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *