ত্রাণ নিয়ে প্রস্তুত চসিক, ঝুকিপূর্ণ এলাকা ছাড়ার আহবান মেয়রের

উপকূলীয় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা আর পাহাড়ের পাদদেশে ঝুকিপূর্ণভাবে বসবাস করা জনগণকে চসিকের প্রস্তুত রাখা ৯০ টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণের আহবান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।

রোববার সকাল থেকে নগরীর দামপাড়ায় চসিক বিদ্যুৎ উপ-বিভাগ ভবনের নীচ তলায় খোলা কন্ট্রোলরুম থেকে ঘুর্ণিঝড়ের সার্বিক পরিস্থিতি ও সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করেন মেয়র। এসময় চসিকের কাউন্সিলরবৃন্দ ও কর্মকর্তারা গৃহিত কার্যক্রম সম্পর্কে মেয়রকে অবহিত করেন।

এসময় মেয়র বলেন, আমরা পাঁচ হাজার মানুষকে ত্রাণ দেয়ার জন্য শুকনো খাবার, ঔষধ, মোমবাতি সহ বিভিন্ন জরুরি দ্রব্য সংগ্রহে রেখেছি। ইতোমধ্যে লালখানবাজার, পূর্ব ষোলশহর ও দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডে ত্রাণ পৌঁছে গেছে। অন্য ওয়ার্ডগুলোতেও কাউন্সিলরদের মাধ্যমে বিতরণের জন্য ত্রাণ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি আমাদের ৫৫টি মেডিকেল টিম জরুরি মূহুর্তে সেবা দিতে প্রস্তুত। দুর্যোগ আঘাত হানলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক রাখতে প্রস্তুত আছে চসিকের বিদ্যুৎ উপ-বিভাগ।

“আমরা ৯০ টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখলেও অনেকে ঘূর্ণিঝড় ভয়াবহ হবেনা ভেবে ঝুকিপূর্ণ এলাকা থেকে বের করে দিলেও আবার সেখানে ফেরত যাচ্ছেন। উপকূলীয় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা আর পাহাড়ের পাদদেশে ঝুকিপূর্ণভাবে বসবাস করা জনগণের প্রতি আহবান আপনারা আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যান। আপনাদের জন্য খাবার, স্বাস্থ্যসেবা থেকে সবকিছু প্রস্তুত রাখা হয়েছে।”

সভার পর মেয়র ৪১ নং দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ডে সমুদ্র সৈকতসহ বিভিন্ন ঝুকিপূর্ণ স্থান পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি উপস্থিত গণমাধ্যমের উদ্দেশ্যে বলেন, শনিবার ভোর থেকে ৭ টি যানবাহনে করে ঝুকিপূর্ণ এলাকা ত্যাগ করে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মাইকিং করেছি। ঝুকিপূর্ণভাবে পাহাড়ের পাদদেশে থাকা বাসিন্দাদের সরিয়ে অনেকের বাসায় তালা লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে, আমরা মাইকিং করে গতকাল সমুদ্র সৈকত এলাকা থেকে লোকদের সরিয়ে দিলেও অনেকে কেবল কৌতুহলের বশে আবারও ফেরত আসছেন। অনেকে আবার ঘূর্ণিঝড়কে অবহেলা করে বারবার ঝুকিপূর্ণ এলাকা ফেরত যাচ্ছেন। জনসচেতনতা না থাকলে কেবল সরকারি পদক্ষেপে ক্ষয়-ক্ষতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখা সম্ভব নয়।

ভবিষ্যতে পাহাড়ে ঝুকিপূর্ণভাবে থাকা অধিবাসীদের সরাতে কাজ চলছে জানিয়ে মেয়র বলেন, ইতোমধ্যে ইএনডিপিকে ১৮ গণ্ডা ভূমি দেয়া হয়েছে পাহাড়ে ঝুকিপূর্ণভাবে থাকা অধিবাসীদের জন্য বহুতল ভবন গড়তে। তবে, জলবায়ু উদ্বাস্তুদের সংখ্যা চট্টগ্রামে দ্রæত বাড়ছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় বঙ্গবন্ধুকন্যার নেয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের মতো বড় প্রকল্প নেয়া হলে এ সমস্যা সমাধান হবে। আর বর্তমানে অবৈধভাবে পাহাড় দখল করা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই কঠোর অভিযানের জন্য চসিক ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে অভিযান পরিচালনায় সম্মত হয়েছে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব খালেদ মাহমুদ, কাউন্সিলর ছালেহ আহম্মদ চৌধুরী, আবুল হাসনাত মোহাম্মদ বেলাল, তছলিমা বেগম নুরজাহান, মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম, প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরীসহ চসিকের বিভিন্ন বিভাগ ও শাখা প্রধান।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *