ভারত হচ্ছে বাংলাদেশের সত্যিকারের বন্ধু: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

সত্যিকারের বন্ধু তার বন্ধুর বিপদে কখনো ফেলে যায় না। ভারত হচ্ছে বাংলাদেশের সত্যিকারের বন্ধু। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের যখন চরম দুঃসময়, ঠিক তখনই বন্ধুত্বের হাত বাড়ায় ভারত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই বন্ধুত্বের গভীরতা বাড়ছে। যতদিন ভারত-বাংলাদেশ দেশ দুটি থাকবে, ততদিন আমাদের এই অকৃত্রিম বন্ধুত্ব অটুট থাকবে।

মঙ্গলবার (৩০ মে) সন্ধ্যায় মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণের লক্ষ্যে ঢাকার গুলশানে ভারতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে মুক্তিযুদ্ধ গ্যালারি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল একথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ গ্যালারিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন দুর্লভ ছবি, মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণের চিত্র, মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন গ্রন্থের সমাহার এবং প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা রয়েছে। এটা দুই দেশের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস তুলে ধরবে। মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ ও ভারতীয় বাহিনীর বৃহত্তর বিজয়গাঁথা সম্পর্কে জানতে পারবেন তারা।

‘আমি মনে করি একই ধরনের সাংস্কৃতিক আবহে বসবাসকারী দুই দেশের মানুষের মধ্যে হৃদয়ের বন্ধন আরও দৃঢ় হবে। অতীতে পূর্বপুরুষদের পারস্পরিক সহযোগিতা আর ইতিহাসকে ধারণ করে ভবিষ্যতে উদ্ভূত যে কোনো সমস্যা দুই দেশের নতুন প্রজন্ম সমন্বিত সমাধানের পথ পাবে।’

কামাল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের এসব জীবন্ত ইতিহাস সংরক্ষণে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার এই উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বন্ধু রাষ্ট্র ভারতের ভূমিকা অবিস্মরণীয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পূর্ব ও পশ্চিম রণাঙ্গণে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে সাড়ে তিন হাজারের বেশি সেনা শহীদ হন। আহত হন ১০ হাজারের মতো সদস্য। যাদের রক্ত এই স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে মিশে আছে।

তিনি বলেন, আমি সেইসব বীর সেনাদের স্মরণ করছি। বাংলাদেশের মানুষ সব সময় তাদের স্মরণ করে। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর কয়েক মাসের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে প্রায় এক কোটি শরণার্থী আশ্রয় দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সমর প্রশিক্ষণ দেয় ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সমর্থন আদায়ে প্রচেষ্টা চালায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে বন্ধুরাষ্ট্র ভারত অসামান্য অবদান রাখে।

মন্ত্রী আরও বলেন, আমি মনে করি ভারতীয় হাইকমিশন যে ‘লিবারেশন ওয়ার গ্যালারি’ স্থাপনের মহৎ উদ্যোগ নিয়েছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আমাদের গৌরবের ইতিহাস। বাংলাদেশ-ভারত উভয় দেশের মানুষের ইতিহাস। এ বীরত্বগাঁথা সম্পর্কে দুই দেশের নতুন প্রজন্মকে জানতে হবে।

এর আগে হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ের জন্যই ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ঐতিহাসিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। দুদেশের বন্ধুত্ব ও সংহতির চেতনা অটুট। যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ভারতের সমর্থনকে নির্দেশ করে।

বক্তব্য শেষে ঢাকায় প্রণয় ভার্মা ও আসাদুজ্জামান কামাল গ্যালারির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। পরে পুরো গ্যালারি ঘুরে দেখেন।

অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব উপস্থিত ছিলেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *