ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল শিশু মৃত্যু হ্রাস করে : সাংসদ দিদার

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি: সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় পর্যায়েও সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অনুষ্টিত হয়েছে দিনব্যাপী জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন-২০২৩।

আজ রোববার (১৮ জুন) সকালে জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারীস্থ হোসাইনীয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে একটি শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাইয়ে দিয়ে বিভাগীয় পর্যায়ের জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের আনুষ্ঠানিক শুভ উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম-৪ সীতাকুণ্ড আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব দিদারুল আলম।

বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ও সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যৌথভাবে ক্যাম্পেইনের আয়োজন করেন।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মোঃ ইফতেখার আহমদের সভাপতিত্বে ও সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ নুর উদ্দিন রাশেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনী অনুষ্টানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শাহাদাত হোসেন, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জিয়াউল কাদের, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার শফিউল আলম, ইউনিসেফ’র বিভাগীয় কো-অর্ডিনেটর ইউ বে সুই, হোসাইনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পারভিন আক্তার, বিদ্যালয পরিচালনা কমিটির সভাপতি শামসুল আরেফিন, ভাটিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নাজিম উদ্দিন, স্থানীয় সাংবাদিক সেকান্দর হোসাইন, সাইফুল মাহমুদ, কামরুল ইসলাম দুলু, স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার অহিদুল আলম, স্বাস্থ্য পরিদর্শক ত্রিদীপ সরকার, হুমায়ুন আহমেদ, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক, স্বাস্থ্য সহকারী, পরিবার কল্যাণ সহকারী, স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ ও ওয়ার্ডেও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

আজ রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অনুষ্টিত দিনব্যাপী জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন চলাকালীন সীতাকুন্ড উপজেলায় মোট ২৪০টি স্থায়ী ও অস্থায়ী কেন্দ্রে ৬-৫৯ মাস বয়সী মোট ৬১ হাজার ৮৫০ জন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। তন্মধ্যে ৬-১১ মাস বয়সী ৯ হাজার ৭৪০ জন শিশুকে একটি করে নীল ক্যাপসুল এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী ৫২ হাজার ১১০ জন শিশুকে একটি করে লাল ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়।

জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব দিদারুল আলম বলেন, ১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ কর্মসূচীর শুভ সূচনা করেন। ৬-১১ মাস বয়সী শিশুকে একটি নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (১ লক্ষ আই.ইউ) ও ১২-৫৯ মাস বয়সী শিশুকে একটি লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (২ লক্ষ আই.ইউ) খাওয়ানো হচ্ছে। শিশুকে সুস্থ রাখতে হলে জন্মের ৬ মাস পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ ছাড়া আর অন্য কোন খাবার দেয়া যাবে না। শিশুর বয়স ৬ মাস পুর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি পরিমাণ মত ঘরে তৈরী সুষম খারার দিতে হবে। ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল শিশুর অপুষ্টি, রাতকানা রোগ প্রতিরোধ, দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত, হাম, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়াজনিত মৃত্যুর হার হ্রাসসহ সকল ধরণের মৃত্যুর হার হ্রাস করে।

তিনি বলেন, সরকারের সকল মন্ত্রনালয়ের সমন্বয়ের মাধ্যমে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হয়ে থাকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতায় ইতোমধ্যে আমরা যেভাবে করোনা মোকাবিলায় সক্ষম হয়েছি, ঠিক জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন বাস্তবায়নও অত্যন্ত প্রশংসনীয়।

তিনি আরও বলেন, কোন শিশু যাতে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাসসুল খাওয়া থেকে বাদ না পড়ে সে লক্ষ্যে বিভাগের প্রত্যেক জেলা, মহানগর, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে জনগণকে জানান দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি মসজিদ, হাটবাজার, বাস স্ট্যান্ড, নৌ-ঘাটসহ গুরুত্বপূর্ণস্থানেও ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে। সরকারী প্রতিষ্ঠান, জনপ্রতিনিধি, আনসার-ভিডিপি ও এনজিও সংস্থাগুলো ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের কাজে নিয়োজিত রয়েছে। ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের যে কোন ধরণের অপপ্রচার ও গুজব রোধে প্রশাসন সতর্ক রয়েছে। বিভাগীয় ও জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কন্ট্রোল রুম খোলা রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পাশাপাশি স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের বিশেষ টিমগুলো ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন মনিটরিং করছেন। মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমেও এ কার্যক্রম মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *