চুক্তির পর থামলো বিদ্রোহ, বেলারুশে যাচ্ছেন ওয়াগনার প্রধান

রাশিয়ার বেসরকারি সামরিক সংস্থা ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন তার সৈন্যদের নিয়ে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রোস্তোভ-অন-ডন ত্যাগ করছেন। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় একটি চুক্তির পর পরিস্থিতি শান্ত হলো। তারা ইতোমধ্যে শহর ত্যাগ করতে শুরু করেছে।

জানা গেছে, চুক্তির অধীনে প্রিগোজিন ও তার সৈন্যরা বিদ্রোহের ঘোষণার পরও বিচারের আওতায় পড়বে না। প্রিগোজিন এখন বেলারুশে যাচ্ছেন।

ওয়াগনার সৈন্যরা শনিবার (২৫ জুন) সকালে রোস্তভের রাশিয়ার সাউদার্ন মিলিটারি ডিস্ট্রিক্টের সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং মস্কোর দিকে অগ্রসর হতে শুরু করে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বিষয়টিকে বিশ্বাসঘাতকতা এবং রাষ্ট্রদ্রোহের কাজ বলে বর্ণনা করেন।

বিবিসির লাইভ প্রতিবেদন বলছে, ইয়েভগেনি প্রিগোজিন ও তার সৈন্যদের বিচার করা হবে না বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। ওয়াগনার যোদ্ধারা দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রোস্তোভ-অন-ডন ছেড়ে যেতে শুরু করেছে, যেখানে তাদের বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল।

এদিকে, রোস্তোভ-অন-ডন থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, ওয়াগনার সৈন্যরা মস্কোর দিক থেকে ফিরে যাচ্ছেন ফিল্ড ক্যাম্পের দিকে। স্থানীয় লোকেরা জড়ো হয়ে শহরের রাস্তায় উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল। কিছু বাসিন্দা উল্লাস করছিল। কেউ কেউ ওয়াগনার সৈন্যদের হাতে হাত মেলানোর চেষ্টা করছিল।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান দ্য সুফান গ্রুপের রাশিয়া ও নিরাপত্তা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ কলিন ক্লার্ক বলেন, হঠাত করে ওয়াগনার গ্রুপের এমন ঘটনা পুতিনকে দুর্বল করে দিয়েছে। মস্কোও বড় ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে। যদিও পুতিনকে কখনো দুর্বল মনে হয়নি।

তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার পক্ষে ওয়াগনারকে পাশ কাটানো সম্ভব নয়। রাশিয়া শুধু ইউক্রেনে নয়, সারা বিশ্বে- সিরিয়া, মালি এবং অন্যান্য জায়গায় রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নের জন্য ওয়াগনার গ্রুপের ওপর নির্ভরশীল।

এর আগে, সম্প্রতি ওয়াগনার প্রধান প্রিগোজিন তার লোকদের উপর রুশ সৈন্যদের মিসাইল হামলার অভিযোগ তোলেন। তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে মস্কোতে সামরিক পদযাত্রার ঘোষণা দেন। তাদের ওপর হামলা চালানোদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য মস্কোতে পদযাত্রা করতে চান বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ওয়াগনার প্রধান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, তাদের পথে কেউ বাধা দিলে তার বাহিনী তাদের ধ্বংস করবেন। তারা মস্কোর দিকে অগ্রসর হচ্ছেন।

যদিও রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই মিসাইল হামলার কথা অস্বীকার করেছে। সেইসঙ্গে ওয়াগনার প্রধানকে তাৎক্ষণিকভাবে সবরকম ‘অবৈধ কার্যক্রম’ বন্ধের আহ্বান জানায়।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *