গাজীপুরে পুলিশ-পোশাক শ্রমিক সংঘর্ষ, নারী নিহত

গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ী এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনরত পোশাকশ্রমিকদের সংঘর্ষে নারী শ্রমিক আঞ্জুয়ারা খাতুন (৩০) নিহত হয়েছেন। বুধবার (৮ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়।

সকালে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কোনাবাড়ী থানার ওসি এ কে এম আশরাফ উদ্দিন দুপুর ১২টায় আঞ্জুয়ারার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ।

নিহত পোশাক শ্রমিক আঞ্জুয়ারা খাতুন সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার চর নাটিপাড়া গ্রামের জামাল হোসেনের স্ত্রী। তিনি কোনাবাড়ীর ইসলাম গার্মেন্টে সেলাই মেশিন অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন।

সকাল সাড়ে ৯টার পর থেকে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী, বাইমাইল ও জরুনসহ বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলন করেছেন শ্রমিকরা। এ সময় তারা যানবাহন ভাঙচুর ও সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অগ্নিসংযোগ করেন। পুলিশ গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ ঘটনায় অন্তত ৮ থেকে ১০ শ্রমিক আহত হয়েছেন।

আন্দোলনরত শ্রমিক, স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানান, গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় বেতন বাড়ানোর দাবিতে ১৫ দিনের বেশি সময় ধরে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন ও বিক্ষোভ করছেন। মঙ্গলবার মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ করে সরকার। তবে এ মজুরিতে শ্রমিক ও তাদের সংগঠন সন্তুষ্ট নন। এর জেরে আজ সকাল থেকে গাজীপুরের কোনাবাড়ী, বাইমাইল ও জরুনসহ বিভিন্ন এলাকায় তারা আন্দোলন ও বিক্ষোভ শুরু করেন।

একপর্যায়ে শ্রমিকরা কাঠ ও টায়ারে আগুন ধরিয়ে ওই সব এলাকার বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন যানবাহনে ভাঙচুরের চেষ্টা করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করলে শ্রমিকরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেটে কমপক্ষে ১০ শ্রমিক আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, কোনাবাড়ী পপুলার এবং কোনাবাড়ী ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শিল্প পুলিশ, থানা-পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

কোনাবাড়ী থানার ওসি এ কে এম আশরাফ উদ্দিন বলেন, শ্রমিকরা আঞ্চলিক সড়কগুলোতে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে রাখে। এ সময় তারা ভাঙচুরের চেষ্টা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।

 

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *