এরা পাকিস্তানি বাহিনীর চেয়েও জঘন্য: বিএনপিকে তথ্যমন্ত্রী

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যতদিন চোরাগোপ্তা হামলা চলবে, ততদিন গ্রেফতার অভিযান চলবে। ২৮ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশে একটি নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। কীভাবে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করা হয়েছিল, হাসপাতালে হামলা করা হয়েছিল, অ্যাম্বুলেন্সসহ গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। একজন পুলিশকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। এরা পাকিস্তানি বাহিনীর চেয়েও জঘন্য। পাকিস্তানের বাহিনী মানুষকে হত্যা করেছে, কিন্তু জীবন্ত পুড়িয়ে মারেনি।

সোমবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি অবরোধের প্রতিবাদে আয়োজিত সর্তক অবস্থান কর্মসূচিতে এ কথা বলেন তিনি।

হাছান মাহমুদ বলেন, কেউ মুরুব্বিয়ানা করবেন না। মানবাধিকারের কথা বলে যারা ধোয়া তোলেন— আমাদের দেশে মানবাধিকার সংগঠন, বুদ্ধিজীবী, যারা মাঝেমধ্যে বিবৃতি দেন, মির্জা ফখরুল সাহেবের জন্য বিবৃতি দিয়েছেন। তারা কেন আগুন-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিচ্ছেন না? পুলিশ হত্যার ঘটনায় কেন বিবৃতি দিচ্ছেন না? আমাদের নারী কর্মীদের হেনস্তা করা হলো সেটা বিরুদ্ধে কেন বিবৃতি দিচ্ছেন না? প্রধান বিচারপতি বাড়িতে হামলা, হাসপাতালে হামলা, এটা নিয়ে কেন বিবৃতি দিলেন না?

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ২৮ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশে একটি নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি, কীভাবে ২৮ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করা হয়েছিল, হাসপাতালে হামলা করা হয়েছিল, অ্যাম্বুলেন্সসহ কীভাবে গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। সাপকে যেভাবে পিটিয়ে মারে তার চেয়ে জঘন্য কায়দা একজন পুলিশকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। একজন সাংবাদিককে মাটিতে ফেলে পেটানো হয়েছে, এটি কোনো সভ্যতা হতে পারে না। এটি কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড হতে পারে না। সেদিন ৩২ জন সাংবাদিককে আহত করা হয়েছিল। আমাদের দলীয় নারী কর্মীদের কাপড় ধরে টানাটানি করেছিল। এরা পাকিস্তানি বাহিনীর চেয়েও জঘন্য। পাকিস্তানের বাহিনী মানুষকে হত্যা করেছে, কিন্তু জীবন্ত পুড়িয়ে মারেনি। কিন্তু এরা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, রুহুল কবির রিজভী সাহেব গোপন আস্তানা থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করছেন। যেভাবে আল-কায়েদার প্রধান গোপনে থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করতেন, এখন রিজভী সাহেবও ঠিক আল কায়দার মতো কর্মসূচি ঘোষণা করেন। অবরোধের নামে গাড়ি পোড়াতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ। এ হচ্ছে তাদের কর্মসূচি। অনেকে প্রশ্ন রেখেছেন, রিজভী সাহেব গোপন আস্তানা থেকে কর্মসূচি দিচ্ছেন এবং গাড়ি পোড়ানো হচ্ছে তারপরও কেন তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না? এ পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ দেশে মানুষের মধ্যে শান্তি, স্থিতিশীল পরিবেশ রাখার জন্য শান্তিপূর্ণ অবস্থা নিয়েছি। সারাদেশে আমাদের নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখন দাবি উঠেছে প্রত্যেকটি সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার। যতদিন এ চোরাগোপ্তা হামলা চলবে যতদিন, ততদিন গ্রেফতার অভিযান চলবে। ২৮ তারিখ কিছু করতে না পেরে এখন পোশাক খাতে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের সরকার পোশাকশ্রমিকদের ৫৬ শতাংশ বেতন বাড়িয়ে সাড়ে ১২ হাজার টাকা করেছে, প্রজ্ঞাপনও জারি করেছে। এক লাফে ৫৬ শতাংশ বৃদ্ধি।

কোনো কোনো সংগঠন দাবি দিয়েছে ২৫ হাজার টাকা দিতে হবে। আরে বেটা, বিসিএস পাস করে যখন জয়েন করে তখন বেতন পায় ২২ হাজার টাকা। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করার পর এতগুলো পরীক্ষা দিয়ে যখন চাকরি শুরু করে বেতন শুরু হয় ২২ হাজার টাকায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে পাস করে ব্যাংকে চাকরি শুরু হয় ২০ হাজার টাকা করে। আগে ইন্ডাস্ট্রি বাঁচাতে হবে। শ্রমিক সংগঠনকে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে তারা কেউ শ্রমিক না।

এসময় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান সিরাজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, সহ-সভাপতি হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কাজী মোরশেদ হোসেন কামাল, মো. মিরাজ হোসেন, মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সারোয়ার কবির, দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ, আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জগলুল কবির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *