প্রেমের ফাঁদে ফেলে টাকা দাবি দুই সন্তানের জননীর

চট্টগ্রামে সম্প্রতি আলোচনায় এলেন দুই সন্তানের জননী মমতাজ বেগম (৩৫)। স্বামী আবদুল সোবাহান। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ছেলেদের প্রলোভন দেখিয়ে তাঁকে বিয়ে করার জন্য বাধ্য করতেন ওই মহিলা। বিয়ে করে ছেলেদের জমি এবং অর্থ হাতানোই তাঁর লক্ষ্য।প্রথমে ধনী ব্যক্তিদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহের পর প্রথমে বন্ধুত্ব, অতঃপর প্রেম। এরপর সময় সুযোগ বুঝে সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে কৌশলে দুজনের বসে থাকার ছবি তুলে। তারপর সেসব ছবি অনলাইনে প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে বিয়ে করতে বাধ্য করেন তিনি। তাতেও গায়েল করতে না পারলে নিজেই আত্মহত্যা করে সবাইকে আসামি করার কথা বলে হুমকি প্রদান করেন‌। বিয়ের চাপে ফেলে মোটা অংকের টাকা আদায় করাই ওই নারীর লক্ষ্য।

সম্প্রতি ওই নারী তার নোটবুকে লিখেন, ‘আমি মরার আগে কিছু কথা লিখে রেখে গেলাম। আমি বারবার কাউসারের হাতে পায়ে ধরে অনুরোধ করে বলেছিলাম আমি বাঁচতে চাই। তুমি আমাকে বাঁচতে দাও। কিন্তু সে আমার কোন কথা শোনে নাই। এমনকি ওর ফ্যামিলিকেও বলছি, তারাও কথা শোনে নাই। আমার কাছ থেকে নগদ এক লক্ষ আর পাঁচ ভরি সোনা নিয়েছে। বলেছে যদি আমি কাউসারকে বিদেশে পাঠাতে পারি তাহলে ওরা আমাকে কাউসারের বউ করে নিবে। আর এখন সবকিছু নেয়ার পর আমার সাথে যোগাযোগ করে না কেউ। এখন আমার কিছু ছবি দেখিয়ে আমাকে ভয় দেখায়।’এ নোট বুক পড়লে ওই নারীর অসহায়ত্বই ফুটে ওঠে। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা।অসহায়ত্ববোধ কিংবা আত্মহত্যার জন্য নয়, এ নোটবুক লিখেছেন ওই ছেলে ও তার পরিবারকে ব্ল্যাকমেইল করতে। নোটবুকে তার পরিকল্পনার কথা লেখার পর তা ছেলের হোয়াটসঅ্যাপে ছবি তুলে পাঠায়। এটি নিরব ব্ল্যাকমেইল। টাকা আত্মসাৎ এর একটি নতুন কৌশল। এভাবেই দিনের পর দিন ব্ল্যাকমেইল করে আসছে নিরীহ মানুষদের।

এ নোটবুক লিখার পর গত ২ অক্টোবর কালামিয়া বাজার সিলেট কোম্পানির ছোট বাড়িতে অবস্থানরত ছেলের চাচার ভাড়া বাসায় উশৃঙ্খল আচরণ করেন ওই নারী। দা নিয়ে কখনো আত্মহত্যা করতে যান, কখনোবা মারধর! তাই অবস্থা বেগতিক দেখে ৯৯৯ এ ফোন দেন ছেলের চাচা মোঃ আলম (৩৬)। ট্রিপল নাইনে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন বাকলিয়া থানায় কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তা মোঃ লুৎফর। পরে পুলিশ দেখে ওই নারী সরে যান। তবে দুই অক্টোবরের ঘটনা স্মরণ করতে পারছেন না বলে জানা ওই পুলিশ কর্মকর্তা।এ ঘটনার কয়েকদিন পর পুনরায় সঙ্ঘবদ্ধ হয় এই প্রতারক চক্র। ছেলের চাচাকে মুঠোফোনে ফোন দিয়ে হুমকি ধমকি প্রদর্শন করেন ফারুক নামের এক যুবক। ছেলের চাচাকে মুঠোফোন দিয়ে মমতাজের পুত্রবধূকে বলতে শোনা যায়, টাকা পয়সা দিয়ে মিটমাট করে ফেলেন। নয়তো সমস্যা বড় হবে।

ব্ল্যাকমেইলের শিকার ওই যুবক বলেন, ‘মমতাজের বয়স ৩৫, অন্যদিকে আমার বয়স ২১। তার সাথে শুধুমাত্র আমার অনলাইন বন্ধুত্ব ছিল। তিনি নিজে একদিন আমাকে পার্কে দেখা করতে বললে, আমি দেখা করেছি। কিন্তু তার সাথে আমার কোন শারীরিক সম্পর্ক হয়নি। সে আমাকে ফাঁদে ফেলে টাকা চাইছে।’

এক্ষেত্রে মমতাজ বলেন, কারা ব্ল্যাকমেইল করছে এটা আমার বিষয় নয়। আমি ভুক্তভোগী। কাউসার আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেছে। সে কেন আমাকে বিয়ে করবে না?হুমকির বিষয়টি জানতে মোহাম্মদ ফারুককে তার মুঠোফোনে কল দিলে তিনি রং নাম্বার বলে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *