শেখ হাসিনা থাকলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, আজকের বাংলাদেশে তাঁর কোন বিকল্প নাই: তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, শেখ হাসিনা থাকলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, আজকের বাংলাদেশে জননেত্রী শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নাই। যে যত কথাই বলুক রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে যিনি ‘না’ বলতে পারেন এবং বড় রাষ্ট্রের থাবা কে যিনি উপেক্ষা করতে পারেন, তিনি হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।

দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে শেখ হাসিনার মতো সাহস রাখে বাংলাদেশে আর কোন নেতা আছে কিনা ? এমন প্রশ্ন রেখে তথ্যমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বব্যাংককে বৃদ্ধাঙ্গুলি জানিয়ে নিজের টাকায় পদ্মা সেতু করতে পেরেছেন। বিশ্বব্যাংকও ভাবেনি, এটি বাংলাদেশ করতে পারবে, বঙ্গবন্ধু কন্যা সেটি করে দেখিয়েছেন। এরপর বিশ্ব ব্যাংক আবার টাকা দিতে চেয়েছিল, তিনি বলেছেন পদ্মা সেতুতে আমার টাকার দরকার নেই, তোমরা টাকা দিতে চাও অন্য প্রকল্পে দাও। সেজন্য আবার রেলব্রীজ করা হচ্ছে, ওখানে অবশ্য, বিশ্ব ব্যাংক স্বপ্রণোদিত হয়ে টাকা দিচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় চট্টগ্রামের হোটেল আগ্রাবাদের ইছামতী হলে ইনল্যান্ড ভেসেল ওনার্স এসোসিয়েশন অব চিটাগাং এর উদ্যোগে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন নৌ-বন্দর ও গন্তব্যে পণ্য পরিবহন পরিচালনা কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী পুরো দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। আপনারা জানেন, চট্টগ্রামে বে-টার্মিনাল নির্মাণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বে-টার্মিনালে স্বাভাবিক সময়ে ১২ মিটার ড্রাফটের জাহাজ থাকবে, এবং সেটিকে একটু ড্রেসিং করে জোয়ারের সময় ১৪ মিটার ড্রাফটের জাহাজও ডুকতে পারবে। পাশাপাশি মাতারবাড়িতে ১৮ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিরতে পারার মতো করে বন্দর তৈরি করা হয়েছে। এই দুই জায়গা থেকে ছোট ছোট কার্গো শিপে করে পায়রা, মংলা এবং ঢাকা শহরের আশেপাশে যে ইন্ডাস্ট্রিগুলো হয়েছে সেখানে পরিবহন করা হবে। এখন যেভাবে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কিছুটা করা হয়।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এই মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন শুধু চট্টগ্রাম কিংবা বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে নয়, পুরো অঞ্চলের কথা মাথায় রেখে বে-টার্মিনাল ও মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করা হয়েছে। ত্রিপুরার মূখ্যমন্ত্রীর সাথে আমার কথা হয়েছে, তিনি জানিয়েছেন, আসাম উদগ্রীব হয়ে বসে আছেন কখন তারা চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করতে পারবেন। আমাদের সরকারের সাথে চুক্তি হয়েছে এবং একই সাথে অবকাঠামগত উন্নয়ন করা হয়েছে। রামগড় দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে, আখাউড়া দিয়ে রেলপথ নির্মাণ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আগরতলার দূরত্ব মাত্র ৮০ কিলোমিটার।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, সমস্ত কিছুকে মাথায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এই মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। চট্টগ্রামকে ঘিরে অনেক পরিকল্পনা হয়েছে, বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর যখন পুরো উদ্যোমে চালু হবে, তখন সেখানে কমপক্ষে ১৫ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। বেশ কয়েকটা ইন্ডাস্ট্রি ইতিমধ্যে প্রোডাকশনে গেছে। আগামী বছর মার্চ নাগাদ সেখানে দেশের প্রথম ইলেকট্রিক গাড়ি নির্মিত হবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ফোর লেনেও হচ্ছে না, এখন সিক্স লেনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। রাস্তার পাশাপাশি আমাদের ওয়াটার ট্রান্সপোর্টেশন বাড়াতে হবে। এবং ওয়াটার ট্রান্সপোর্টেশন ব্যয় সাশ্রয়ি। এটি পরিবেশবান্ধব, একই সাথে এটি আমাদের নদীর নাব্যতা ও ঠিক রাখে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল চালু হয়েছে। এসমস্ত উদ্যোগ এবং বাস্তবায়ন মানুষের স্বপ্নকেও হার মানিয়েছে।

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান বলেন, গত ১৫ বছরে ব্যবসা-বাণিজ্যের অনেক সমৃদ্ধি এসেছে। ব্যবসায়ী সমাজকে অনুরোধ জানাবো, ব্যবসা এমন একটা জিনিস সেটি শুধু নিজের জন্য নয়, সমাজের জন্যও অনেক কিছু করা যায়। মাথায় রাখতে হবে এই দেশটা আমাদের সবার। সুতরাং নিজের কল্যাণের পাশাপাশি জনকল্যাণের কথাটাও মাথায় রাখতে হবে।

তিনি বলেন, ভারতের একটি পত্রিকায় খবর আসল, আর সেটির সূত্র ধরে বাংলাদেশের একটি পত্রিকা খবর ছাপালো মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করছে ভারত, এক ঘণ্টার মধ্যে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেল, এবং গ্রাম পর্যায়ে খুচরা বিক্রেতা ও বাড়িয়ে দিল। এটাতো অসাধু ব্যবসায়ী ছাড়া অন্য কিছু নয়। সুতরাং এই ধরনের কাজগুলো যাতে কেউ না করে সেক্ষেত্রেও অ্যাসোসিয়েশনের একটি ভূমিকা রাখা প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, দেশের এই উন্নয়ন অগ্রগতি অব্যাহত রাখার জন্য আপনারা আগামী নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে যাবেন, সবাইকে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে অনুরোধ জানাবেন। দেশে নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করবেন।

ইনল্যান্ড ভেসেল ওনার্স এসোসিয়েশন অব চিটাগাং এর সভাপতি হাজী শফিক আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা ৭ আসনের এমপি হাজী মো. সেলিম, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কার্গো এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি বেলায়েত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অমল চন্দ্র দাস, বক্তব্য রাখেন আইভোয়াক এর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. আজিজুর রহমান, নরোত্তম সাহা পলাশ, কাজী মনিরুল ইসলাম, খালেদ মাহমুদ প্রমুখ।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *