মিরসরাইয়ে বিএসআরএম কারখানায় রেকার চাপায় দিনমজুরের মৃত্যু

মিরসরাই প্রতিনিধি::::চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বিএসআরএম কারখানায় স্ক্রাপ আলোড় করার সময় রেকারের চাকার নিচে পৃষ্ঠ হয়ে এক দিনমজুরের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের নাম সুজন চন্দ্র নাথ (৩০)।

রোববার (১৪ জানুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার সোনাপাহাড় এলাকায় বিএসআরএম কারখানার অব্যন্তরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত সুজন উপজেলার কাটাছরা ইউনিয়নের তেতৈয়া গ্রামের সুভাষ চন্দ্র নাথের ছেলে।

বিশ্বস্থ সুত্রে জানাযায়, লোহার দরপতন ও স্ক্রাপ জাহাজ কাটা বন্ধ থাকায় গত দুই মাস বন্ধ ছিল বিএসআরএম কারখানায় স্ক্রাপ আনলোডিং এর কাজ। দীর্ঘ ২ মাস বন্ধ থাকার পর আজ রবিবার ১৪ জানুয়ারি পুনরায় শুরু হয় লরি থেকে স্ক্রাপ আনলোডিং এর কাজ। ২ মাসের বেকারত্ব শেষে অন্যান্য দিনমজুরের সাথে কাজে যোগ দেন এতিম সুজন। কাজের ফাঁকে লরি থেকে স্ক্রাপ রিসিভ করে মোভ করার সময় বিএসআরএম কারখানায় একটি নিজ্বস্ব রেকারের সামনের চাকার নিচে পৃষ্ঠ হন সুজন। এতে রেকারের চাকার চাপে অন্ডকোষ ফেটে গিয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। নিহত সুজন হাইটেক ইঞ্জিনিয়ারিং নামে একটি শ্রমিক সাপ্লাইয়ার এজেন্টের মাধ্যমে বিএসআরএম কারখানায় অন্যান্যদের মতোই দিন মজুর হিসেবে কাজ করতেন। তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে বিএসআরএম এর স্ক্রাপ আনলোডিং এর মতো ঝুঁকি পূর্ণ কাজ করলেও নিহত সুজনদের মতো কয়েক হাজার দিনমজুর কেউ বিএসআরএম কারখানার নিয়োগপ্রাপ্ত শ্রমিক কিংবা দিনমজুর নয়। ফলে এখানে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনায় বহু শ্রমিক মারা গেলেও তাদের দায় এড়িয়ে যায় এই বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠানটি।

শ্রমিক মৃত্যুর বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেলোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, শ্রমিকটি বিএসআরএম কারখানার অভ্যন্তরে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। তবে কর্মক্ষেত্রে শ্রমিক মৃত্যুতে ক্ষতি পুরনের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন শ্রমিকরা বিএসআরএম কারখায় সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত নয় তাই তাদের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নেই। তারা সাপ্লাইয়ারদের মাধ্যমে কারখানায় কাজ করে তবুও কেই ক্ষতিগ্রস্ত হলে যতটুক সম্ভব সহায়তা করা হয়।

জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল্লাহ আল হারুন জানান, বিএসআরএম কারখানায় শ্রমিক নিহতের ঘটনায় থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। নিহতের মৃতদেহ তার পরিবারের হেফাজতে রয়েছে।
বাংলাদেশ শিল্প ও কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক কুসুম আক্তার সোমা জানান, যে কোন কলকারখানায় শ্রমিক দুর্ঘটনা কিংবা নিহতসহ নিরাপত্তা জনিত যে কোন ঘটনার তথ্য আমাদেরকে অবহিত করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু মিরসরাইয়ের সোনাপাহাড় এলাকায় অবস্থিত বিএসআরএম কারখানায় যেকোন দূর্ঘটনার তথ্য অধিদপ্তরকে অবহিত করা হয়না। আজকের ঘটনা আমরা জানতে পেরেছি। খোঁজখবর নিয়ে যাচাই করে দেখা হবে নিরাপত্তার কোন ঘাটতির কারনে শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে কিনা।

স্থানীয় ৩নং ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মাষ্টার জানান, বিএসআরএম কারখানায় তার ঠিকাদারি কাজ না থাকায় কারখানার অভ্যন্তরের বিষয়গুলো জানা নেই। শ্রমিক মৃত্যুর খবরটি তিনি জানেন না।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *