সোলেইমানির জানাজায় পদদলিত হয়ে নিহত ৩৫

মার্কিন হামলায় নিহত ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর অভিজাত শাখা কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলাইমানির জানাজা পরবর্তী শোক মিছিলে পদদলিত হয়ে তার নিজশহর কেরমানে ৩৫ ইরানির মৃত্যু হয়েছে।

দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বলছে, তার দাফনানুষ্ঠানে লাখ লাখ শোকার্ত মানুষের ঢল নেমেছে। এতে আরও ৪৫জন আহত হয়েছেন।

ঘটনাস্থলের ভিডিওতে দেখা গেছে, শোকার্ত লোকজন অবসন্ন হয়ে ফ্লোরে পড়ে আছেন। অন্যরা তাদের বুকে ঘষামাজা করছেন। মাটিতে পড়ে থাকা কারো কারো মুখ জ্যাকেট ও কাপড় দিয়ে ঢাকা অবস্থায় দেখা গেছে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ানের খবরে এমন তথ্য জানা গেছে।

দেশটির জরুরি সেবা বিভাগের প্রধান পীর হোসেন কলিভান্দ বলেন, শোকমিছিলে অংশ নিয়ে বেশ কিছু লোক আহত হয়েছেন। অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন।

কেরমানে এএফপির প্রতিনিধি বলেন, দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় শহরের রাস্তায় লোকে লোকারণ্য। নিহত জেনারেলের প্রতি শোক জানাতে তারা মিছিল নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে এসেছেন।

শোকমিছিলের পদদলিত হয়ে এই হতাহতের আগে বিপ্লবী গার্ডসের কমান্ডার মেজর জেনারেল হোসাইন সালামি বলেন, শহীদ সোলাইমানি ছিলেন খুব ক্ষমতাবান। এখন তিনি মৃত। শত্রুরা অন্যায়ভাবে তাকে হত্যা করেছে।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই সোলাইমানির নিজ শহরে হাজার হাজার শোকার্ত মানুষকে রাস্তায় বেরিয়ে আসতে দেখা গেছে। এছাড়া তেহরান, কুয়াম, মাশহাদ ও আহভাজ শহরেও মানুষের ঢল নেমেছে।

এর আগে সোমাবার তার জানাজা উপলক্ষে রাজধানী তেহরানের সড়কগুলো লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠেছিল। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে শুক্রবার ভোরে বাগদাদে ড্রোন হামলা চালিয়ে সোলাইমানিকে হত্যা করে মার্কিন বাহিনী।

রোববার সোলেমানির মৃতদেহ ইরাক থেকে ইরানে নিয়ে যাওয়া হয়। সোমবার ইরানের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টায় তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের জুমার নামাজ চত্বরে তার জানাজা হয়।

ইরানি গণমাধ্যম জানিয়েছে, এখানে সোলেমানিসহ তার সঙ্গে নিহত সবার জানাজা হয়।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি জানাজায় ইমামতি করেন, এর এক পর্যায়ে তাকে কাঁদতে দেখা গেছে।

জানাজায় যোগ দিতে তেহরানে ব্যাপক লোক সমাগম হয়েছিল। তাদের অনেককেই কাঁদতে দেখা গেছে। কেউ কেউ নিহত কমান্ডারের ছবি নিয়ে জানাজায় যোগ দিতে এসেছিলেন।

গত শতকের ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় থেকে যুদ্ধের ময়দানে থাকা সোলাইমানিকে জাতীয় বীর হিসেবে দেখে ইরানিরা। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা খামেনির পর তিনিই ইরানের সবচেয়ে ক্ষমতাবান লোক ছিলেন বলে ধারণা করা হয়।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *