বিপিএলের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে চট্টগ্রাম

ইমরুল কায়েস ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের লেন্ডন সিমন্সের ব্যাটিং নৈপুন্যে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে এককভাবে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠলো চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।

মঙ্গলবার টুর্নামেন্টের ৩৬তম ও দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে রাজশাহী রয়্যালসকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।

প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৬৬ রান করে রাজশাহী রয়্যালস। ওপেনার লিটন দাস ৫৬ ও ফরহাদ রেজা ৮ বলে ২১ রান করেন। জবাবে ইমরুলের অপরাজিত ৬৭ ও সিমন্সের ৫১ রানের সুবাদে ৯ বল বাকী রেখেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে চট্টগ্রাম।

এই জয়ে ১১ খেলায় ৮জয় ও ৩হারে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠলো চট্টগ্রাম। সমানসংখ্যক ম্যাচে ৭ জয় ও ৪ হারে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয়স্থানে নেমে গেলো রাজশাহী।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্বান্ত নেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের অধিনায়ক ইনজুরি কাটিয়ে মাঠে ফেরা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কারনে গেল পাঁচ ম্যাচে খেলতে পারেননি তিনি।

রাজশাহীকে প্রথমে ব্যাট করার সুযোগটা ভালোভাবে কাজে লাগাতে দেননি পেসার রুবেল হোসেন। ইনফর্ম আফিফ হোসেনকে দ্বিতীয় ওভারেই বিদায় দেন রুবেল। বোল্ড হবার আগে ৯ রান করেন তিনি।

এরপর ইরফান শুক্কুরের সাথে ৩৭ ও পাকিস্তানের শোয়েব মালিকের সাথে ৪১ রানের দু’টি জুটি গড়ে রাজশাহীর রানের চাকা সচল রাখেন লিটন।এবারের আসরের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে থামেন লিটন। ৪৫ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৬ রান করে রাজশাহীর জিয়াউর রহমানের বলে আউট হন লিটন।

লিটনের পর ছোট-ছোট ইনিংস খেলেন মালিক ও অধিনায়ক ওয়েস্ট ইন্ডিজের আন্দ্রে রাসেল। মালিক ২৪ বলে ২৮ ও রাসেল ১০ বলে ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ২০ রান করেন। কিন্তু ইনিংসের ১০ বল বাকী থাকতে প্যাভিলিয়নে ফিরেন মালিক-রাসেল-কাপালি ও বোপারা। তখন দলের স্কোর ১৪৪ রান।
এ অবস্থায় শেষদিকে ব্যাট হাতে ঝড় তুলেন ফরহাদ। মাত্র ৮ বলে ২১ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেন ফরহাদ। তার ইনিংসে ১টি চার ও ২টি ছক্কা ছিলো। ফলে ৮ উইকেটে ১৬৬ রানের লড়াকু পুঁিজ পায় রাজশাহী। চট্টগ্রামের রুবেল-জিয়াউর ৩টি করে উইকেট নেন।

জয়ের জন্য ১৬৭ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই ১২ রান পায় চট্টগ্রাম। রাজশাহীর অধিনায়ক রাসেলের ঐ ওভারে ১টি করে চার-ছক্কা মারেন ওপেনার লেন্ডন সিমন্স। তৃতীয় ওভারে রাজশাহীর স্পিনার আফিফের উপর চড়াও হন গেইল। প্রথম, তৃতীয় ও ষষ্ঠ ডেলিভারিতে ছক্কা হাঁকান তিনি। পঞ্চম বলে চারও মারেন গেইল। ফলে ঐ ওভার থেকে ২২ রান নেন গেইল। কিন্তু পঞ্চম ওভারের প্রথম বলেই আউট হন গেইল।

রাজশাহীর পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বির ডেলিভারিটি ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে লিটন দাসকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন গেইল। ফলে এবারের বিপিএলে প্রথম খেলতে নেমে ১০ বলে ২৩ রান করেন তিনি। তার ইনিংসে ১টি চার ও ৩টি ছক্কা ছিলো।

দলীয় ৩৫ রানে ‘ইউনিভার্স বস’ ফিরে যাবার পর চট্টগ্রামের জয়ের ভিত গড়ে দেন সিমন্স ও ইনফর্ম ইমরুল কায়েস। ৪৯ বলে ৭৭ রানের জুটি গড়েন তারা। চলমান আসরে তৃতীয়বারের মত হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৫১ রানে রান আউট হন সিমন্স। জয়ের জন্য এ সময় ৪৬ বলে ৫৬ রান দরকার ছিলো চট্টগ্রামের।

এরপর ক্রিজে গিয়ে বাউন্ডারি দিয়ে রানের খাতা খুলেন মাহমুদুল্লাহ। পরের ওভারে আত্মবিশ্বাসের সাথে আরও একটি বাউন্ডারি আদায় করেন তিনি। তবে বেশিক্ষন টিকতে পারেননি। ৬ বলে ১০ রান করে ফরহাদ রেজার শিকার হয়ে অধিনায়ক বিদায় নিলেও জয় পেতে কোন সমস্যা হয়নি চট্টগ্রামের। ১৪ ওভার শেষে ম্যাচ হাতে মুঠোয় চলে আসে তাদের। কারন শেষ ৩৬ বলে ৩৭ রান দরকার পড়ে চট্টগ্রামের। দলের বাকী প্রয়োজনটুকু মিটিয়েছেন ইনফর্ম ইমরুল ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের চাঁদউইক ওয়ালটন। চতুর্থ উইকেটে ২৬ বলে ৪০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন তারা।

৪১ বলে ৩টি চার ও ৫টি ছক্কায় অপরাজিত ৬৭ রান করেন ইমরুল। চলমান আসরে চারটি হাফ-সেঞ্চুরিতে তার রান এখন ৩৮৬। রান সংগ্রাহকের তালিকায় দ্বিতীয়স্থানে উঠে এসেছেন ইমরুল। ১১ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন ওয়ালটন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :
রাজশাহী রয়্যালস : ১৬৬/৮, ২০ ওভার (লিটন ৫৬, মালিক ২৮, জিয়াউর ৩/১৮)।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স : ১৭০/৩, ১৮.৩ ওভার (ইমরুল ৬৭*, সিমন্স ৫১, ফরহাদ ১/১৭)।

ফল : চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : ইমরুল কায়েস(চট্টগ্রাম)।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *