বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের আগের দিন ৪ আগস্ট চট্টগ্রামের পটিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে এলোপাতাড়ি গুলির ঘটনায় সাবেক সাবেক এমপি মোতাহেরুল ইসলাম সহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৭৯ জন নেতাকর্মী ও অজ্ঞাত ২৫০-৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
রবিবার মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন। সোমবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক ও পটিয়া আল জামিয়া আল ইসলামিয়া জমিরিয়া কাছেমুল উলুম মাদ্রাসার ছাত্র নুরুল হাসান বাদী হয়ে পটিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় চেয়ারম্যান আবুল কাশেমকে আদালত জেলে প্রেরন করেছে। আবুল কাসেম (১৮ আগস্ট) তার ইউনিয়ন পরিষদে গেলে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে অবরুদ্ধ করে রাখলে সেনাবাহিনী গিয়ে তাকে উদ্ধার করে, পটিয়া থানায় হস্তান্তর করেন, পরে ঐ মামলা থাকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করলে,আদালত জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
মামলার এজাহার সূত্রে অন্যন্যার আসামীরা হলেন- সাবেক এমপি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, উপজেলা পরিষদের সদ্য অপসারিত চেয়ারম্যান দিদারুল আলম, কাশিয়াইশ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম, শোভনদন্ডী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসানুল হক, কুসুমপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকারিয়া ডালিম, হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফৌজুল কবির কুমার, হাঈদগাও ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক, কোলাগাও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুল আলম, জিরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম টিপু সহ ৭৯ জন।
কলেজের সাধারন শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেক সমর্থন জানিয়ে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া সদরের ডাকবাংলো মোড় থেকে প্রদক্ষিন করে মুন্সেফবাজার এলাকায় পৌছলে সাবেক এমপি মোতাহেরুল ইসলামম চৌধুরীর নির্দেশে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় তারা দেশী-বিদেশী আগ্নেয় অস্ত্র ব্যবহার করে ছাত্রদের লক্ষ্য করে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষন করে। এতে অর্ধশতাধিক ছাত্র জনতাগুলিবিদ্ধ হয়। গুরুতর আহত ছাত্রদের চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে শান্তিরহাট পৌছলে আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীরা সেখানে আহত ছাত্রদের বহনকারী এম্বুলেন্সে হামলা চালায়। এদিকে, কশিয়াইশ ইউনিয়নের নুর আয়েশা বেগম নামের এক মহিলার জায়গা দখলের চেষ্ঠায় মারধরের ঘটনায় কাশিয়াইশ ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেমকে প্রধান আসামী করে এজাহারনামীয় ৭জনসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের করে পটিয়া থানা পুলিশ। এ মামলায় চেয়ারম্যান কাশেমকে গ্রেফতার করে পটিয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরন করা হয়।
পরে তার পক্ষে জামিন শুনানী করা বিজ্ঞ আদালত তার জামিন মঞ্জুর করা হলেও ছাত্র হামলার মামলায় আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরন করে বলে জানান পটিয়া আদারতের দায়িত্বপ্রাপ্ত জিআরও মুহাম্মদ ফোরকান।
পটিয়া থানার ওসি জসীম উদ্দিন জানান, সাবেক এমপিসহ ৩শত জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। সেনাবাহিনীর হাতে আটক ইউপি চেয়ারম্যান কাশেমকে দুইটি মামলায় আদালতে প্রেরন করা হয়েছে।
Leave a Reply