মুসলিম বিশ্বের সবার শত্রু এক : খামেনি

মুসলিম দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেছেন, আমাদের আলাদা কোনো শত্রু নেই এবং পুরো মুসলিম বিশ্বের শত্রু একই। শুক্রবার (০৪ অক্টোবর) তেহরানে জুমার নামাজের খুতবায় আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি এই মন্তব্য করেন।

খামেনি বলেন, আমাদের শত্রুদের গৃহীত নীতি হলো বিভাজন ও রাষ্ট্রদ্রোহের বীজ বপন করা। মুসলমানদের মধ্যে ফাটল সৃষ্টি করা। ফিলিস্তিনি, লেবানিজ, মিসরীয় ও ইরাকিদের শত্রু একজনই। তারা ইয়েমেন ও সিরিয়ার জনগণের শত্রুও। তারা আমাদের সবার শত্রু।

ইসরায়েলে ইরানের সাম্প্রতিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগ্রাসনকারীদের হাত থেকে আত্মরক্ষার অধিকার প্রতিটি দেশেরই রয়েছে। মুসলিম দেশগুলোকে তাদের সাধারণ শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে হবে। দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলাকেও ‘আইনত ও বৈধ’ বলে মন্তব্য করেন খামেনি।

খামেনি বলেন, ইসরায়েলকে দমনে দায়িত্ব পালনে তার দেশ বিলম্ব বা তাড়াহুড়ো করবে না। খুতবায় ফিলিস্তিনের পক্ষেও বক্তব্য দেন তিনি। খামেনি বলেন, ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মরক্ষার বৈধ অধিকার রয়েছে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, অপরাধীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে এমন কোনো একক আদালত বা আন্তর্জাতিক সংস্থা নেই যা ফিলিস্তিনি জনগণকে কেবল তাদের মাতৃভূমিকে রক্ষা করার জন্য দোষারোপ করতে পারে।

ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এবং লেবাননে মিত্র হিজবুল্লাহর ওপর ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে এলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। শুক্রবার তেহরানে ইমাম খামেনি (রহ.) মুসাল্লায় জুমার নামাজের ইমামতি করেন।

প্রায় পাঁচ বছরের মধ্যে এ প্রথম জুমার খুতবা দিলেন খামেনি। ফিলিস্তিনের গাজায় হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের এক বছর পূর্ণ হওয়ার তিন দিন আগে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা এ খুতবা দিলেন।

খামেনির খুতবা উপলক্ষে তেহরানে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। কারও কারও হাতে হিজবুল্লাহর সবুজ ও হলুদ পতাকা দেখা যায়। কেউবা ফিলিস্তিনের পতাকাও নিয়ে আসেন। এ সময় তাদের ইসরায়েলবিরোধী নানা স্লোগানও দিতে দেখা যায়। তবে সবাই খামেনিকে একনজর দেখতেই যেন বেশি উদগ্রিব ছিলেন।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে দেশটির সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে দেখা হয়। সবশেষ ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে জুমার নামাজে ইমামতি করেছিলেন তিনি।

ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডসের কমান্ডার কাসেম সোলেইমানি ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি ইরাকের বাগদাদে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত হন। প্রতিশোধ হিসেবে ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল ইরান। এ ঘটনার পর খামেনি জুমার নামাজে ইমামতি করেছিলেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *