‘মহিউদ্দীন চৌধুরী ছিলেন চট্টগ্রামের উন্নয়ন ও মজলুম মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে আত্মত্যাগী এক মহান যোদ্ধা’

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে চট্টলবীর এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরীর স্মরণ সভা ও ‘চট্টলবীর’ নামক প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন রাসূলে পাক (দ.)’র ৩১ তম আওলাদ ও মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন, রাহবারে শরীয়ত ও ত্বরীকত,হযরতুল্হাজ্ব মাওলানা শাহ্সূফী সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী ওয়াল হোসাইনী আল্-মাইজভাণ্ডারী (মা.জি.আ.)।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেছেন- চট্টলবীর এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী মজলুম মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে আত্মত্যাগী এক মহান যোদ্ধা। মানবতা, মানবসেবা, আদর্শ ও নীতিতে দেশের মাুনষের প্রতি ভালবাসায় অবিচল থাকার কারণেই তিনি শুধু আওয়ামী লীগেরই নেতা ছিলেন না।

তিনি ছিলেন দল মত নির্বিশেষে গণমানুষের নেতা। চট্টগ্রামের উন্নয়নে যেকোন ত্যাগ স্বীকার ও তাঁর কঠোর ভূমিকার জন্য অনেক সময় রাষ্ট্রযন্ত্রও নমনীয় হতে বাধ্য হতো। তিনি আধুনিক চট্টগ্রামের রূপকার। চট্টগ্রামের মানুষ ও মাটির প্রতি তার ভালোবাসার জন্যই তিনি চট্টলবীর খ্যাতি লাভ করেন। এ মানুষটি মনে প্রাণে ছিলেন একজন খাঁটি মুসলিম ও নবীপ্রেমিক। তাই তিনি হজ্বের সময় হাজীদের নেতৃত্ব দিয়ে মক্কা মদিনায় হজ্ব করার জন্য নিয়ে যেতেন। সেখানে হাজীদের খেদমতে তার ত্যাগ ও মহানুভবতার কথা সর্বজন বিদিত। শুধু তাই নয়; সুন্নীয়তের খেদমতেও তিনি ব্যাপক অবদান রেখেছেন। তিনিই একমাত্র মেয়র যিনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের অধীন সপিং কমপ্লেক্সে গাউছুল আ’যম আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী গেইট নির্মাণ করেন। এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী, ইসলাম, গণমানুষের কল্যাণ ও চট্টগ্রামের উন্নয়নে যেই অবদান রেখে গেছেন তা চট্টলার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে বলে হযরত সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী (মা.জি.আ.) উল্লেখ করেন।

উদ্বোধকের বক্তব্যে প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য্য প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বাঙালি জাতীয়তাবাদ লালন ও সকল ধর্মের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতিবোধ জাগ্রত করে সহাবস্থানমূলক একটি মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামই করে গেছেন এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী। তিনি দেশ ও মানুষের কল্যাণে এবং কর্মজীবী মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে যেকোন সাহসী ভূমিকা নিতে পিছপা হতেন না। এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরীর জীবদ্দশায় কখনো বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি। চট্টগ্রামের উন্নয়ন ও জাতি ধর্ম নির্বিশেষে মানুষকে ভালবাসার কারণেই তাঁর মৃত্যুর পরেও মানুষ তাঁকে অন্ধের ন্যায় ভালবাসে। তাই আমি মনে করি, চট্টগ্রামের উন্নয়ন ও শ্রমজীবী মানুষের কল্যানের জন্য এই সংগ্রামী মানুষটির আরো কিছুদিন বেঁচে থাকার প্রয়োজন ছিল।

চট্টলবীর এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরীর স্মরণ সভা পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনালের প্রাক্তন জেলা গভর্ণর লায়ন শাহ আলম বাবুল।

স্মরণ সভা পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী সাংবাদিক আলী আহমদ শাহিন ও আবৃত্তি শিল্পী দিলরুবা খানমের যৌথ ব্যবস্থাপনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. সেকান্দর চৌধুরী, মাদার অব তেরেসা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বাবু সুকুমার চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার পুলক কান্তি বড়ুয়া, জ্যোতিষ ড. মাদব আচার্য্য, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব পংকজ বৈদ্য সুজন, নারীনেত্রী মমতাজ খান,সাংবাদিক সৈয়দ দিদার আশরাফী, লায়ন একে জাহেদ চৌধুরী, শিল্পী দীপেন চৌধুরী, অধ্যক্ষ ড. মুহাম্মদ ছানাউল্লাহ, মো: জাহাঙ্গীর আলম, হাসান মুরাদ, মুক্তিযোদ্ধা ফজল আহমেদ এবং মো: খোরশেদ আলী মাইজভাণ্ডারী।

পরে অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য কয়েকজনকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *