বেওয়ারিশ বৃদ্ধার পচন ধরা শরীর দেখে পথচারীরা নাক চেপে পালালেও এগিয়ে আসে পুলিশ

২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। রাজীব সেন, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম নগরীর কাপসগোলা এলাকার ফুটপাতে এক মাস ধরে বেওয়ারিশ ভাবে পড়ে ছিলো ভাসমান বৃদ্ধ এক পিতা। আগুনে পোড়া বৃদ্ধার শরীরে ধরেছে পচন। চারদিকে ছড়াচ্ছে বিশ্রী দুর্গন্ধ।

ফুটপাতের পাশে সড়ক ধরে হাজার হাজার পথচারির চলাচল থাকলেও কেউ এগিয়ে আসেনি বৃদ্ধার সেবায়। বরং নাক চেপে দ্রুত এলাকা ত্যাগ করতে পারলেই যেন বেঁচে যায়। সবাই পালিয়ে গেলেও চরম দুর্গন্ধ মারিয়ে বৃদ্ধার পচন ধরা শরীর সুস্থ্য করতে মানবিকতার হাত বাড়িয়েছে পুলিশ।

শওকত হোসেনের নেতৃত্বে সিএমপিতে গঠিত পুলিশের সাত সদস্যের মানবিক ইউনিটের সদস্যরা বৃদ্ধা ওই বাবার পচন ধরা শরীরে প্রাথমিকভাবে ওষুধ লাগিয়ে ব্যন্ডেজ লাগিয়ে নিয়ে গেলেন হাসপাতাল। সুস্থ করে বৃদ্ধা বাবাকে একটু শান্তি দেওয়ায় যেন এ মানবিক পুলিশ ইউনিটের প্রধান লক্ষ্য।

শুধু ভাসমান এ বৃদ্ধা বাবাই নন, চট্টগ্রাম নগরীর রাস্তায় ভাসমান, ভারসাম্যহীন ও অসুস্থ এমন অসহায় মানুষদের প্রতিনিয়ত সেবা দিয়ে যাচ্ছে ২০১০ সালে পুলিশ কনটেস্টেবল শওকত হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত সিএমপির এ মানবিক ইউনিট।

এর আগেও নগরীর বটতলী রেলস্টেশনে শরীরে পচন আর পোকায় ধরা সোহান নামের এক ভারসাম্যহীন মানুষকে চিকিৎসা দিয়েছেন সিএমপির মানবিক পুলিশের এ ইউনিটটি।

৭ সদস্যের ইউনিটটির বেতনের টাকা দিয়ে চলে এসব বেওয়ারিশ মানুষের চিকিৎসা। পুলিশের এমন সেবামূলক কর্মকাণ্ডে নতুন করে ভালবাসা ও আস্থা অর্জন করে সাধারণ মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে।

স্থানীয়রাও বলছে পুলিশকে সাধারণ মানুষ খুব ভয় পাই। প্রবাদ ছিলো পুলিশের ধারে কাছে যেও না,পুলিশ ধরলে বাঁচন নেই। কিন্তু সব কিছু মুছে দিয়ে মানবিক পুলিশের এ ইউনিটটির কর্মকাণ্ডে সত্যি খুব ভালো লাগছে। আমরা চাই এ ইউনিটটির মতোই সমাজের সকল শ্রেণী পেশার মানুষ মানবিক সেবায় নিজেদের আত্ম প্রকাশ করুক।

দেশের ৬টি বিভাগীয় হাসপাতালের বেওয়ারিশ ওয়ার্ড গঠনের দাবি জানিয়ে মানবিক পুলিশ ইউনিটের টিম লিডার শওকত হোসেন বলেন, রাস্তার ধারে বেওয়ারিশ মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় আমাদের সেবা দেয়া মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। দেশের সব মেডিকেল এমন ওয়ার্ড চালু করা গেলে তাহলে বেওয়ারিশ মানুষদের অনেক উপকার হবে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *