তাসফিক আব্দুল্লাহ, কুবি প্রতিনিধি: “কেমন আছো? অনেক দিন পরে দেখা তোমার সাথে”
“জ্বি ভাই,ভাল আছি, আপনি কেমন আছেন?”
“আমিও ভাল আছি। চল, তোমার সাথে এক কাপ চা খেতে খেতে গল্প করা যাক” এভাবেই সিনিয়র- জুনিয়র,বন্ধু-বান্ধবের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রতিষ্ঠার প্রায় ১৪ বছর পর আগামী সোমবার(২৭ জানুয়ারি) অভিষেক সমাবর্তন আয়োজন করতে যাচ্ছে লাল মাটির বিশ্ববিদ্যালয়টি। পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে বিরাজ করছে সাজ সাজ বর। চারিদিকে গ্র্যাজুয়েটদের আনাগোনা।জোরকদমে চলছে সমাবর্তনের প্রস্তুতি। অনুষ্ঠান সফল করতে উপাচার্য,শিক্ষক সকলে বদ্ধপরিকর।
পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে এখন একটায় কথা সমাবর্তন! সমাবর্তন!!সমাবর্তন!!!লাল মাটির প্রতিটি ধূলিকণায় এখন উৎসবের আমেজ। সাবেক শিক্ষার্থীদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে লাল মাটির কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। তাঁদের কেউ কেউ সাথে এনেছে পিতা মাতা, কেউবা স্বামী- সন্তান নিয়ে হারিয়ে গেছে স্মৃতির পাতায়। কেমন ছিল সেই দিনগুলো!
সমাবর্তনের ছুঁয়া লেগেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনায়ও।ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে চারপাশটা । রাতের বেলা দেখা যায় বাহারি রঙের বাতি। গান,গল্প আড্ডায় জমজমাট হয়ে আছে পুরো ক্যাম্পাস।সমাবর্তনের পোশাক, গাউন, টুপি, পড়ে বিভিন্ন ভঙ্গিতে ছবি তুলে স্মৃতির পাতায় ধরে রাখতে চায় প্রতিটি মুহূর্ত। ক্যাম্পাসের প্রতি ইটে জড়িয়ে আছে কতো স্মৃতি! কত না বলা কথা! প্রতিটি বিভাগে চলছে সাবেক শিক্ষার্থী আর শিক্ষকদের কুশল বিনিময়।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে থাকছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে থাকছেন আইসিসির সাবেক সভাপতি ও গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল।
সমাবর্তনে আগত গ্র্যাজুয়েটদের এবং আমন্ত্রিত অতিথিদের নিরাপত্তার ব্যাপারে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সর্তক দৃষ্টি রাখছে। আমন্ত্রণ পত্র ব্যতীত কাউকে অনুষ্ঠানে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে প্রশাসন থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
লোক প্রশাসন,সপ্তম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী এ কে আযাদ বলেন, “সমাবর্তনের দিন প্রত্যেকটা শিক্ষার্থীর জীবনে অত্যন্ত আনন্দের একটা দিন। বিশেষ করে রাষ্ট্রপতির নিকট থেকে সনদগ্রহন এটি প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর জন্য অনুপ্রেরনা। আর এই দিনটিতে বাবা-মা,শিক্ষক,বড় ভাই ও বন্ধুদের সাথে মিলনমেলায় উৎসবের পরিপূর্নতা পায়। মনে হয় যেনো সেই প্রাণের ক্যাম্পাসে আগের মতই হাঁসি আনন্দে মেতে উঠে নিজেদের মধ্যে সকল ব্যর্থতা,গ্লানি ভুলে নিজেকে নতুনভাবে ফিরে পাওয়া কাজ করে।”
ইংরেজি বিভাগের ৮ম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী সুজানা শিলান্তি জানান,” সমাবর্তন সকল ছাত্রছাত্রীর জন্য একটি স্বপ্নের ব্যাপার।আর সেটা যদি হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন তখন আনন্দের মাত্রাটার সীমা ছাড়িয়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক। এই ইতিহাসের অংশ হতে পেরে নিজেকে অনেকটা ভাগ্যবতী মনে হচ্ছে। সকল অনিয়ম, অভিযোগ ছাপিয়ে প্রাণের কুবির ১ম সমাবর্তন সফল হোক।”
সমাবর্তনে ৬টি অনুষদের মোট ৫ হাজার ৬৪৮ জন শিক্ষার্থীকে মূল সনদ প্রদান করা হলেও ২ হাজার ৮৮৮ জন গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থী সমাবর্তনে নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে স্নাতক ডিগ্রিধারী ১ হাজার ২২৩ জন এবং স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী ১ হাজার ৬৬৫ জনের অংশগ্রহণে ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।
Leave a Reply