আইপিএল বাজি খেলতে ব্যাংকের সাড়ে তিন কোটি টাকা চুরি

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ(আইপিএল) খেলায় বাজি ধরে প্রিমিয়ার ব্যাংকের রাজশাহী শাখার ক্যাশ ইনচার্জ হিসেবে ভল্ট সামলানোর দায়িত্বে থেকে তিন কোটি ৪৫ লাখ টাকা সরিয়ে নিয়েছেন কর্মকর্তা শামসুল ইসলাম ফয়সাল।

তিনদিনের রিমান্ড শেষে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে তাকে মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এ তোলে পুলিশ। সেখানে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন ফয়সাল। পরে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

ফয়সাল নগরীর সাগরপাড়া এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে। প্রিমিয়ার ব্যাংকের ক্যাশ ইনচার্জ পদে দায়িত্বে ছিলেন তিনি। গত ২৪ জানুয়ারি রাতে ফয়সালের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে মামলা করেন প্রিমিয়ার ব্যাংকের জোনাল ম্যানেজার সেলিম রেজা খান। ওই মামলায় সোমবার তাকে তিনদিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।

রাজশাহী নগর পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপকমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, প্রথমদিকে ফয়সাল দাবি করেছিলেন আত্মসাৎকৃত তিন কোটি ৪৫ লাখ টাকার মধ্যে দুই কোটি ৪৫ লাখ টাকা দুই বন্ধুকে ধার দিয়েছেন। বাকি এক কোটি টাকা আবাসন প্রকল্পে জমি কিনতে দিয়েছেন।

কিন্তু রিমান্ডে থাকাকালীন তিনি স্বীকার করেছেন সব টাকা দিয়ে আইপিএল খেলায় অনলাইনে বাজি ধরেছেন। অনলাইন জুয়ার একটি ওয়েবসাইট ও অ্যাপসের মাধ্যমে এসব অর্থ দিয়ে বাজি ধরেন ফয়সাল। সেই সঙ্গে টাকাগুলো বাজিতে হেরেছেন তিনি। ব্যাংকের ভল্টের পেছনের সারি থেকে দুই বছর ধরে এসব টাকা সরিয়ে নেন ফয়সাল।

অতিরিক্ত উপকমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস আরও বলেন, বাংলাদেশ থেকে সরাসরি অনলাইনে জুয়া খেলা যায় না। সেক্ষেত্রে যেকোনো প্রক্রিয়ায় এসব টাকা হুন্ডি করে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছি আমরা।

এদিকে টাকা আত্মসাতের ঘটনা তদন্তে প্রিমিয়ার ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ্ আলমের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত টিম রাজশাহী পৌঁছেছে। তারা তদন্ত কাজ শুরু করেছেন।

তদন্ত কমিটির প্রধান শাহ্ আলম বলেন, এই টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ফয়সাল একাই নাকি ব্যাংকের আরও কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ভল্টে টাকা সংরক্ষণ প্রক্রিয়ায় অন্তত দুইজন কর্মকর্তার স্বাক্ষর থাকে। এক্ষেত্রে কী হয়েছে, তাও দেখা হচ্ছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *