সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যা মামলার প্রধান আসামী ভোলা জামিনে মুক্ত!

চট্টগ্রামের আলোচিত সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার প্রধান আসামী ও শীর্ষ সন্ত্রাসী এহতেশামুল হক ভোলা জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।

কারাগার সূত্রে জানা যায়, ভোলা গত ২৯ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে গোপনে বেরিয়ে যান।

বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. কামাল হোসেন বলেন, সব মামলার জামিনের কাগজপত্র পাওয়ার পর ২৯ ডিসেম্বর ভোলা কারাগার থেকে ছাড়া পেয়েছেন।

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে সাড়ে ৭টায় নগরীর জিইসি এলাকায় ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হয় মাহমুদা খানম মিতু। পরদিন তার স্বামী তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় তিন জনকে আসামি করে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন।

মামলার তদন্তে ভোলার নাম উঠে আসে। খুনীদের অন্যতম সহযোগী ও অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে নাম আসার পর ২০১৬ সালের ২৭ জুন চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিতু হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র-গুলিসহ ভোলা ও তার সহযোগী মনিরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মিতু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির এসি মো. কামরুজ্জামান জানান, মিতু হত্যাকাণ্ডের অন্যতম সহযোগী ও অস্ত্র সরবরাহকরী এহতেশাম ওরফে ভোলা রাজাখালী এলাকার দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও অস্ত্র ব্যবসায়ী। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায়। বাবার নাম মৃত সিরাজুল হক।

তিনি জানান, ভোলা ১০ বছরের বেশি সময় ধরে বসবাস করে আসছে নগরীর বাকলিয়া থানার রাজাখালি হাইওয়ে সড়ক সংলগ্ন অবৈধ দখলকৃত বাড়িতে। এখানে তার একটি কলোনি ভাড়া দেয়া আছে। একাধিক খুন ও ডাকাতি মামলার আসামি ভোলা নিজেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা পরিচয় দেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার আগে সে যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল।

পুলিশ জানান, কলোনিতে থাকা শ্রমজীবী মানুষগুলোই তার পুঁজি। যে পিস্তল দিয়ে গুলি করে মিতুর হত্যা নিশ্চিত করা হয়েছে সেটি সরবরাহ করেছিল ভোলা। হত্যার পর খুনিদের কাছ থেকে অস্ত্রটি আবার সে ফেরতও নিয়ে নেয়। মিতু হত্যার মূল নির্দেশদাতা হিসেবে পুলিশের সন্দেহের তালিকায় থাকা আলোচিত মুছার সঙ্গে অস্ত্রসহ বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসার শেয়ার রয়েছে ভোলার।

২০১৫ সালের ৫ জুন ও.আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে গিয়ে খুন হন সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু। হত্যাকাণ্ডের ২৩ দিন পর মো. মনির নামে এক সহযোগীসহ ভোলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্তে ভোলাই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র সরবরাহ করেছিল বলে জানা যায়।

পুলিশ জানায়, বাকলিয়া এলাকার ত্রাস এহতেশামুল হক ভোলার বিরুদ্ধে নগরের বিভিন্ন থানায় হত্যা, অস্ত্র ও চাঁদাবাজির মামলা আছে। তিনি নগর পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী।

তার বিরুদ্ধে সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলা, চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজের সিনিয়র শিক্ষিকা অঞ্জলী রানী দেবী হত্যা মামলাসহ দেড় ডজন মামলা রয়েছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *