বই মানুষকে আন্ধকার থেকে আলোর দিশারি করে, আলোকিত মানুষ গড়তে প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখে। সে উপলব্ধি থেকে নাম মাত্র মূল্যে চট্টগ্রামে দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে এ ব্যতিক্রমি কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন উপজেলা ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠ চক্রবিষয়ক সম্পাদক জিহাদ বাবু।
পড়িলে বই আলোকিত হই, না পড়িলে বই অন্ধকারে রই । সৃজনশীল বই শুদ্ধ মননের আয়না। নতুন প্রজন্মকে বইমুখী করা গেলে চিন্তাশীল সমাজ সৃষ্টি করা যাবে। নতুন প্রজন্মকে বাঙালি জাতিসত্তার প্রকৃত ইতিহাস জানাতে হবে।
এ জন্য বই পড়ার বিকল্প নেই। তারা যেন বিপথগামী না হয়, সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। তরুণ প্রজন্ম বইবিমুখ। এখন আর তরুন প্রজন্ম বই পড়ে না। তাদের মস্তিষ্ক কম্পিউটার ভাইরাসে সীমাবদ্ধ। তাদের কল্পনাশক্তি হ্রাস পেয়েছে। তথ্য প্রযুক্তির অবাধ বিচরণে বই থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্ররা।
তারুণ্যের অবক্ষয় আর প্রজন্মের বই পড়ার অনীহা থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য একটি ভিন্নভাবে বই পড়ার প্রতি ভালবাসা সৃষ্টি করে ১০ টাকার বিনিময়ে একটি বই ভাড়া কার্যক্রম শুরু করেছেন সন্দ্বীপ উপজেলা ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক জিহাদ বাবু।
১০ টাকার বিনিময়ে একটি বই একটি প্রজেক্টের নাম। মূলত বই পড়ার উৎসাহ জাগাতে এই প্রজেক্ট। এই প্রজেক্টের সদস্য হয়ে যেকেউ প্রতি সপ্তাহে নিতে পারেন একটি বই,পুনরায় এক সপ্তাহ পর সেই বই ফেরত দিয়ে আবার দশ টাকার দিয়ে আরো একটি একটি বই নিতে পারেন। দশ টাকা দিয়ে হবে একটি ফান্ড, সেই ফান্ডের টাকায় কেনা হবে আরো নতুন বই।
এ কার্যক্রম সম্পর্কে জিহাদ বাবু বলেন, নিজে পড়া শেষ হলে আরেকজনকে পড়তে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই বই ভাড়া দেওয়ার চিন্তা মাথায় আসে।
স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাই হবে পাঠক। কেননা এখন আর তারা আগের মত বই পড়তে চাই না। আমার কাছে থাকে ৪০-৪৫ টি বই দিয়ে কার্যক্রম শুরু করেছি ,ধীরে ধীরে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে বই সংগ্রহ করে এই কার্যক্রম কে আরও বড় করার ইচ্ছে আছে। আমার নির্দিষ্ট কোন স্থান নেই ভ্রাম্যমান হিসেবে সবাইকে বই পৌঁছে দিই। ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছি।
জাবেদ হোসেন নামে এক পাঠক বলেন , মাত্র ১০ টাকার বিনিময়ে হুমায়ুন আজাদের নারী বইটি পড়ার সুযোগ হয়েছে। বইয়ের মূল্য ২৫০ টাকা, যা হয়তো কিনে পড়া হতো না। বইটি পড়ে আবার অন্য একটি বই নিয়ে যাব। এভাবেই প্রতি সপ্তাহে বই নেয়ার ইচ্ছে আছে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক সামি উদ দ্দৌলা সীমান্ত বলেন, সন্দ্বীপ উপজেলা ছাত্রলীগের প্রগতিশীল ও মেধাবী ছাত্র নেতাদের মধ্যে অন্যতম একজন হচ্ছে জিহাদ বাবু। শিক্ষা বিষয়ক তার এই উদ্যোগ ছোট আকারে হলে তার ভাবনা পুরো সন্দ্বীপে এই উদ্যোগ ছড়িয়ে দিবে। আর তার জন্য প্রয়োজন কিছু সহযোগিতা, তাই সবার কাছে অনুরোধ থাকবে যাদের সম্ভব বই দিয়ে হোক অথবা অন্যন্যা সহযোগিতা দিয়ে হোক এই সুন্দর ও সৃজনশীল এই উদ্যোগের পাশে থাকবেন।
উত্তর সন্দ্বীপ কলেজ অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান বলেন, এভাবে পাঠাভ্যাস আর কে বা গড়ে তুলতে পারে? স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও তরুণেরা সামান্য টাকার বিনিময়ে বই পড়তে পারছেন। আশা করি তরুণদের পাঠাভ্যাস আরও বেড়ে যাবে।
Leave a Reply