চবির আবাসিক হলে নিম্নমানের খাবার খাচ্ছে শিক্ষার্থীরা

মেহেদী হাসান,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আবাসিক হলগুলোতে নিম্নমানের খাবার খাচ্ছে আবাসিক শিক্ষার্থীসহ হলে খেতে আসা অন্যান্য শিক্ষার্থীরা। জানা যায়, শিক্ষার্থীরা অনেক দিন ধরেই খাবার সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। অধিকাংশ শিক্ষার্থীরই খাবারের গুণগত মান ও পরিমাণ নিয়ে অভিযোগ রয়েছে।

সাধারণত হলগুলোতে ভাত, ডাল, মাংস, মাছ, ডিম এবং বিভিন্ন ধরণের সবজি রান্না করা হয়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ মোটা চালের ভাত রান্না করা হয় সবসময় আর যে চাল দিয়ে ভাত রান্না করা হয় তা গুণগত মানসম্পন্ন না হওয়ায় খাবারে কোন স্বাদ পাওয়া যায় না। অনেক সময় ভাত দিয়ে দুর্গন্ধ বের হয় আবার কখনো দাঁতের মাঝে চলে আসে ঝিল-পাথর। শাক-সবজি, মাছ, মাংস খাওয়ার সময়ও খাবারের আসল স্বাদ পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। স্বাদহীন খাবার ছাড়া অন্য একটি সমস্যা হলো ভাত আর ডাল ছাড়া আর সবকিছুই পরিমাণে অনেক কম।

পরিমাণে কম ও স্বাদহীন খাবারের সাথে আরও একটি অভিযোগ হচ্ছে পঁচা খাবার। অনেক শিক্ষার্থীই অভিযোগ করেন হলের ডাইনিং এ অনেক সময় বাশি পচা খাবার দেওয়া হয়। আগের দিনের রাতের খাবার অনেক সময় পরের দিন দুপুরে দেওয়া হয়। যেটা একদমই খাওয়ার উপযুক্ত থাকে না।

এমনসব খাবার খেয়ে শিক্ষার্থীদের পেট তো ভরেই না বরং তার সাথে রয়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। ফলস্বরূপ, অধিকাংশ শিক্ষার্থী হলের ডাইনিং এ খাবার না খেয়ে বাইরের হোটেলে খাবার খেয়ে থাকেন। এতে করে শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত অর্থ ও সময় ব্যয় করতে হয়।

সোহরাওয়ার্দী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান রুপম বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি বিশ্ববিদ্যালয়। তবে এখানকার হলগুলোতে খুবই নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করা হয়। প্রতিটি খাবার স্বাদহীনভাবে রান্না করা হয়। একারণে আমি বাইরে থেকে খাবার খায়। যার জন্য আমাকে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে হয়।

আলাওল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী এমদাদুল হক বলেন, আমি একজন ক্রীড়াবিদ। খেলাধুলা ও পড়াশোনা করতে হলে অবশ্যই আমাকে স্বাস্থ্যবান হতে হবে। কিন্তু এখানে যে খাবার দেওয়া হয় তা আমার স্বাস্থ্যের পক্ষে উপযুক্ত নয়।

শাহজালাল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী কাকন দে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই মধ্যবিত্ত পরিবারের। বাইরের হোটেল থেকে খাবার খাওয়া সবার পক্ষে সম্ভব না। আমাদের একমাত্র ভরসা হলের ডাইনিং। কিন্তু সেখানে মানসম্মত খাবার পাই না।

শিক্ষার্থীদের দাবি অতি শীঘ্রই যেন খাবারের মান ভালো করা হয়। যেন তারা সুস্বাদু খাবার গ্রহণ করে সুস্থ থেকে এখানে ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারে।

আলাওল হলের ডাইনিং ম্যানেজার ইকবাল হোসেন এ বিষয়ে বলেন, আমরা ভাল মানের খাবার পরিবেশন করি। আমরা পচা খাবার কখনোই পরিবেশন করি না। এখানে খাবারের খরচ মাত্র ২০-২৫ টাকা। এত কম টাকায় ভালো মানের খাবার সরবরাহ করা খুব কঠিন। টোকেনের দাম বাড়ালে আমরা শিক্ষার্থীদের উন্নতমানের খাবার সরবরাহ করতে সক্ষম হবো।

আলাওল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক আব্দুল হক এ বিষয়ে বলেন, বাজেট কম হওয়াতে আমরা শিক্ষার্থীদের ভালো মানের খাবার সরবরাহ করতে পারি না। আমিও খাবারের মান বাড়াতে চাই। আমি ডাইনিং ম্যানেজারের সাথে কথা বলেছি এবং তাদের পচা খাবার পরিবেশন না করার কথা বলেছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই বিষয়ে তাদের সাথে আবার কথা বলব। আমি আশা করি শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সমাধান হবে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *