ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃবাহান্নর ভাষা আন্দোলনে যেসব ভাষা সৈনিকদের অবদান রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম একটি নাম ঠাকুরগাঁওয়ের ভাষাসৈনিক এ্যাড. মরহুম দবিরুল ইসলাম। যার স্মৃতি রক্ষায় আজও জাতীয়ভাবে নেওয়া
হয়নি কোন উদ্যোগ।
১৯৫২ সালে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবীতে কারা বরণ করেন এ মহান মানুষটি। দবিরুল ইসলাম ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট সরকারের একজন প্রভাবশালী এমএলএ। ভাষা আন্দোলন ও পাকিস্তানবিরোধী আন্দোলনে তাঁর জোড়ালো ভূমিকার কারণে তাঁকে অসংখ্যবার জেল-জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল। তাঁর এ অবদান বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতেও স্থান পেয়েছে।
মরহুম দবিরুল ইসলামের স্মৃতি রক্ষায় সরকারিভাবে আজ পর্যন্ত তেমন কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ভাষাসৈনিক হিসেবে তিনি আজও পাননি কোনো স্বীকৃতি।
তবে ঠাকুরগাঁও শহরের সাধারণ পাঠাগারের পাশে দীর্ঘদিন পূর্বে তাঁর নামে ছোট একটি স্মৃতিস্তম্ভ স্বরুপ একটি পিলার দাঁড়িয়ে থাকলেও পরবর্তীতে ২০১৪ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মূকেশ চন্দ্র বিশ্বাস এটি সংস্কারের উদ্যোগ নেন। তবে সারা বছরই তা অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে থাকলেও ২১ শে ফেব্রুয়ারী এলেই মল মূত্রে ঘেড়া এ স্মৃতিস্তম্ভে বালু ছিটিয়ে রং করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের সভাপতি মনসুর আলী জানান, মহান এ ভাষা সৈনিকের স্মৃতিস্তম্ভটি যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে পরিত্যাক্ত
অবস্থায় পড়ে রয়েছে। অবাক লাগে যখন দেখি লোক জনেরা এখানে মল মুত্র ত্যাগ করে। তাঁর কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ তাঁকে বা তাঁর পরিবারকে জাতীয়ভাবে আজও কোন সম্মাননা দেওয়া হয়নি। এটা জাতী হিসেবে আমাদের জন্য লজ্জা জনক।
মরহুম দবিরুল ইসলামের পরিবারের সদস্যগন দাবি জানিয়ে বলেছেন, যেহেতু সরকার প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কলেজকে জাতীয়করণের ঘোষণা দিয়েছে। এমতাবস্থায় ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার লাহিড়ী ডিগ্রি কলেজটিকে জাতীয়করণ করে এটির নাম ভাষাসৈনিক অ্যাডভোকেট দবিরুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজ ঘোষণা করা হলে সামান্য হলেওএ ভাষা সৈনিকের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। এ ব্যাপারে তাঁরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম জানান, ভাষা সৈনিক দবিরুল ইসলামের স্মৃতিস্তম্ভটি আসলেই অবহেলায় পড়ে রয়েছে। আমরা অনতিবিলম্বে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এটি সংরক্ষণ ও সংস্করনের যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহণ করবো।
Leave a Reply