বর্নিল পারিবারিক মিলনমেলা : আল আমিন সমিতির ব্যতিক্রম উদ্যোগ

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি: জোয়ান-বুড়ো, বউ-শাশুড়ি, জামাই-শাশুর, কচি-কাচা শিশুর কোলাহলে ভরা
বর্নিল আয়োজন। আড্ডা, কবিতা আবৃতি, গান, হাড়ি ভাঙ্গা, সাতাঁর কাটা, চেয়ার খেলা, বালিশ খেলা, দৌড় প্রতিযোগিতা আর “শহর বনাম গ্রাম” বির্তক প্রতিযোগীতা। চাকরী-ব্যবসা ছেড়ে শহর-বন্ধর প্রবাস থেকে যুগ যুগ পরে পরে সবাই একত্রিত হওয়া।

এমনি এক ব্যতিক্রম পারিবারিক মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে ফটিকছড়ির ধর্মপুর আল আমিন সমিতির আয়োজনে।

২১শে ফেব্রুয়ারী শুক্রবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে দুল্লুভের বাড়ী প্রাঙ্গনে পবিত্র কোরআন খতমের মাধ্যমে অনুষ্টানের সুচনা হয়।

সন্ধ্যায় মুহাম্মদ ইউছুপের সভাপতিত্বে কৃতি ছাত্রদের সংবর্ধনা এবং পুরষ্কার বিতরণ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ফটিকছড়ি চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি ও ১৮ নং ধর্মপুর ইউপি চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম।

বিশেষ অতিথি ছিলেন ধর্মপুর ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম আকাশ, ইউপি সদস্য শিহাব উদ্দিন সোয়েব, আজাদী বাজার ব্যাবসায়ী সমিতি সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল আলম।

মাওলানা জামশেদুল আলম ও মো. কাউসারের সঞ্চলনায় বক্তব্য রাখেন, সৃজনী ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ মুছা চৌধুরী, উপাধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, সারাদিনের স্কুলের প্রিন্সিপাল আবদুস ছালাম, মো. দিদারুল আলম, মুহাম্মদ নুরুল আবছার, মো. ইলিয়াছ, ফজলুল বারি বাদল, এরশাহ উল্লাহ, নুরুল আজিম শাহাদাত, সোলাইমান আকাশ, শাহ জাহান দুলাল,
রাশেদুল আলম, আজম উদ্দিন, সোহেল, জিসান, ফারুক, আজগর প্রমুখ।

“শহর বনাম গ্রাম” বির্তক প্রতিযোগীতায় বিচারক ছিলেন ধর্মপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মুহাম্মদ আলমগীর, জজ বাড়ি সরকারী প্রাথমিক
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রকাশ বড়ুয়া, ধর্মপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক চন্দন বড়ুয়া। নানান যুক্তি তর্ক আর দর্শকের মুহ মুহ
করতালীতে গ্রামের পক্ষের দল বিজয়ী হয়।

মিলন মেলা প্রস্তুতি কমিটির সদস্য মো. নিজাম উদ্দীন জানান, দিনব্যাপী নানান অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল-কোরআন হাফেজদের সংবর্ধনা, পিএসসি/ইবতেদায়ি জেএসসি/জেডিসি এসএসসি/দাখিল উর্ত্তীণদের সংবর্ধনা, আবৃত্তি, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, ছোটদের মোরগ লড়াই, ছোটদের বিস্কুট খেলা, মেয়েদের বালিশ খেলা, দৌড় প্রতিযোগিতা, বড়দের সাঁতার প্রতিযোগিতা, প্রীতি ব্যাডমিন্টন,
পুরষ্কার বিতরণ ও প্রীতিভোজ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ধর্মপুর ইউপি চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম বলেন, পারিবারিক মিলনমেলা যেন একই সুতোঁই গাঁথা সব পরিবার একত্রে আনন্দোৎসব উদযাপন একে-অপরকে অনেকদিন পর সাথে পাওয়া সেই সাথে শৈশবে ফিরে যাওয়া
সত্যিই মনোমুগ্ধকর অনুষ্ঠানই পারিবারিক মিলনমেলা। বর্তমান সময়ে যেভাবে আমরা দিনদিন একান্নবর্তী পরিবার থেকে ছিন্ন হচ্ছিলাম সেই সময়ে পারিবারিক মিলনমেলা আমাদেরকে একত্রে করার সবচেয়ে সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে।

সৃজনী ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ মুছা চৌধুরী বলেন, ভেঙ্গে যাচ্ছে পরিবারের আদর্শ ও মূল্যবোধ, ধুঁকছে সমাজ। কালের পরিক্রমায় এই বন্ধন আজ
হুমকির সন্মুখীন, আধুনিক ব্যস্ত জীবনে ফিরে আসুক পুরনো সেই পারিবারিক সম্প্রীতির বন্ধন তাই প্রতি বছর স্বপরিবারে মেলায় অংশ গ্রহণ করা হয়।

সাংবাদিক সোলাইমান আকাশ বলেন, একান্নবর্তী পরিবার দিন দিন ভেঙেই চলছে এমতাবস্থায় আমাদের বাড়ীর এই পারিবারিক মিলনমেলা সবাইকে একই ফ্রেমবন্দী করেছে ফিরে নিয়েছে শৈশবে। বয়োবৃদ্ধ সকলে যে নিদারুণ সঙ্গ দিয়েছে তা সত্যিই মনোমুগ্ধকর। পারিবারিক মিলনমেলায় অঙ্গীকারবদ্ধ কোন শিক্ষার্থী যেন কমপক্ষে ডিগ্রি পাশ করেন। এব্যাপারের ক্লাবের পক্ষ থেকে সব সহযোগিতা করা হবে। আমাদের আল আমিন সমিতি বাড়ির অধিকাংশ উন্নয়নের কাজ করেছে! ভবিষ্যতে কিছু দিক নির্দেশনার মাধ্যমে এই সমিতি ভবিষ্যত কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

পরে দেশ-জাতির সুখ সমৃদ্ধি, মিলন মেলার সহযোগী প্রবাসীদের মঙ্গল কামনায় মুনাজাত পরিচালনা করেন মারলানা কামাল উদ্দিন

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *