৫ সিন্দুকে সাড়ে ২৬ কোটি টাকা, ১ কেজি স্বর্ণ

ক্যাসিনোকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার পুরনো ঢাকার দুই ভাই এনামুল হক এনু ও রূপনের যে বাড়িটিতে অভিযান চালানো হয়েছে সেখানে ২৬ কোটি ৫৫ লাখ নগদ টাকা ও প্রায় ১ কেজি ওজনের স্বর্ণ উদ্ধার করেছে র‍্যাব।

অভিযানে বাড়িটি থেকে এক কোটি টাকার সোনা, পাঁচ কোটি টাকার এফডিআর, ডলারসহ প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা এবং অনেক ক্যাসিনো সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।

অভিযান শেষে মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিককের সঙ্গে কথা বলার সময় এসব তথ্য দেন র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল রকিবুল হাসান।

অভিযানের সমাপ্ত ঘোষণা করে রকিবুল হাসান বলেন, গতকাল রাত থেকে বাসাটিতে তল্লাশি চালিয়ে ২৬ লাখ ৫৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। এছাড়া অভিযানে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া যায়। বিপুল পরিমান অর্থের বাইরে ৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার এফডিআর উদ্ধার হয়েছে বলে ব্রিফিয়ে জানানো হয়।

এনামুল-রুপনদের অপর একটি বাসায় অভিযান পরিচালনার কথা থাকলেও তেমন কোনো আলামত না পাওয়ায় সেই অভিযান স্থগিত করা হয়েছে বলেও জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

এক প্রশ্নের জবাবে রকিবুল হাসান বলেন, ‘এই টাকা কিসের, তা পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে বের করতে হবে। আমরা মাত্রই সন্ধান পেলাম। তদন্ত শেষে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানানো হবে।’

এর আগে গতকাল গভীর রাত থেকে পুরান ঢাকার লালমোহন সাহা স্ট্রিট রোডের ১১৯/১ বাসাটিতে অভিযান চালাতে যায় র‌্যাব। অভিযানে এনামুল হক ও রূপন ভূঁইয়ার ছয়তলা বাসাটির নিচতলার ছোট্ট বাসা থেকে পাঁচটি সিন্দুক উদ্ধার করা হয়। এসব সিন্দুতেই ছিল কোটি কোটি টাকা। সিন্দুকে এসব টাকা থরে থরে সাজানো ছিল। অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম। অভিযানের সময় কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

এনামুল হক ও রূপন ভূঁইয়া এখন কারাগারে। ক্যাসিনো কারবারি এই দুই ভাইকে গত জানুয়ারি মাসে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গত বছরের সেপ্টম্বরে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর এই দুই ভাই আলোচনায় আসেন। শুরু থেকেই তাঁরা পলাতক ছিলেন। পরে চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি তাদের গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর এনামুল, রূপন এবং তাঁদের দুই কর্মচারীর বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। সেখান থেকে কোটি টাকা এবং ৭৩০ ভরি সোনা উদ্ধার করা হয়। এরপর সূত্রাপুর ও গেন্ডারিয়া থানায় তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়।

এনামুল ও রূপন গত ছয় থেকে সাত বছরে পুরান ঢাকায় বাড়ি কিনেছেন কমপক্ষে ১২টি। ফ্ল্যাট কিনেছেন ৬টি। পুরোনো বাড়িসহ কেনা জমিতে গড়ে তুলেছেন নতুন নতুন ইমারত। স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, এই দুই ভাইয়ের মূল পেশা জুয়া। আর বাড়ি কেনা ছিল নেশা।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *