বীমার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়াতে হবে:প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বীমার সব কার্যক্রম ডিজিলাইজড করার জন্য নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন, বীমার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়াতে হবে। বীমার সব হিসাব-নিকাশ অটোমেশন পদ্ধতিতে আনলে মানুষের আস্থা বাড়বে।

রবিবার (১ মার্চ) দেশে প্রথমবারের মতো জাতীয় বীমা দিবস-২০২০ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি করতেন। সে হিসেবে আমরা বীমা পরিবারের একজন সদস্য। যেহেতু পাকিস্তানি শাসকরা বঙ্গবন্ধুকে রাজনীতি করতে দিতেন না, সে কারণে তিনি আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে ইন্স্যুরেন্স কন্ট্রোলার হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি প্রচারণা চালাতে দেশব্যাপী তাকে ঘুরতে হয়। সে সুবাদে তিনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু বীমার গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিলেন বলেই এ বিষয়ে তিনি ১৯৭৩ সালে আইন প্রণয়ন করেছিলেন। এ ছাড়া তিনি ইন্স্যুরেন্স একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন।

তিনি বলেন, বীমার মাধ্যমে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হতে পারে। বীমা একাডেমিতে লেখাপড়া করে দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি হতে পারে। বীমার প্রসারের জন্য আমরা যুগোপযোগী আইন করেছি। আমরা ‘বীমা আইন ২০১০’, ‘বীমা উন্নয়ন আইন ২০১০’ ও ‘বীমা নীতিমালা ২০১৪’ করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বীমাকে আমরা জনগণের দোরগোড়ায় অর্থাৎ গ্রাম পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করছি। শিক্ষাবীমা, শস্যবীমা, স্বাস্থ্যবীমা, গার্মেন্টশ্রমিকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বীমা করা যেতে পারে। যে বীমার মাধ্যমে দুঃসময়ে গরিব মানুষগুলো বিরাট সাফল্য পাবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশে বীমা নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা কম। মানুষের মধ্যে বীমার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। বীমার গুরুত্ব বোঝাতে হবে।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর দেখেছি, পাটের গুদামে আগুন লাগত, আর ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির টাকা হাতিয়ে নেওয়া হতো। গার্মেন্টসে আগুন লাগানো হতো ইন্স্যুরেন্সের টাকা খাওয়ার জন্য। পরে আমি গোয়েন্দা সদস্যদের লাগিয়ে দিয়ে দেখলাম, কিছু কিছু মানুষ ধরাও পড়ল। এ জন্য বীমা কোম্পানিতে সৎ লোক নিয়োগ দিতে হবে। যেন বীমার টাকা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা পান।
সরকারপ্রধান বলেন, বীমা করলে মানুষ যে সুবিধাগুলো পাবে, তা প্রচার করতে হবে। লেখাপড়া করা শিশুদের জন্য শিক্ষা বীমা করা যেতে পারে। বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমাকরণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আমরা বিবেচনায় রেখেছি।
‘বীমা দিবসে শপথ করি, উন্নত দেশ গড়ি’-এ প্রতিপাদ্য নিয়ে রোববার দেশে প্রথমবারের মতো পালিত হচ্ছে জাতীয় বীমা দিবস।

বীমাশিল্পের উন্নয়ন ও বীমা সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে দিবসটি পালন উপলক্ষে নানা কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।

আজ সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে বীমা দিবসের উদ্বোধন করেন। ৫ বিশিষ্ট বীমা ব্যক্তিত্বকে বিশেষ সম্মাননা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *