বন্দর-পতেঙ্গা এলাকায় মাতৃসদনসহ সম্মিলিত হাসপাতাল চালু করুন : সুজন

অবিলম্বে বন্দর-পতেঙ্গা এলাকায় মাতৃসদনসহ সম্মিলিত হাসপাতাল চালু করার জন্য সরকারের উর্দ্ধতন মহলের নিকট বিনীত অনুরোধ জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।

আজ সোমবার (২ মার্চ) উত্তর কাট্টলীস্থ তার নিজ বাসভবনে নাগরিক উদ্যোগের বিশেষ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।

জনদুর্ভোগ লাঘবে জনতার ঐক্য চাই শীর্ষক নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা সুজন বলেন, চট্টগ্রাম নগরীর অন্যতম প্রধান গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হচ্ছে সল্টগোলা ক্রসিং থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত। সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, তেল শোধনাগার, বেসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও সিইপিজেড কেইপিজেডসহ বিভিন্ন ভারী এবং হালকা শিল্প কারখানা ঐ অঞ্চলে অবস্থিত।

স্বাভাবিকভাবেই ঐ এলাকায় বিপুল সংখ্যক জনগনের বসবাস। তাছাড়া প্রায় ৫ লক্ষাধিকের অধিক নারী জীবন ও জীবিকার তাগিদে এখানে বসবাস করে। এতো বিপুল সংখ্যক নারীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য বন্দর-পতেঙ্গা এলাকায় নেই কোন প্রকার হাসপাতাল কিংবা মাতৃসদন।

ফলত কোন অসুখ বিসুখ কিংবা সন্তান জন্মদানের জন্য ঐ অঞ্চলে বসবাসরত নারীদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কিংবা নগরীর অন্য কোন বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে প্রসূতি মা’দের রাস্তায় সন্তান প্রসবের মতো আস্বাভাবিক পরিস্থিতির মুখেও পড়তে হয়। দিনের পর দিন এ অবস্থা চলতে থাকলেও বস্তুত ঐ এলাকার জনগনের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য কার্যত কোন প্রকার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নাই।

অথচ সল্টগোলা ক্রসিং মোড়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ একটি বিশাল বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ করেছে যা মোটেও কাম্য নয়। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। এছাড়া বন্দর এলাকা হওয়ার কারণে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নির্মিত হাসপাতাল এলাকাটিতে সবসময় ট্রাফিক জ্যাম লেগেই থাকে।

তাই চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের নিকট সবিনয় আবেদন জানাবো অতিসত্বর উক্ত বাণিজ্যিক স্থাপনাটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিকট হস্তান্তর করা হোক। যাতে ঐ এলাকায় বসবাসরত বিপুল পরিমাণ জনগোষ্ঠী প্রধানমন্ত্রী নির্দেশিত স্বাস্থ্য সেবার সুফল পেতে পারে। তিনি মুজিব বর্ষের উপহার হিসেবে চট্টগ্রামের বন্দর-পতেঙ্গা এলাকায় একটি মাতৃসদনসহ সম্মিলিত হাসপাতাল চালু করার জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নিকট বিনীত অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন, দীর্ঘ ৫ বছর ধরে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড কর্তৃপক্ষ ২৫০০ আবাসিক এবং ১০০ বানিজ্যিক গ্রাহকের টাকা নিয়ে কাঙ্খিত গ্যাস সংযোগ প্রদান করছে না যা অত্যন্ত দুঃখজনক। ইতিমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দেশে এল.এন.জি আমদানি করা হয়েছে।

চট্টগ্রামের উপর দিয়ে যাওয়া এল.এন.জি’র লাইনের মাধ্যমে ৫০০ মিলিয়নের অধিক গ্যাস সারা দেশে সরবরাহ করা হচ্ছে। অথচ ১০ থেকে ১২ মিলিয়ন গ্যাস চট্টগ্রামে সরবরাহ করা হলে চট্টগ্রামবাসী গ্যাসের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতো। তিনি অতিসত্বর চট্টগ্রামের গুরুত্ব বিবেচনা করে আবাসিক এবং বানিজ্যিক খাতে নতুন গ্যাস সংযোগ প্রদান করার জন্য কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড কর্তৃপক্ষের নিকট বিশেষ আহবান জানান।

তিনি আরো বলেন, আমরা বারবার ওয়াসা কর্র্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ জানানোর পরেও এখনো ওয়াসার গড়বিল প্রদান বন্ধ হচ্ছে না। এতে করে গ্রাহকগণ ভোগান্তিতে পড়ছে। তিনি গ্রাহকদের সুবিধার্থে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নগরীতে পূণরায় ওয়াসার প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের কাজ শুরু করার আহবান জানান।

সুজন আরো বলেন, নগরবাসীর পক্ষে আমাদের একাধিকবার আবেদন সত্বেও বাংলাদেশের একটি অনন্য ঐতিহাসিক ঐতিহ্য সাকির্ট হাউস সংলগ্ন বর্তমান শিশু পার্কটি না সরিয়ে চালু করার পায়তারা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তিনি পূণরায় চসিক মেয়রকে সার্কিট হাউসের সামনে থেকে শিশুপার্কটি সরিয়ে ফেলার জন্য বিনীত অনুরোধ জানান। নচেৎ চট্টগ্রামবাসীকে সাথে নিয়ে শিশুপার্ক নামক জঞ্জালটি সরিয়ে ফেলার দাবীতে প্রতিবাদ সমাবেশ ঘোষণা করা হবে।

এছাড়া নগরীতে লেখাপড়া ও জীবিকার তাগিদে বসবাসরত উপজাতিদের বসবাসের সুবিধার্থে নগরীতে একটি বিশাল ডরমিটরী চালু এবং সদরঘাট থেকে কাপ্তাই পর্যন্ত লঞ্চ সার্ভিস চালু করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আহবান জানান জনাব সুজন।

নাগরিক উদ্যোগের সদস্য সচিব হাজী মোঃ হোসেন এর সভাপতিত্বে এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাজী মোঃ ইলিয়াছ, আব্দুর রহমান মিয়া, সাইদুর রহমান চৌধুরী, মোঃ নিজাম উদ্দিন, নুরুল কবির, মোরশেদ আলম, মোঃ শাহজাহান, ছালেহ আহমদ জঙ্গী, অধ্যক্ষ কামরুল হোসেন, হাফেজ মোঃ ওকার উদ্দিন, শিশির কান্তি বল, শেখ মামুনুর রশীদ, এ.এস.এম জাহিদ হোসেন, অনির্বান দাশ বাবু, সমীর মহাজন লিটন, সোলেমান সুমন, সাইফুল্লাহ আনছারী, জাহাঙ্গীর আলম, রকিবুল আলম সাজ্জী, রাজীব হাসান রাজন, রকিবুল আলম সাজ্জী, এম ইমরান আহমেদ ইমু, মোঃ ওয়াসিম, মাহফুজ চৌধুরী, মনিরুল হক মুন্না প্রমূখ।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *