সহপাঠী হত্যার বিচার দাবিতে ঠাকুরগাঁওয়ে মানববন্ধন 

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁও সিএম আইয়ুব বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের  দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী শ্রাবণী রায় (১৫) হত্যার বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (৭ মার্চ শনিবার হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সিএম আইযুব বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে শহরের চৌরাস্তায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে সহপাঠিরা।

ঘন্টা ব্যাপি এই মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা তাদের সহপাঠিনী শ্রাবনী রাণীর হত্যাকারী সোহাগের ফাঁসি দাবি করেন।

এ ঘটনার পর পরিবারের পক্ষ থেকে সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর পুলিশ বলছে এজাহারে অভিযুক্ত আসামিকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ঠাকুরগাঁয়ে স্কুলছাত্রী শ্রাবণী হত্যা মামা-ভাগনির প্রেমের সম্পর্কের জের ধরেহয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।

নিহতের সৎ মামা অভিযুক্ত সোহাগ বর্মণ (১৮) ঠাকুরগাঁয়ে স্কুলছাত্রী শ্রাবণী হত্যা বিষয়ে স্বীকারোক্তিও দিয়েছেন। সোহাগের এ সব স্বীকারোক্তি প্রত্যাখ্যান করেছে শ্রাবণীর পরিবার।

বৃহস্পতিবার রাতে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সোহাগ বর্মণের জবানবন্দির বরাত দিয়ে এসব জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। এ সময় সদর থানার ওসি তানভীরুল ইসলাম, ওসি তদন্ত গোলাম মর্তুজা উপস্থিত ছিলেন।

গ্রেপ্তার সোহাগ পুলিশকে জানায়, প্রেমের সম্পর্কের একপর্যায়ে শ্রাবণীকে সে মন্দিরে নিয়ে সিঁদুর পড়িয়ে বিয়ে করে। পরে তাদের সম্পর্কের কথা শ্রাবণীর পরিবার জেনে গেলে মায়ের কথা মতো সোহাগের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় শ্রাবণী। সাত/আট দিন আগে শ্রাবণীকে মোবাইলে কল দিলে ওয়েটিং পাওয়ায় সোহাগ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।

বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় শ্রাবণীর বাবা-মায়ের অনুপস্থিতি টের পেয়ে শ্রাবণীর বাড়িতে গিয়ে হাজির হয় সোহাগ। দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও মারামারির একপর্যায়ে শ্রাবণী ঘরের ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ার থেকে চাকু বের করে সোহাগের ওপর চড়াও হয়। এ সময় সোহাগ শ্রাবণীকে থাপ্পড় মেরে বিছানায় ফেলে দিয়ে হাত থেকে চাকু কেড়ে নেয়। এরপর শ্রাবণীর গলায় ছুরি বসিয়ে দেয় সোহাগ। শ্রাবণী নিজের গলা চেপে ধরে বিছানা থেকে নেমে বারান্দায় গিয়ে লুটিয়ে পড়ে। এরপর আতঙ্কে ওই বাড়ি থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায় সোহাগ।

তবে সোহাগের এ সব স্বীকারোক্তি প্রত্যাখ্যান করেছে শ্রাবণীর পরিবার। শ্রাবণীর পিতা ভবেশ চন্দ্র অভিযোগ করে বলেন, খুনি নিজেকে বাঁচাতে মিথ্যা অপপ্রচার করছে। তার মেয়েকে হত্যা করার ব্যবহৃত চাকুটি তাদের নয়। দীর্ঘ দিন ধরে সে শ্রাবণীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। তাতে শ্রাবণী রাজি ছিল না। তাই সোহাগ পরিকল্পিত ভাবে শ্রাবণীকে হত্যা করেছে।

শ্রাবণীর মা সুমিত্রা রানী বলেন, তাদের পরিবারে একটি মাত্র মোবাইল ফোন। সেটি তিনি নিজেই ব্যবহার করেন। তার মেয়ে সেই ফোন তেমন ব্যবহার করে না। গত ১৫ দিন আগে ওই মোবাইলে সোহাগ প্রেমের প্রস্তাবের এসএমএস দিয়েছিল। বিষয়টি পরিবারের সবাই জানলেও এর বাইরে অন্য কিছুই তারা জানেন না।

বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে শহরের বরুনাগাঁও আশ্রমপাড়া এলাকার মাখনের আমবাগান থেকে সোহাগ বর্মণকে (১৮) আটক করা হয়। সোহাগ সদর উপজেলার জগন্নাথপুরের চব্বিশ টিউবওয়েল এলাকার ধীরেণ বর্মণের ছেলে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *