করোনা পরিস্থিতি ; চসিক নির্বাচন স্থগিত দাবী ফারাজ করিমের

ভয়াবহ করোনা ভাইরাসের হাত থেকে বাংলাদেশের মানুষকে রক্ষা করার জন্য এবং এর প্রতিরোধে সকল জনসমাগম স্থগিত সহ আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন স্থগিত করার দাবী জানিয়েছেন রাউজানের সাংসদ ও রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ.বি.এম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি’র সন্তান ফারাজ করিম চৌধুরী।

আজ সোমবার (১৬ মার্চ) বিকেলে নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এই দাবী জানান তিনি।

তার স্ট্যাটাসটি হুবুহু উল্লেখ করা হল, “আমি পরিষ্কারভাবে বলছি, কেউ যদি আমার কথায় কষ্ট পেয়ে থাকেন তবে ক্ষমা করবেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সহ সকল ধরণের নির্বাচন স্থগিত চাই। আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন, ইতালীতে করোনা ভাইরাস ধরা পড়েছিল এ বছরের জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহের দিকে এবং প্রথম সপ্তাহে মাত্র ২ জন রোগী ছিল। সাত দিনে যখন সেই দুইজন থেকে অন্য কোন রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায় নি, তখন ইতালী সরকার ভেবেছিল তারা করোনা ভাইরাসকে দমন করে ফেলেছে এবং করোনা ভাইরাস ইতালীতে আর আঘাত হানতে পারবে না। পরবর্তীতে মাত্র দুই থেকে তিন সপ্তাহের ব্যবধানে সেই ২ জন আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে কয়েকশ মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। ফেব্রুয়ারি পাড় হয়ে মার্চ মাসে এসে সেই কয়েকশ মানুষ থেকে তা কয়েক হাজারে গিয়ে দাঁড়ায়। ১০ মার্চের মধ্যেই তা ১০ হাজারে পৌঁছে যায়। আর গতকাল ১৫ মার্চ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ইতালীতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২২ হাজার ছুঁয়ে যায়। ইতালী সরকার বলছে দুয়েক দিনের মধ্যেই তা ২৫ হাজারে পৌঁছে যাবে। ৮০ বছরের উপরে যারা আছে তাদেরকে ইতালী সরকার আর হাসপাতালের আই.সি.ইউ’তে জায়গা দিবে না এবং তাদেরকে মৃত হিসেবে ধরে নিয়েছে। ইতালীতে ইতোমধ্যে ২ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং গতকালই প্রায় ৪ শত মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে।

আমি এই কথাগুলো বলছি আপনাদেরকে কিংবা সরকারকে ভয় দেখানোর জন্য নয়। এটা কোন রাজনৈতিক ইস্যু নয় এটা সকলের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ও ভয়াবহ হুমকিস্বরূপ। ইতালীর কাছ থেকে আমাদের শিক্ষা নিতেই হবে। এই মুহুর্তে কোন ধরনের নির্বাচনের প্রয়োজন নেই। প্রত্যেকটি মেলা, কনসার্ট, সমাবেশ স্থগিত চাই। প্রত্যেক ধরনের জনসমাগমের উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারী চাই। এমনকি এলাকাবাসীরও কড়া নজরদারী চাই। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে যেখানে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি সেখানে হোম কোয়ারেন্টিন কাজ করবে না। হোম কোয়ারেন্টিন যদি করতে হয়, তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, চেয়ারম্যান, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও এলাকাভিত্তিক নেতৃবৃন্দকে দায়িত্ব দিতে হবে যে আক্রান্ত ব্যক্তিরা তাদের বাসায় আছে কিনা। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিত সহ দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গকে কাজে লাগাতে হবে। তা হলে কোন অবস্থাতেই এটা সম্ভব না।

অফিস-আদালত, ফ্যাক্টরি, গণপরিবহণ, রাস্তাঘাট, বাজার, মার্কেট এগুলো আমরা কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি এ ব্যাপারে চিন্তা করার সময় এসেছে। করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় যেসব দেশ সফল হচ্ছে তাদেরকে উদাহরণ হিসেবে রেখে তারা যে কার্যক্রম গুলো করছে তা অনুসরণ করে আমাদের কাজ করা দরকার। ‘পরিস্থিতি এখনো হয় নি বলে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না’ এই কথার সাথে আমি একমত নই।”

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *