চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচন এই মুর্হূতে বন্ধ করা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শুক্রবার (২০ মার্চ) নগরীর মেহেদীবাগস্থ নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি থেকে বাঁচার জন্য মানুষকে এখন একজনের সাথে একজনের চার ফুট দুরত্বে থাকতে হচ্ছে।লোকজনকে ঘর থেকে বের হতে বারন করা হচ্ছে। সরকার সারাদেশে সভা-সমাবেশ, বিয়ে, সবকিছু বন্ধ করে দিয়েছে। রাস্তাঘাটে মানুষ এখন বের হচ্ছে না আর সেখানে বাংলাদেশে এখন নির্বাচন হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশের এই রকম একটা সংকটে জাতিকে এভাবে ঝুঁকির দিকে ঠেলে দেওয়া একটা গর্হিত সিদ্ধান্ত। দেশের ১৭ কোটি গণবসতিপূর্ণ মানুষ বাস করে। একটা যদি দুর্যোগ হয় তাহলে এর দায়দায়িত্ব কে নিবে? তাই এই মুহুর্তে নির্বাচন বন্ধ করা দরকার।
তিনি বলেন, নির্বাচন হচ্ছে নাগরিকের অধিকার। ভোটকেন্দ্রে যাওয়া এবং ভোট দেওয়া সাংবিধানিক বাধ্যবাদগতার বিষয়। নাগরিকের যেখানে বাধ্যবাদকতা সেটা আপনারা খোলা রেখেছেন। আর যেখানে মানুষ যেতে না চাইলে না যেতে পারবে সেটা বন্ধ করে দিয়েছেন। আগে নির্বাচন বন্ধ করে তারপর বাকি সব বন্ধ করা উচিত ছিল। কারণ প্রচারণায় গেলে তো লোকজন সীমিত করতে পারবেন না। মানুষ এখন লিফলেট নিতে দরজা খুলছে না। এখন পরিস্থিতি এমন অবস্থায় চলে গেছে। এমন অবস্থায় কেন নির্বাচন করতে হবে? কার স্বার্থে এই নির্বাচন?
“ঢাকার সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচন সাংবিধানিক বাধ্যবাদগতার কারণে করছে” ইসির এমন মন্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, সাংবিধানিক বাধ্যবাদগতা বাড়ে, নাকি মানুষের জীবন বাড়ে। ইসি সংবিধানের দোহাই দিয়ে মানুষকে এভাবে একটা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ঠেলে দিচ্ছে। ভোটের দিন ইভিএম মেশিনে একটার পর একটা ফ্রিঙ্গারফ্রিন্ট দেওয়ার সময় কেউ যদি করোনা আক্রান্ত থাকে তাহলেতো সবাই সংক্রমিত হবে। এটার দায়দায়িত্ব কে নিবে?
এইরকম ভয়াবহ পরিস্থিতির পরে ও ইসি নির্বাচনের বিষয়ে অটল কেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইসি কি মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবন নিয়ে খেলা করতে চায়? আমরা মনে করি, মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে রেখে নির্বাচনী কর্মকান্ড করার কোন সুযোগ নেই। নির্বাচনী কর্মকান্ডে সাংবাদিক সহ সবাই জড়িত। কেউতো রেহাই পাচ্ছে না। ইসি ভোট বন্ধ না করলে শনিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এসময় বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আমাদের কাছে মানুষের জীবনটাই মূখ্য। জনগণতো আমাদের সাথে আছে। জনগণকে বাদ দিয়ে আমরা রাজনীতি করতে পারবো না। সেজন্য জনগণের নিরাপত্তা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। মাঠের জরীপে আমরা এগিয়ে থাকলেও নির্বাচনের বিজয়ী হওয়াটা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। সিভিল সার্জন ইতিমধ্যে বলেছে, দেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ শহর হচ্ছে চট্টগ্রাম। এখানে সভা-সমাবেশ সমাগম সবকিছু বন্ধ করে দিতে হবে। এ অবস্থায় আমরা মনে করি, ইসি মানুষের বিরুদ্ধে কাজ করছে। মানুষের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনে যদি নির্বাচন থেকে সরে যেতে হয় তাহলেও আমি রাজী আছি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. সুকোমল বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবের রহমান শামিম, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারন সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান, সহ-সভাপতি শফিকুর রহমান স্বপন, নিয়াজ মো. খান, উপদেষ্টা জাহিদুল করিম কচি, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক এস এম সাইফুল আলম, ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক ইয়াসিন চৌধুরী লিটন, আনোয়ার হোসেন লিপু, সহ দপ্তর-সম্পাদক মো. ইদ্রিস আলী প্রমুখ।
Leave a Reply