নারীদের অগ্রাধিকার দিয়েছি-প্রধানমন্ত্রী

.jpg

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নারী জাগরণের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কারণ তিনি বুঝেছিলেন নারী কর্মক্ষম না হলে সমাজ ও পরিবারে তার মর্যাদা বাড়ে না। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নারীদের নির্যাতন করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পরবর্তী সেসব নারীদের উদ্ধার করে তাদের পূর্ণবাসন করেছেন বঙ্গবন্ধু। সে সময় অনেক নির্যাতিত নারীকে তাদের পিতারা মেনে নিতে চায়নি। বঙ্গবন্ধু সে সময় সেসব নারীদের জন্য নিজে পাত্র দেখে বিয়ে দিয়েছিলেন। পিতার পরিচয় না থাকলে তিনি পিতার জায়গায় তার নাম লিখে এবং তার ধানমণ্ডির ৩২ এর বাসার ঠিকানা দিয়েছিলেন।

আজ শনিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটের মিলনায়তনে মহিলা শ্রমিক লীগের জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। ১৫ বছর পর মহিলা শ্রমিক লীগের এ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি বলেন, পাকিস্তান আমলে বিচার বিভাগে নারীরা অংশ নিতে পারবে না এমন আইন তিনি বাতিল করে নারীদের সে সুযোগ দিয়েছিলেন। এখন অনেক পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু ৭২’র সমাজে কিন্তু এ অবস্থা ছিল না। সে সময় নারীদের নিয়ে সমাজের চিন্তা ভাবনা পশ্চাৎপদ ছিল বলে নারীদের এগিয়ে যাওয়া অসম্ভব ছিল।

কোন নারীর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে তাকে সমাজই পরিত্যক্ত করে দিত। বঙ্গবন্ধু যে সংবিধান আমাদের দিয়েছেন তাতে সংসদে নারীদের জন্য ৫০টি আসন সংরক্ষণ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘একটা শিক্ষিত জাতি পারে একটা দেশকে দারিদ্রমুক্ত করতে। দারিদ্রমুক্ত সমাজ গড়তে হলে নারীকেও শিক্ষার আলোয় আলোকিত হতে হবে। আমরা এ সুযোগ করে দিয়েছি।’

নারীকে তার মর্যাদা নিয়ে কাজ করার জন্য আমাদের সরকার কাজ করেছে। আমরা মেয়েদের কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্য কাজ করেছি। ৯৬’এ ক্ষমতায় এসে প্রাথমিক শিক্ষায় নারী শিক্ষকদের জন্য ৬০ ভাগ কোটা দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী ট্রাস্ট ফান্ড থেকে যারা বৃত্তি নিয়ে উচ্চ শিক্ষা নিতে বিদেশে যান তাদের মধ্যে ৭৫ ভাগই নারী। আমি নারীদের সব সময়ে অগ্রাধিকার দিয়েছি।

আশ্রয়ণ প্রকল্প করে ভূমিহীন, নিঃস্ব পরিবারের জন্য ঘর দেওয়া হয়েছে। এর দলিল স্বামী ও স্ত্রী দু জনের নামেই করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোন ঝামেলা হলে নারী অগ্রাধিকারের কথা বলা হয়েছে। আমরা গ্রামের নারীদের সেবা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি ক্লিনিক করেছিলাম। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত এ ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছিল। তারা ধারণা করেছিল যে, কমিউনিটি ক্লিনিকের কারণে নৌকা বেশি ভোট পাবে। কিন্তু ক্লিনিক বন্ধ করেও আওয়ামী লীগের ভোট তারা বন্ধ করতে পারে নাই।’

শিক্ষায় মেয়েরা পিছিয়ে ছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ব্যাপক হারে বৃত্তি দিয়েছি। পরীক্ষার রেজাল্টেও তারা ভালো করছে। বেদে থেকে শুরু করে চা শ্রমিক পর্যন্ত সকলকে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। আমরা বৃদ্ধ, বিধবা ও প্রতিবন্ধি ভাতা চালু করেছি। প্রায় ৮৪ লক্ষ মানুষ এ ভাতা পাচ্ছে। প্রতিবন্ধি ছাত্র ছাত্রীকে বেশি করে বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে।’

নারীরা যেন আর কোন ক্ষেত্রেই পিছিয়ে না পড়ে তার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এখন নারীরা পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসক, সেনা, বিমান, নৌ বাহিনী থেকে শুরু করে সচিব পর্যন্ত হচ্ছে। তার তাদের যোগ্যতার স্বাক্ষর স্ব স্ব ক্ষেত্রে রেখে যাচ্ছেন। নারী ক্ষমতায়নে আমরা সমতা এনেছি।’

বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কে কোন দল করে আমি তা দেখিনি। আমি সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে জড়িত সকলকেই আইনের আওতায় আনতে হবে। ভিসি সকল দাবি মেনে নিলেও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে এটা তো হওয়ার কথা না। আমি আন্দোলন দেখে নির্দেশ দেইনি। আমার কথা হলো এমন ঘটনা ঘটিয়ে কেউ পার পেয়ে যেতে পারবে না।’

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *