চট্টগ্রামে তিন ডাক্তারসহ ১৮ জন কোয়ারেন্টাইনে

হোম কোয়ারেন্টাইনে

২৪ ঘণ্টা ডট নিউজ : চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে এক ব্যক্তি আক্রান্তের পর নগরীর মেহেদীবাগে অবস্থিত ন্যাশনাল হাসপাতালের তিন চিকিৎসক ও ১৫ জন নার্স ও ওয়ার্ড বয়কে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে, গতকাল শুক্রবার (৩ এপ্রিল) ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডিতে ৩১ জনের করোনা পরীক্ষার করে এর মধ্যে একজনের করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। এ তথ্য জানান চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি।

তিনি জানান, আক্রান্ত ব্যক্তি পুরুষ এবং তার বয়স ৬৭ বছর। তার বাসা নগরীর দামপাড়া এলাকায়। আক্রান্ত রোগী বর্তমানে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, করোনা শনাক্ত হওয়া ব্যক্তি গত ৩০ মার্চ সন্ধ্যায় নগরীর ন্যাশনাল হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রথমে তাকে ভর্তি করতে অপারগতা জানায়। পরে স্থানীয় এক যুবলীগ নেতার ধমকে ওই ব্যক্তিকে ভর্তি করাতে বাধ্য হন হাসপাতালটির চিকিৎসক প্রফেসর ডা. শামীম বক্স। ওই রোগী এরপরের দুইদিন ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন।

চট্টগ্রাম বিভাগের স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির বলেন, করোনায় শনাক্ত হওয়া ব্যক্তির মেয়ে ও তার শাশুড়ি ১৩ মার্চ সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরেন। তারা ন্যাশনাল হাসপাতালে ওই রোগীতে দেখতে গিয়েছিলেন। তবে তারা তাকে দেখতে পারেননি। এজন্য ন্যাশনাল হাসপাতাল লকডাউন হবে না।

তিনি বলেন, ওই সময় যে ডাক্তাররা রোগীকে দেখেছেন তাদের আলাদা করে রাখা হয়েছে। আমরা এটাও জেনেছি ডাক্তাররা রোগী দেখার সময় পিপিই পরেছিলেন।

ডা. হাসান বলেন, তবে ওই রোগী সেখানে অবস্থান করেননি। সেখান থেকে চলে যান পার্কভিউ হাসপাতালে। কিন্তু শ্বাসকষ্ট হচ্ছে শুনে ওখানে তাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পরে ১ এপ্রিল তাকে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত তিনদিন যাবত তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন আছেন।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ন্যাশনাল হাসপাতাল লকডাউন হবে না। বরং যে ডাক্তাররা তাকে চিকিৎসা দিয়েছেন তাদেরকে কোয়ারান্টাইনে পাঠানো হবে। ওইদিন যারা ডিউটিতে ছিলেন তাদের তালিকা নিয়ে গেছে পুলিশ।

এ বিষয়ে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দীন জানান, করোনা শনাক্ত হওয়া ব্যক্তি যেদিন ন্যাশনাল হাসপাতালে এসেছে ওইদিনের ডাক্তার, নার্স আর ওয়ার্ডবয়ের তালিকা নেওয়া হয়েছে। আমরা ১৮ জনের তালিকা পেয়েছি। তার মধ্যে তিনজন ডাক্তার আর ১৫ জন নার্স ও ওয়ার্ডবয়।

ন্যাশনাল হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্স পাশাপাশি অন্য কোনো হাসপাতালে চাকরি করে কি-না এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তালিকায় দুই-একজন আছেন, যারা ন্যাশনাল হাসপাতালের পাশাপাশি অন্য হাসপাতালেও চাকরি করেন।

জানা যায়, কোয়ারেন্টাইন তালিকায় থাকা দুই জন ডাক্তার ন্যাশনাল হাসপাতালের পাশাপাশি নগরীর আগ্রাবাদের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালেও চাকরি করেন। এছাড়া একজন নার্সও রয়েছেন যিনি ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে চাকরি করছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ন্যাশনাল হাসাপাতালে কর্মরত ডাক্তার-নার্সরা যদি সংক্রমিত হন, সেক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের ডাক্তার-নার্সরাও তাদের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারেন।

আক্রান্ত রোগীর বাড়ি দামপাড়া এলাকার ছয়টি ভবন ও সাতকানিয়া এলাকার পুরানগড় গ্রামে রোগীর মেয়ের বাড়ি লকডাউন করে দেওয়া হয়।

 

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *