সম্রাটকে মুক্তি দিতে মায়ের আকুল আবেদন

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাটের মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁর মা সায়েরা খাতুন।

রবিবার (১৩ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনি এ অনুরোধ জানান। সম্রাটের মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সায়েরা খাতুন প্রধানমন্ত্রী উদ্দেশ্য বলেন, ‘আপনি মানবতার মা। সম্রাট যেমন আমার সন্তান তেমনি আপনারও সন্তানতুল্য। সম্রাট ওপেন হার্ট সার্জারির রোগী। তার শারীরিক অবস্থা খুব-ই খারাপ। মা হিসেবে আপনার কাছে আমার আকুল আবেদন সম্রাটকে মুক্তি দিন। উন্নত চিকিৎসা দিয়ে তার প্রাণভিক্ষা দিন।’

পরে সম্রাটের মা অসুস্থ থাকায় তার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সম্রাটের বোন ফারহানা চৌধুরী শিরিন।

মায়ের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে ফারহানা চৌধুরী শিরিন বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মমতাময়ী জননী, মানবতার মা, সম্রাট আপনার কর্মী, আপনার সন্তানতুল্য, সম্রাট আপনার সংগঠনে অনুপ্রবেশকারী নয়। আমি একজন মা হিসেবে আপনার কাছে আকুতি করছি সম্রাটের ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে ওকে মুক্ত করে দিন। ওকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়ে আমার সন্তানের জীবন রক্ষা করুন।’

সম্রাটের অফিসে ইয়াবা ও অস্ত্র পাওয়ার ঘটনাকে এসময় পরিকল্পিত ও সাজানো বলে দাবি করা হয়।

বলা হয়, সম্রাটের বাইপাস সার্জারি করে ভাল্ব প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক মদ্যপান তার জন্য মৃত্যুর কারণ হতে পারে। তাই সে জেনেশুনে কখনো মদ পান করবে না।

সংবাদ সম্মেলনে আরও দাবি করা হয়, সম্রাট গ্রেফতারের ১০ দিন আগ থেকে অফিসেই ছিল না, অফিস ছিল অরক্ষিত। শরীর খারাপ থাকায় অন্যত্র অবস্থান করছিলেন তিনি। তার অফিসে মদ, ইয়াবা, পিস্তল কিছুই ছিল না। আমাদের আশংকা এটি পরিকল্পিত সাজানো নাটক ছাড়া কিছুই না।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ঢাকা শহরে প্রতিটি ক্লাব পরিচালনা করার জন্য কমিটি রয়েছে। আমার সন্তান সম্রাট কোনও ক্লাবের পরিচালনা কমিটির সদস্য নয়। শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এবং ব্যক্তিগত আক্রোশে তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে জড়ানো হচ্ছে।

আরও বলা হয়, বন্যপ্রানী সংরক্ষণ আইনে যে মামলায় তাকে ৬ মাসের সাজা দেয়া হয়েছে সে মামলার আদেশ আমরা এখনও হাতে পাইনি। ক্যাঙ্গারু বাংলাদেশি বন্যপ্রাণী নয় এবং বাংলাদেশে এই প্রাণীটির বিচরণ দেখা যায় না। যেহেতু ক্যাঙ্গারুটি বাংলাদেশে শিকার করা হয়নি তাই এটি বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের মধ্যে পড়ে না। উক্ত ক্যাঙ্গারুর চামড়াটি এক প্রবাসী বাংলাদেশি তাকে উপহার হিসেবে প্রদান করে বিধায় এটি আইন বিরোধী কাজও নয়, এজন্য সাজা দেয়ারও বিধান নেই।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ৬ অক্টোবর রবিবার আমার সন্তানকে গ্রেফতার করা হয়। যে স্থান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় সে স্থান থেকে কোনও প্রকার অস্ত্র কিংবা মাদক পাওয়া যায় নাই। কিন্তু আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে দেখতে পেলাম তাকে কাকরাইল অফিসে নিয়ে আসা হয় এবং প্রায় ৪ ঘণ্টা ১৭ মিনিট তার অফিস তল্লাশি করা হয়। তল্লাশি চলাকালীন সময়ে কোনও গণমাধ্যমকর্মীকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, সম্রাটকে নিয়ে অফিসের ভেতরে প্রবেশের সময় বিভিন্ন মিডিয়ায় লাইভ সম্প্রচারে দেখা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু লোক কাঁধে ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করে এবং অফিস থেকে বের হওয়ার সময় ওই সকল ব্যাগ লক্ষ্য করা যায়নি।

পরিশেষে বলতে চাই, সম্রাট জাতির পিতার আদর্শের সৈনিক, জননেত্রী শেখ হাসিনার তৃণমূলের পরীক্ষিত কর্মী। তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দিন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সম্রাটের ছোট ভাই রাসেল আহমেদ চৌধুরী।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *