লকডাউন দেওয়াকে কেন্দ্র করে সীতাকুণ্ডে পুলিশ-গ্রামবাসীর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া

২৪ ঘণ্টা ডট নিউজ। সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি |। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বার আউলিয়ায় লকডাউন দেওয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশ-গ্রামবাসীর মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

এঘটনায় পুলিশ গ্রামবাসীকে লক্ষ্য করে ১৫/২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁরে এবং গ্রামবাসী পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার সময় বার আউলিয়াস্থ ফুলতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

জানা যায়, করোনা সংক্রামনের কারণে উপজেলার অন্যান্য এলাকার মতো ফুলতলা পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা গ্রামে যাতে বাহিরে কোন ব্যক্তি ও শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের গাড়ি প্রবেশ করতে না পারে সেজন্যে বাঁশ দিয়ে শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের তথা গ্রামের রাস্তা বন্ধ করে দেয় কয়েকদিন আগে।

যার ফলে লোকমান হোসেনের মালিকানাধীন জিরি সুবেদার শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের কোন গাড়ি প্রবেশ করতে পারছেনা। বিষয়টি ইয়ার্ড কৃর্তপক্ষ পুলিশকে জানালে রাত সাড়ে ৮টার দিকে সীতাকুণ্ড মডেল থানার পুলিশ গিয়ে রাস্তা থেকে ব্যারিকেট সরিয়ে দেয়।

এসময় গ্রামবাসীর সাথে পুলিশের তর্ক-বির্তক শুরু হয়। এরপর দুইপক্ষের মধ্যে বেশ উক্তেজনার সৃষ্টি হলে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এঘটনায় পুলিশ ১৫/২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুরে বলে অভিযোগ করে গ্রামবাসী।

এব্যাপারে জানতে চাইলে স্থানীয় গ্রামবাসীরা বলেন, সারাদেশে করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউন চলেছে, আমাদের গ্রামে যাতে করোনা ভাইরাসের সংক্রামণ ছড়াতে না পারে সেজন্য আমরা গ্রামবাসী সেচ্ছায় লকডাউন করি।

কিন্তু জিরি সুবেদার শিপব্রেকিং ইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ তাদের ইয়ার্ড চালু করে বাহির থেকে গাড়ি গ্রামে ডুকাচ্ছে। আমরা বাঁধা দিলে তারা পুলিশ এনে গ্রামবাসীর উপর নির্যাতন করে।

তারা আরো বলেন, জিরি সুবেদার কৃর্তপক্ষ এখানে কোটি কোটি ব্যাবসা করলেও বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারণে গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষকে কোন রকমের সহযোগীতা করেনি, এছাড়া গ্রামের রাস্তাটা তাদের গাড়ি চালিয়ে নষ্ট করলেও রাস্তাটা মেরামতের কোন উদ্যেগ নেয়নি।

এদিকে গ্রামবাসীর অভিযোগগুলো অস্বীকার করে জিরি সুবেদার শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডের প্রতিনিধি মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, গ্রামের কিছু ব্যক্তি লকডাউনের নামে রাস্তা বন্ধ করে ইয়ার্ডে ডাকাতি করার প্রস্তুুতি নিচ্ছে, কয়েকদিন আগেও তারা দারোয়ানকে মেরে ইয়ার্ডে ডাকাতি করেছে।  আর করোনা ভাইরাসের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে আমরা গ্রামবাসীর জন্য ত্রাণ সামগ্রী দিয়েছি।

এদিকে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি ফিরোজ হোসেন মোল্লা বলেন, এলাকাবাসী বাঁশ দিয়ে রাস্তা চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।

আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে উক্তেজিত গ্রামবাসী আমাদের উপর পাথর ছুঁরে। তবে গ্রামবাসীকে লক্ষ্য করে ফাঁকাগুলি ছোঁড়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন ওসি।

এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান এএসপি (সীতাকুণ্ড) সার্কেল শম্পা রানী শাহা, সোনাইছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মনির আহমেদ, বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার এসআই সাইফুল ইসলামসহ ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশসহ শতাধিক পুলিশ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সীতাকুণ্ড) সার্কেল শম্পা রানী সাহা’র সমোঝতার আশ্বাসে গ্রামবাসী ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

২৪ঘণ্টা/কামরুল ইসলাম দুলু/আরএসপি

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *