শহর-গ্রামে সমন্বিত ত্রাণ ব্যবস্থাপনা দাবি:নাগরিক প্রস্তাবনায় রিয়াজ হায়দার

পর্যাপ্ত মজুদে সরকারি দাবি সত্ত্বেও সংকটে দু:স্থ, নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত

সামাজিক অপরাধ বাড়ার আশঙ্কায় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ

সমন্বিত ত্রাণ ব্যবস্থাপনা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে রেশনিং দাবি করলেন চট্টগ্রাম নাগরিক উদ্যোগের আহ্বায়ক, পেশাজীবী নাগরিক সংগঠক রিয়াজ হায়দার চৌধুরী।

তিনি করোনা বিদ্ধ এই বৈশ্বিক মহামারীতে বাংলাদেশের সমাগত দুঃসময় মোকাবেলায় সিভিল প্রশাসন, সশস্ত্রবাহিনীর সাথে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, নাগরিক- পেশাজীবী সমাজের ‘সমন্বিত ত্রাণ ব্যবস্থাপনা’ দাবি করে বলেছেন, শহর-গ্রামে ওয়ার্ড ও ইউনিট পর্যায়ে সমন্বিত ত্রাণ ব্যবস্থাপনা বিস্তৃত করতে হবে।
বাংলাদেশ যদি করোনার এই সংকট মহামারীর বিস্তৃতি রূপে অন্তত আরো তিন মাস স্থায়ী হয়, তাহলে চলমান প্রক্রিয়ায় খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে। খাদ্য সংকট জনিত সামাজিক অপরাধ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন অবস্থা থেকে উত্তরণে এখনই পাড়ায় পাড়ায় সমন্বিত ত্রাণ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা প্রয়োজন। একই সাথে ন্যায্যতার ভিত্তিতে নিঃস্ব, বঞ্চিত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য রেশনিং চালুর দাবিও তুলেছেন এই পেশাজীবী নাগরিক সংগঠক।

ঘরে থেকেই সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্য বিধিমালা মেনে চলার জন্য নাগরিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এক ভিডিও বার্তায় রিয়াজ হায়দার চৌধুরী বলেছেন, বর্তমানে দেশে সার্বিক ভাবে সংকট ঠিক শুরু না হলেও পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদে সরকারি দাবি সত্ত্বেও অনেক দুষ্হ, নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষ সংকটে রয়েছেন। অথচ সিভিল প্রশাসন, সশস্ত্রবাহিনী, সিটি কর্পোরেশন, স্থানীয় সরকার, রাজনীতিবিদ, সামাজিক ও ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে অনেকেই ত্রাণ সাহায্য বিলিবণ্টন করছেন। চলমান বিচ্ছিন্ন ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচিতে কেউ কেউ তিন চার দফা ত্রাণ পেলেও কারো ভাগ্যে একরত্তি চালও জুটেনি। এমন অবস্থায় বিক্ষিপ্তভাবে ত্রাণ বিতরণ না করে ওয়ান স্টপ সেন্টারে ত্রাণ সংগ্রহ করে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত সরবরাহ অব্যাহত রাখতে হবে। একই সাথে ন্যায্যতার ভিত্তিতে রেশনিংও চালু রাখতে হবে।
অচিরেই এমন পদক্ষেপ নেয়া না হলে নিকট ভবিষ্যতে নাগরিক সমাজের দুর্ভোগ যেমন বাড়বে, তেমনি নিঃস্ব রিক্ত কর্মহীন ও নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্যাভাবজনিত সামাজিক অপরাধ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।এবিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ দায়িত্বশীলদের সদয় বিবেচনার জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এই নাগরিক সংগঠক।

উল্লেখ্য, এর আগে অপর একাধিক ভিডিও বার্তায় স্বাস্থ্য খাতে চরম নৈরাজ্য, সাধারণ মানুষের চিকিৎসা অপ্রাপ্তি ও এই সংকট থেকে মুক্তি সহ করোনাময় সময়ে নানা সমস্যা নিয়ে নাগরিক প্রস্তাবনা তুলে ধরেন এই সংগঠক। অন্তত দুই দশক ধরে মাঠে ব্যাপক সক্রীয় থাকা এই সংগঠক মানুষের অধিকার, মর্যাদা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করেছেন । জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতেও সজাগ সক্রীয়। শ্রমিক শ্রেণীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় অত্যন্ত উচ্চকণ্ঠ এই সংগঠক সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সাথেও নানাভাবে জড়িত । উন্নয়ন আন্দোলন ও নানা সামাজিক-নাগরিক সংকটে মাঠে থেকে কাজ করেছেন। বৈশ্বিক মহামারী করোনায় চিকিৎসা,খাদ্য নিরাপত্তা সহ মানুষের ন্যায্যতা ও সাম্যতা নিয়ে সোচ্চার এই পেশাজীবী নাগরিক সংগঠক।
বাংলাদেশের অন্যতম সক্রিয় পেশাজীবী নাগরিক সংগঠক রিয়াজ হায়দার চৌধুরী।

দেশটির প্রধান সমুদ্র বন্দর শহর চট্টগ্রামের এই সংগঠক চট্টগ্রাম নাগরিক উদ্যোগের আহ্বায়ক ও পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এই মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। এছাড়া তিনি বাংলাদেশের সাংবাদিকদের সর্বোচ্চ জাতীয় সংগঠন ‘বিএফইউজে- বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নে’র নির্বাচিত সহ-সভাপতি এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য । বারে বারে নির্বাচিত হন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নে-সিইউজে’র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে। চট্টগ্রামের মানুষের প্রতি বৈষম্যের প্রতিবাদেও উচ্চকণ্ঠ এবং মানুষের সাম্যতা ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠায় সক্রিয়। বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত চট্টগ্রামকে প্রকৃতই ‘বাণিজ্যিক রাজধানী’ করার লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *