ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুরে করোনাভাইরাস সংক্রমিতের গ্রামের লোকজনের চলাচলে বাধা দেওয়ায় পাল্টা সড়ক অবরোধ করে সহকারী কমিশনারের গাড়ি আটকে দিয়েছে তারা।
হরিপুর উপজেলার ডাঙ্গীপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান বলেন, “সোমবার (১৩ এপ্রিল) বিকালে আমার ইউনিয়নের ডাঙ্গীপাড়া-হরিপুর সড়ক অবরোধ করে এলাকাবাসী।”
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত শনিবার হরিপুরের ডাঙ্গীপাড়া গ্রামে নারায়ণগঞ্জ ফেরত দুই তরুণের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়। ওই দুই পরিবারের বাড়ির লোক জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে নির্দেশ দেয় প্রশাসন। এরপর ওই রাতে ঠাকুরগাঁও জেলা অবরুদ্ধ ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন।
চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান বলেন, “দুই তরুণের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পার্শ্ববর্তী ধীরগঞ্জ ও হরিপুর গ্রামের তরুণ-যুবকেরা ডাঙ্গীপাড়ার মানুষের চলাচল বন্ধ করে দেয়। এর প্রতিবাদে ডাঙ্গীপাড়ার মানুষরা একত্রিত হয়ে সোমবার বিকালে ডাঙ্গীপাড়া-হরিপুর সড়ক অবরোধ করেন।
“সেসময় ওই সড়ক দিয়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এলাকাবাসীকে সচেতন করার দায়িত্বে থাকা টিমের গড়িবহরও আটকে দেয় গ্রামবাসী।”
ওই গাড়িবহরে থাকা ঠাকুরগাঁওয়ের সহকারী কমিশনার সরদার মো. গোলাম রব্বানী বলেন, “অন্যগ্রামের লোকজন করোনা আক্রান্ত গ্রামের লোকজনের চলাচলে বাধা দেওয়ায় আত্মসন্মানবোধের জায়গা থেকে সড়ক অবরোধ করে গ্রামবাসী।“প্রশাসনের কারো ওপর তাদের রাগ বা অভিমান ছিল না। পরে তাদের চলাচল উন্মুক্ত করে দিলে তারা সরে যান।”
ওই গ্রামের এক ব্যক্তি আনোয়ার হোসেন জানান, গ্রামের দুইজনের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ার পর প্রশাসন তাদের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেছে। তাদের পরিবারের লোকজনকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে নির্দেশ দেওয়ার পর তারা তা মেনে চলছে।“এরপরও গ্রামের মানুষের চলাচলে বাধা দেওয়া হচ্ছে।”
চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান বলেন, “অবরোধের কথা শুনে ঘটনাস্থলে ইউএনও আব্দুল করিম এসে গ্রামবাসীর কথা শোনেন। সেসময় তারা খাদ্যসামগ্রীর দাবি করেন ইউএনওর কাছে। এলাকায় যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হলেও ইউএনও গ্রামবাসীদের জন্য আরো বরাদ্দ দেওয়ার আশ্বাস দেন।”
হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল করিম বলেন, গ্রামবাসীর সড়ক অবরোধ করার বিষয়টি শোনা মাত্রাই ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলেছি।
“গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে ডাঙ্গীপাড়াবাসীর চলাচল উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। সে সময় গ্রামবাসী খাদ্যসামগ্রীর দাবি করে বসে। এলাকার যারা খাদ্যসহায়তা পাওয়ার যোগ্য, তাদের একটি তালিকা তৈরীর আশ্বাস দেওয়া হলে গ্রামবাসী সড়ক ছেড়ে চলে যান।”
Leave a Reply