সীতাকুণ্ডে বিট কর্মকর্তার পরিত্যাক্ত ঘরে মিলল জবাইকৃত মায়া হরিণ!

সীতাকুণ্ড মায়া হরিণ উদ্ধার

২৪ ঘণ্টা ডট নিউজ। কামরুল ইসলাম দুলু, সীতাকুণ্ড : সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের শীতলপুর এলাকায় অবস্থিত বন বিটের একটি পরিত্যাক্ত ঘর থেকে জবাইকৃত একটি মায় হরিণ উদ্ধার করেছে পুলিশ। হরিণটির ওজন প্রায় ১২ কেজি।

আজ সোমবার (২৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০ টার সময় এঘটনা ঘটে। ময়নাতদন্ত ছাড়াই বিট অফিসের পাশে মায়া হরিণটি মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, সকালে শীতলপুর বিট কর্মকর্তা জাকির হোসেন নিজেই পরিত্যাক্ত রুমের ভিতরে একটি জবাইকৃত হরিণের চামড়া ছড়ানোর সময় স্থানীয় কয়েকজন যুবক বিষয়টি দেখতে পায়।

পরে ঘটনাটি স্থানীয় সাংবাদিকদের জানালে তাৎক্ষনিভাবে কয়েকজন সাংবাদিক সেখানে উপস্থিত হয়। এসময় সাংবাদিকদের দেখে বিট কর্মকর্তা জাকির হোসেন তড়িঘড়ি করে জবাইকৃত মায়া হরিণটি মাটি চাপা দিতে যায়।

এসময় তিনি বলেন, শামসুল আলম নামে এক ব্যক্তি পাহাড় থেকে হরিণটি নিয়ে যাওয়ার সময় আমি আটক করি। এরপর চামড়া সংরক্ষণের জন্য আমি জবাই করে চামড়া ছড়াই।

এ প্রতিবেদক বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায়কে জানালে তিনি হরিণটি মাটি চাপা দিতে নিষেধ করেন। এদিকে নাম প্রকাশ না করা শর্তে ওই এলাকার বেশ কয়েকজন যুবক বলেন, বিট কর্মকর্তাসহ স্থানীয় ২/৩ জন মিলে উক্ত হরিনটি আটক করে জবাই করে।

পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজনের মাঝে ঘটনাটি জানাজানি হয়ে গেলে বিট কর্মকর্তা হরিণের চামড়া সংগ্রহ করে মাংস মাটির নিচে চাপা দেয়।

এদিকে খবর পেয়ে সীতাকুণ্ড মডেল থানার এস.আই মো. রফিক এর নেতৃত্ব পুলিশ শীতলপুর বিট কার্যলয়ে গিয়ে জবাইকৃত ও চামড়া ছড়ানো অবস্থায় মায়া হরিণটি উদ্ধার করেন। পরে কুমিরা বন বিভাগের রেঞ্জ অফিসার উত্তম কুমার দত্ত সেখানে উপস্থিত হন।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, পাহাড়ে শিকারীরা হরিণটি হত্যা করেছে। জবাইকৃত হরিণটি বিট কর্মকর্তা উদ্ধার করেছে।

এদিকে বিট কর্মকর্তা জাকির হোসেন সাংবাদিকদের কাছে হরিণটি নিজে জবাই করে চামড়া ছড়ানোর বিষয়টি স্বীকার করলেও পুলিশের কাছে তিনি জবাই করা অবস্থায় পেয়েছেন বলে জানান।

পরিত্যাক্ত রুমটিতে হরিণটি জবাই ও চামড়া চড়ানোর আলামত হিসেবে কয়েকটি ছুরি,কলাপাতা এবং রক্ত পাওয়া যায়।

এব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বখতিয়ার নূর সিদ্দিকী বলেন, কে বা কারা একটি মায়া হরিণকে হত্যা করেছে পাহাড়ে, সেটা বিট কর্মকর্তা উদ্ধার করেছে বলে আমাকে জানিয়েছে।

লকডাউনের কারণে সব কিছু বন্ধ থাকায় ময়নাতদন্তও করা সম্ভব নয় বলে স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়ে মাটি চাপা দেওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, দুপুর দেড়টার সময় এসআই রফিক ও রেঞ্জ কর্মকর্তা উত্তম কুমার দত্তের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মায়া হরিণটি মাটিচাপা দেওয়া হয়।

২৪ ঘণ্টা/আর এস পি

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *