বাংলাদেশের সাথে হারতে হারতে ড্র করেছে ভারত

কলকাতার সল্ট লেকে গ্যালারি ভর্তি দর্শক। চারদিকে কেবলই ‘ভারত’, ‘ভারত’ চিৎকার। এতো দর্শকদের সামনে খেলার অভিজ্ঞতাটাই যে নেই বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের। তাতে কী? বাংলাদেশের ছেলেরা তো দমে যাওয়ার নয়। বীরের মতো লড়লো পুরোটা সময়। মাঠের প্রতিটি কোণায় তাদের বিচরণ। ভারতীয় ফুটবলারদের যেখানে খুঁজে পাওয়া দায়।

র‌্যাংকিংয়ে ৮৪ ধাপ এগিয়ে থাকা ভারত খানিকটা দাপট দেখাচ্ছিল শুরুতে। ৩৪ মিনিটে তো ভারতের ডানদিক থেকে নেয়া শট এক হাতে বারের ওপর দিয়ে বাইরে পাঠিয়ে দেন রানা, যেটি হয়ে যেতে পারতো গোল। তবুও আক্রমনে কম যায়নি বাংলাদেশও।

কাউন্টার অ্যাটাক নির্ভর ফুটবলে ভয় ধরাচ্ছিল প্রতিপক্ষ সমর্থকদের বুকে। প্রথমার্ধের ৪২ মিনিটে জামালের ফ্রি-কিকে সাদের মাথা ছুঁয়ানোতে কাঙ্খিত সেই গোলের দেখা পায় বাংলাদেশ। লিড নিয়েই বিরতিতে যায় সফরকারিরা।

দ্বিতীয়ার্ধে ৫১ মিনিটের মাথায় দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিলেন স্ট্রাইকার নবীব নেওয়াজ জীবন। সতীর্থের সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়ায় দৌড়ের মধ্যেই বক্সে বল নিয়ে ঢুকে যান তিনি, শটও নিয়েছিলেন। সেটি কোনোমতে আটকে দেন ভারতীয় এক ডিফেন্ডার।

৭১ মিনিটেই সমতায় ফিরতে পারতো স্বাগতিকরা। ভারতের সংঘবদ্ধ এক আক্রমণ ডিফেন্ডাররা বেশ কয়েকবার ঠেকিয়ে দিলেও শট নিয়েছিলেন স্বাগতিক দলের এক ফুটবলার। বাংলাদেশ গোলরক্ষক রানার দৃঢ়তায় তা আর সম্ভব হয়নি।
৭৫ মিনিটে নাবীব নেওয়াজ ভারতীয় গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে বল পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। সেটি প্রায় গোলই হয়ে যাচ্ছিলো। কিন্তু হঠাৎই একজন ডিফেন্ডার এসে সেটা লাথি দিয়ে ওপরে তুলে দেন। যদিও অনেকের ধারণা বলটি অতিক্রম করেছে গোললাইন।

বাংলাদেশ তখন প্রায় জিতেই গেছে। চারদিকে চলছে উৎসবের প্রস্তুতি। এমন সময় ৮৮তম মিনিটে কর্নার থেকে বল পেয়ে হেডে গোল করেন ভারতীয় ফুটবলার আদিল খান। তার এই গোলেই শেষ পর্যন্ত ১-১ সমতায় মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।

খেলা শেষে স্কোরবোর্ড হয়তো দেখাবে ম্যাচ হয়েছে ড্র। তবে এই ম্যাচে যেভাবে লড়াকু মানসিকতায় দেখিয়েছে জামাল ভূঁইয়ারা। ড্র হওয়ায় সেই উৎসবের রঙ হয়তো কিছুটা ধূসর হয়েছে, তবে একেবারে তো শেষ হয়ে যায়নি। এই ম্যাচের পর নিশ্চয়ই দেশের ফুটবল প্রেমিরা আবারও স্বপ্ন দেখা শুরু করবেন, দেশের ফুটবলের পুর্নজাগরণের।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *