চট্টগ্রামের রাউজানে দেড়শো বছরের পুরনো হাতে লেখা পবিত্র কোরআন শরীফ সংগ্রহে রেখেছেন সৈয়দ নেছার উদ্দিন নামের এক যুবক। তার বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার পূর্ব গুজরা ইউনিয়নের সৈয়দ আওলিয়ার বাড়ীতে।
যুবক নেছার ২৪ ঘন্টা ডট নিউজের প্রতিনিধির সাথে আলাপচারিতায় বলেন, রাউজানের আধারমানিক গ্রামের প্রখ্যাত আধ্যাত্মিক সাধক সৈয়দ জমির উদ্দিন ১৮৫৭ সালে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতার সৈয়দ আশরাফ শাহ এবং পিতামহ হলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক সৈয়দ আহমদ আলী ওরফে সৈয়দ আউলিয়া।
সৈয়দ জমির উদ্দিন কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা হতে কোরআন, হাদিস, ফিকাহ প্রভৃতি বিষয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জন শেষে আধ্যাত্মিক জ্ঞান অর্জনের জন্য ভারতের ইউপি রাজ্যের বেরিলি শরীফের আল্লামা শাহ আহমদ রেজা খানের পবিত্র হাতে বায়াত হয়ে কঠোর ইবাদত-বন্দেগীর মাধ্যমে আলা হযরত আল্লামা শাহ আহমদ রেখা খান বেরলবীর নিকট থেকে কাদেরিয়া তরিকায় খেলাফত অর্জন করে তাঁর পীরের নির্দেশে ১৮৮০ সালের দিকে নিজ দেশে ফিরে এসে মানুষকে আধ্যাত্মিকতা শিক্ষা দেয়ার লক্ষ্যে সৈয়দ বাড়ি জামে মসজিদ ও মসজিদ সংলগ্ন খানকাহ প্রতিষ্ঠা করেন এবং তৎসময়ে ছাপাখানা না থাকায় নিজহাতে পবিত্র কোরআন শরীফ লিখে এলাকার মানুষের কাছে বিতরণ করে কোরআনের শিক্ষা দিতেন।
তার হাতের লেখা ছিল মুক্তোর মতো সুন্দর। হুবহু ছাপাখানার কোরআন শরীফের মতো দেখতে সৈয়্যদ জমির উদ্দিনের হাতে লেখা কোরআন শরীফ। এই আধ্যাত্মিক সাধক ১৭ জানুয়ারী ১৯৩০ সালে নিজগ্রামে ইন্তিকাল করেন। তার মৃত্যুর পর হাতে লেখা দুইটি কোরআন শরীফ পরিবারের কাছে সংরক্ষিত ছিলো। পরবর্তীতে হাতে লেখা একটি কোরআন শরীফ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে সংরক্ষণের জন্য নিয়ে যায় কর্তৃপক্ষ।
সম্পর্কে আধ্যাত্মিক সাধক সৈয়দ জমির উদ্দিনের প্রপৌত্র সৈয়দ নেছার উদ্দিন ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, সৈয়দ জমির উদ্দিনের হাতে লেখা দেড়শো বছরের কাছাকাছি সময়কালের পুরনো কোরআন শরীফের মধ্যে একটি মাত্র কোরআন শরীফ তিনি সংরক্ষণ করে রেখেছেন। তার পূর্বে সৈয়্যদ সিরাজুল হক নামের বংশের একজনের কাছে এটি রক্ষিত ছিলো। পরবর্তীতে সৈয়দ নেছার এটি যত্ন করে তার কাছে রেখেছেন।
তিনি বলেন, অনেকেই পবিত্র কোরআন শরীফটি দেখতে এসে মুক্তোর দানার মতো হাতের লেখা দেখে বিস্মিত হন। একদম অবিকল ছাপাখানার কোরআনের মতো দেখতে। তিনি বলেন, আমৃত্যু এই কোরআন শরীফটি আমার সংগ্রহে রাখার ইচ্ছে আছে। পরবর্তীতে আমার বংশের কেউ এটি সংরক্ষণ করবে।
Leave a Reply