ঘন ঘন অজু করে করোনা থেকে পরিষ্কার থাকুন-ডাঃ শাহাদাত

২৪ ঘণ্টা ডট নিউজ। চট্টগ্রাম ডেস্ক : মহামারি করোনা দুর্যোগের মাঝেও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি সভাপতি ও স্পোর্টস মেডিসিন স্পেশালিস্ট ডাঃ শাহাদাত হোসেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক লাইভে এসে টেলিমেডিসিন সেবার মাধ্যমে জনগণের মধ্যে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

এই রমজান মাসেও তার নিজস্ব ফেইসবুক পেইজ (https://www.facebook.com/DrShahadatBNP/) থেকে তিনি এই সেবা চালিয়ে যাবেন রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতি বার রাত ১০টা থেক ১১.৩০ পর্যন্ত।

সম্প্রতি তিনি লাইভে দর্শকদের করোনা প্রতিরোধে অজুর গুরুত্ব নিয়েও কথা বলেন।

তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, করোনার একমাত্র কার্যকরী প্রতিষেধক হলো বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়া। আপনি যদি নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান দ্বারা হাত ধুয়ে নেন, তাহলে আপনি করোনার সর্বোত্তম প্রতিষেধকটি গ্রহণ করছেন। এটিই হলো করোনার ক্রমবর্ধমান বিস্তার ঠেকানোর একমাত্র ফলপ্রসূ পন্থা।

তিনি বলেন, মুসলমান হিসেবে আমরা প্রত্যহ নামাজ আদায়ের পূর্বে পাঁচবার হাত-মুখ ধৌত করি। নামাজ আদায়ের পূর্বে বিধিবদ্ধ এ প্রক্ষালনকে ইসলামি পরিভাষায় অজুু বলা হয়। নিয়মিত অজুর শেষে সাবান দিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে করোনা থেকে সুরক্ষিত থাকা যায়।

আমরা জানি, অজুর সময় মুখমণ্ডল ধৌত করতে হয়। মুখ ধোয়ার অভ্যাস সব ঋতুতেই শরীর ও মনে সতেজতা আনে। মুখমণ্ডল ও দুই হাত শরীরের সবচেয়ে বেশি আবরণমুক্ত অংশ। তাই এগুলোতে সহজেই ধুলাবালি ও ভাইরাস, রোগজীবাণু লাগতে পারে।

আর মানুষের ত্বকে বিশেষ করে লোমকূপের গোড়ায় এবং ঘর্মগ্রন্থির মুখে স্ট্যাপলিলোকাই, স্ট্রেপটোকক্কাই, কলিফর্ম ইত্যাদি ক্ষতিকর রোগ জীবাণু থাকতে পারে।

এ ছাড়া চোখের ভ্রুযুগল, চোখের পাতা, গোঁফ, দাড়ি, যা সহজেই ময়লাযুক্ত হতে পারে তাও হাত-মুখ ধোয়ার মাধ্যমে পরিষ্কার হয়ে যায়।

মুখমণ্ডল অপরিষ্কার থাকলে রোগজীবাণু সহজেই মুখে প্রবেশ করতে পারে।মুখমণ্ডলের ঘাম, ময়লা ও জীবাণু ত্বকের সঙ্গে সেঁটে থাকতে সাহায্য করে। তাই আমরা ঘন ঘন অজুর মাধ্যমে আমাদের মুখমণ্ডলকে জীবাণুমুক্ত রাখতে পারি।

উপরন্ত, অজুর সময় দুই হাত কনুই পর্যন্তও ধৌত করতে হয়। স্বাভাবিক কাজকর্মের জন্য শরীরের এই অংশটুকু প্রায়ই খোলা থাকে, যার ফলে এ অংশে ময়ল ও রোগজীবাণু লাগতে পারে।

হাতের আঙুলের ডগার মাধ্যমে বিশেষ করে চুলকানোর পর আঙুল, নাক, কানসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে এসব জীবাণু বিস্তার লাভ করে।

এ ছাড়া অপরিষ্কার হাত খাদ্য ও পানীয়কেও জীবাণুযুক্ত করতে পারে। তবে সুস্থ
ত্বক এসব জীবাণুর জন্য এক স্বাভাবিক প্রতিরোধক। কিন্তু ত্বকে সামান্যতম ক্ষত হলে তার মাধ্যমে এসব জীবাণু দেহের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে এবং এর ফলে পাঁচড়া, ফোড়া, কারবাংকন, সেলুলাইটিস, সেপটিকেনিয়া, পায়োমিয়া ইত্যাদি রোগ হতে পারে।

আর এখনকার সময় এর মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কাও খুব বেশি। সুতরাং অজু করার সময় প্রথমে ভালোভাবে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে পরে মুখমণ্ডল ধৌত করলে এসব রোগ থেকে সহজেই মুক্ত থাকা সম্ভব।

ভাইরাস একটি সংক্রামিত ব্যাধি। যে কোন ধরনের সংক্রামিত রোগ-ব্যাধি প্রতিরোধে সচেতনতা ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কোন বিকল্প নেই। সংক্রামিত রোগ-ব্যাধি যে সকল অঙ্গের মাধ্যমে ছড়ায় তা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের অজুর মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব।

অজুর শেষে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলার অভ্যাস করা গেলেই করোনা থেকে সুরক্ষা পাওয়া যাবে। করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত থাকার জন্য অজু একটি বড় উপায় হতে পারে। অজু পানি শুধু বাহ্যিক পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতই করে না, মানুষের দেহ ও মনের প্রশান্তি বৃদ্ধি করে।

২৪ ঘন্টা/এম আর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *