দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত চট্টগ্রামে করোনা নমুনা পরীক্ষার অপ্রতুলতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।
তিনি আজ শুক্রবার (১৫ মে) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
এ সময় জনদুর্ভোগ লাঘবে জনতার ঐক্য চাই শীর্ষক নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা সুজন বলেন, দেশের আমদানি রপ্তানির স্বর্ণদ্বার বন্দর, সিইপিজেড, কেইপিজেড, বিভিন্ন ব্যবসা বানিজ্য কেন্দ্র, ছোট বড় ভারী এবং হালকাশিল্প খ্যাত চট্টগ্রাম নগরীতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন শিল্প কলকারখানা খুলে দেওয়ার ফলে এ সংক্রমণ বেড়েই চলছে। অন্যদিকে শিল্প প্রতিষ্টানগুলোও সরকার নির্ধারিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিষ্টান পরিচালনা করছেন না। এতে করে চট্টগ্রাম নগরী এবং জেলায়ও এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে।
তিনি বলেন,করোনাভাইরাসের দ্রুতগতির সংক্রমণ ব্যবস্থার বিপরীতে চিকিৎসাসেবার সুযোগ এখানে একেবারেই অপ্রতুল। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও বেশি বেশি নমুনা পরীক্ষার উপর গুরুত্বারোপ করছেন।
উল্লেখ্য যে চট্টগ্রামে প্রতিদিন যে হারে করোনা উপসর্গের রোগী বাড়ছে সে তুলনায় নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা নাই। নমুনা পরীক্ষা করতে গেলে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে কিন্তু তারপরও নমুনা পরীক্ষা করা হবে কিনা তারও কোন নিশ্চয়তা নেই। নমুনা সংগ্রহ করার বিপরীতে পরীক্ষা এবং রিপোর্ট পাওয়ার দীর্ঘসুত্রতা বাড়ছে। এতে করে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। এছাড়া দেখা যাচ্ছে যে উপসর্গ প্রকাশ পাওয়া রোগীর নমুনা সংগ্রহ করতে ফোন করা হলেও নির্ধারিত টিমের সাড়া মিলছে না। করোনা বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে নমুনা পরীক্ষার মেশিনের ক্ষমতা সীমিত হওয়ায় নমুনা সংগ্রহ ও রিপোর্ট পেতে বিলম্ব হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন রোগী এবং তার স্বজনরা। আবার অনেকে নমুনা পরীক্ষা করতে দিয়ে দৈনন্দিন স্বাভাবিক কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। হোম আইসোলেশনে থাকতে বলা হলেও অনেকে এক্ষেত্রে বড়োই উদাসীন। এর ফলে নতুন নতুন রোগী আক্রান্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন,আমরা চট্টগ্রামবাসী অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিলাম বেসরকারি হাসপাতাল মালিকরা হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালকে করোনা চিকিৎসায় বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসেবে তৈরী করবেন। ইতিমধ্যে তারা ঘোষণাও দিয়েছিলেন ২৫ এপ্রিল এর আনুষ্টানিকতা শুরু হবে কিন্তু এখনো সেই হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় চট্টগ্রামে করোনা চিকিৎসায় নানা সংকট বেড়েই চলছে। এতে করে জনমনে উদ্বেগ উৎকন্ঠা বাড়ছে।
সুজন বলেন,ইতিপূর্বে ঢাকার তিনটি বেসরকারি হাসপাতালকে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) রোগী শনাক্তের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। যেখানে ফি দিয়ে নমুনা পরীক্ষা করাতে পারবেন রোগীরা। আমরা চাই চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতাল মালিকরাও সেরকম একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে স্বাস্থ্য সেবায় প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখুক। আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার একটি অনিবার্য অংশ হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতালগুলো। আমাদের জনগনের যেমন তাদের প্রতি দায়িত্ব রয়েছে ঠিক তেমনি বেসরকারি হাসপাতালগুলোরও জনগনের প্রতি সীমাহীন দায়িত থাকা অত্যাবশ্যক। অন্তত সবকটি হাসপাতালে সম্ভব না হলেও আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে করোনার নমুনা পরীক্ষা করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক। মানুষের স্বাস্থ্যসেবার চরম দুঃসহ এ অবস্থায় ত্রাণকর্তার ভূমিকা গ্রহণ করার জন্য বেসরকারি হাসপাতালের মালিকদের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানান তিনি।
এছাড়া আমরা জানতে পেরেছি যে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে পিসিআর মেশিন থাকলেও করোনা পরীক্ষার জন্য উপযুক্ত ল্যাব কিংবা প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই। প্রয়োজন ক্ষেত্রে ব্যাংকের আনুকূল্যে জরুরি ভিত্তিতে এসব চিকিৎসা সরঞ্জাম আমদানি করার অনুমতি প্রদান করার জন্য সরকারের নিকট বিনীত অনুরোধ জানান সুজন।
তিনি যেসব শপিংমল, মার্কেট এবং বাজার সরকারি নির্দেশনা না মেনে ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করছেন সেসব প্রতিষ্টান বন্ধ করে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি বিশেষ আবেদন জানান।
২৪ ঘন্টা/এম আর
Leave a Reply