সন্দ্বীপে যুবলীগ সভাপতির নেতৃত্বে আ’লীগ নেতার বাড়িতে হামলা,নারীসহ আহত ৭

সন্দ্বীপের মুছাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের বাড়িতে বাড়িতে দলবেধে দফায় দফায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। সন্দ্বীপ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ছিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে এই হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় নারীসহ ৭ জন মারাত্মকভাবে আহত হয়ে বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

শুক্রবার (১৫ মে) ইফতারের আগে থেকে শুরু হয়ে এই ঘটনার রেশ চলতে থাকে রাত পর্যন্ত।

হামলার শিকার মুছাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোবারক ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, ‘রাকিব নামের এক ছাত্রলীগ কর্মী গত তিন মাস ধরে মোবাইল ফোনে আমার স্ত্রীকে বিরক্ত করছে। রাকিবকে ব্যক্তিগতভাবে এসব অপকর্ম করতে নিষেধ করার পরেও সে দ্বিগুন হারে বিরক্ত করে যাচ্ছিলো, রাকিবসহ আরো কয়েকজন বখাটে প্রতিনিয়ত পুকুর পাড়ে আড্ডা দিতো যে কারনে মোবারকের বাড়ির মহিলারা পুকুর ব্যবহার করতেও সমস্যায় পরতো, গত শুক্রবার (১৫ মে) বিকেলে সে আমার বাড়ির পুকুর পাড়ে আড্ডা মারতে আসলে আমি তাকে জোর করে তাড়িয়ে দিয়েছিলাম।

এরপর আমি বাজারে গিয়ে কিছু সদাইপাতি কিনে ফেরার পথে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ভাগ্নে ও অপহরণ মামলার আসামী নুরনবী শাকিল ও রাকিবসহ ২০-২৫ জন মিলে আমার ওপর অতর্কিত হামলা করে। ইফতারের আগ মুহূর্তে তারা আবার বাড়িতে এসে আমার ওপর হামলা চালায়। এ সময় আমার মাকেও লাঠি ও দা’য়ের পিঠ দিয়ে মেরে আহত করে। এসময় আমাদের ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাবেক সেক্রেটারি ফোরকানের ছেলে আমাকে বাঁচাতে আসে। এর জের ধরে পরে ফোরকানের পরিবারের ওপরও তারা হামলা চালায়।’

তৃতীয় দফায় মুছাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ফোরকান উদ্দীনের বাড়িতে হামলার সময় উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নিজে উপস্থিত ছিলেন জানিয়ে ফোরকান উদ্দিন চট্টগ্রাম বলেন, ‘হঠাৎ ছিদ্দিকসহ ২৫-৩০ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী এসে আমার মা, বউ, ছেলেদের ওপর হামলা চালায়। আমার যে ছেলে মোবারককে বাঁচিয়েছিল তাকে না পেয়ে অন্যদের ওপর তারা হামলা চালায়। আমরা এখন গাছুয়া হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি। এই ঘটনার কথা সন্দ্বীপের এমপিসহ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ সভাপতি সবাইকে জানানো হয়েছে।’ সুস্থ হলে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে তিনি জানান।

এই বিষয়ে মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল খায়ের নাদিম বলেন, ‘এই ঘটনা খুবই দুঃখজনক। যুবলীগ সভাপতি ছিদ্দিকের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে। মোবারক ও ফোরকানের পরিবারের কয়েকজনকে মেরে রক্তাক্ত করা হয়েছে। এই ঘটনা এমপি মহোদয়কে জানিয়েছি। তিনি চিকিৎসা করতে বলেছেন। পরে তিনি ঘটনা দেখবেন বলে জানিয়েছেন।’

তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে যুবলীগ সভাপতি ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমি হামলার সময় ছিলাম না। হামলার পর পুলিশ যখন তদন্ত করতে গেছে তখন সেখানে আমিও গিয়েছিলাম। আমি এখন থানায় আছি।’

এদিকে ছিদ্দিকুর রহমান পুলিশের তদন্ত দলের সাথে ঘটনাস্থল ঘুরে থানায় এসেছেন বলার মিনিট দশেক বাদে বিস্তারিত জানতে চাইলে সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি কিছু জানিনা। ঘটনা তদন্ত করতে থানা থেকে লোক গেছে, তারা আসলে বলতে পারবো।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুবলীগ সভাপতির নির্যাতনের স্বীকার এলাকাবাসী থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায় সিদ্দিকুর দীর্ঘদিন যাবত এলাকায় ত্রাসের রাজনীতি কায়েম করে যাচ্ছে তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতেও ভয় পায়। সন্ত্রাসী বাহিনীর বেশিরভাগ সদস্য সিদ্দিকের আত্মীয় স্বজন বলে জানা যায়। এদের মধ্যে তার ভাগ্নে রাজু ও নুরনবী শাকিল গতবছর এক স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ করে ও অপহৃত ছাত্রীর ভাইকে কুপিয়ে আহত করার মামলার আসামী।

২৪ ঘণ্টা/এম আর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *