চট্টগ্রামসহ সারাদেশে করোনা আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে যখন আতঙ্কজনক পর্যায়ে ঠিক তখনই ছুটি বাতিল করে যান চলাচলসহ সব প্রতিষ্ঠান চালু করার সরকারী সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের বিভাগীয় সহসভাপতি ও নগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের বিভাগীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ও নগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শাহেদ।
আজ শনিবার (৩০ মে) এক যৌথ বিবৃতিতে নেতৃদ্ধয় বলেন, করোনাভাইরাস সারাদেশে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ে দুর্যোগময় পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। সারাদেশের তুলনায় চট্টগ্রামে গত কয়েকদিনে করোনা সংক্রমন ও মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
এর কারন হিসেবে চট্টগ্রামের দূর্বল চিকিৎসা ব্যবস্থাকে দায়ী করে তাঁরা বলেন, চট্টগ্রামের চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়েছে। করোনা আক্রান্তদের জন্য হাসপাতালে পর্যাপ্ত আইসিইউ, অক্সিজেন, সিলিন্ডার ও বেডের ব্যবস্থা নেই। স্বাস্থ্যখাতে লাগামহীন সরকারী লুটপাট ও অব্যবস্থাপনার কারনে করোনা রোগীরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
হাসপাতালে গিয়ে করোনা রোগীরা ভর্তি হতে পারছেনা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা এ হাসপাতাল থেকে ও হাসপাতালে দৌঁড়াচ্ছেন। বিনাচিকিৎসায় রোগী মারা যাচ্ছে। চট্টগ্রামের মানুষ আজ চিকিৎসাবিহীন মরণের ভয়ে ভীত। স্বাস্থ্য খাতের দৈন্যতার কারণে শুধু করোনা আক্রান্ত নয়, সাধারণ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত রোগীরাও চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
চট্টগ্রামে বর্তমানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। অথচ চট্টগ্রামের করোনা হাসপাতালে বেড আছে মাত্র ৩১০ টি। এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসা সুবিধা বাড়ানো খুবই জরুরী। এছাড়া ক্রমবর্ধমান মৃত্যুর সংখ্যা কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।
চিকিৎসা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোটা যখন জরুরী তখন সরকার আগামীকাল ৩১ মে থেকে সব প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে, যা আত্মহত্যার নামান্তর।
করোনা সংক্রমণ এড়ানোর আগাম প্রস্তুতির অনেক সুযোগ থাকলেও সরকার চরম অবহেলা ও তাচ্ছিল্যের সাথে সব সুযোগ নষ্ট করে পুরো দেশকে আজ ঝুঁকির মুখে দাঁড় করিয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় করোনা রোগীদের সেবা দিতে সরকার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলেই চট্টগ্রামে মৃত্যু ও সংক্রমণ ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। পোশাক কারখানা ও দোকানপাট বন্ধের বিষয়ে শিথিলতার কারণে চট্টগ্রামে সামাজিক দূরত্ব ব্যবস্থাও ভেঙ্গে পড়ে। এটাও চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর হার বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
চট্টগ্রামে লকডাউন দেওয়ার আহবান জানিয়ে তাঁরা বলেন, অর্থনীতির স্বর্ণদ্বার খ্যাত বন্দর নগরী চট্টগ্রামে করোনার ব্যাপক বিস্তার গোটা দেশকেই অচল করে দিতে যথেষ্ট। এই দূর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে সরকার ছুটি বাতিল করে ব্যাপকহারে করোনাভাইরাস সংক্রমণের রাস্তা তৈরি করছে। এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের ফলে সৃষ্ট পরিণতির জন্য সরকারই দায়ী থাকবে। জনগণের প্রতি বিনা ভোটে গঠিত আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা না থাকায় তারা একের পর এক আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশকে ভয়ঙ্কর পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
২৪ ঘণ্টা/এম আর
Leave a Reply