সেই অধ্যাপক আনোয়ারের করোনা নেগেটিভ/নিজ গ্রামে কবর দিতে বাঁধা প্রদানকারীদের শাস্তি দাবী পরিবারের

অধ্যাপক আনোয়ার

২৪ ঘণ্টা ডট নিউজ। আলীউর রহমান : রাউজান নোয়াপাড়ার বাসিন্দা শিক্ষক আনোয়ার হোসেন (৫৯)। তিনি রাঙ্গুনিয়ার সৈয়দা সেলিমা কাদের চৌধুরী ডিগ্রী কলেজের জীব বিজ্ঞানের সহকারি অধ্যাপক। সেই সূত্রে মরিয়মনগর ইউনিয়নের পূর্ব সৈয়দবাড়ি গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন।

গত এক সপ্তাহ আগে থেকে তিনি জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। করোনা ভাইরাস আক্রান্ত মনে করে নমুনা পরীক্ষা করতে দেন গত ৯ জুন কিন্তু রিপোর্ট পাননি।

এ অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার (১১ জুন) বিকাল থেকে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। রাত ৮টার দিকে তাকে আনা হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু ততক্ষণে আনোয়ার হোসেন চলে গেছেন না ফেরার দেশে।অধ্যাপক আনোয়ারের লাশ নিয়ে পরিবারের আহাজারী

গভীররাতে আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী ও স্বজনদের আহাজারি শুনলোনা কেউ। লাঠি হাতে পথরোধ করলো আপন পাড়ার ভাই বন্ধুরা। শত অনুনয়, মিনতি নোয়াপাড়ার লোকজনের তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরাতে পারেনি। তারা শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের মরদেহ ফেরত পাঠায়।

নিরুপায় স্ত্রী গভীর রাত পর্যন্ত স্বামীর মরদেহ নিয়ে ঘুরেছেন রাস্তায়। রাত দুইটার দিকে রাঙ্গুনিয়া কলেজের পেছনে মরিয়মনগর পাগলা মামার মাজার এলাকায় স্ত্রী আহাজারি শুনে এগিয়ে আসে গাউছিয়া কমিটির সদস্যরা।

জানা যায়, আনোয়ার হোসেনের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী মরদেহ নিয়ে আসে জন্মস্থান রাউজানের নোয়াপাড়ায়। কিন্তু সেখানকার লোকজন মরদেহ দাফন করতে দেয়নি। আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী ও স্বজনদের আহাজারি, শত অনুনয়, মিনতি নোয়াপাড়ার লোকজনের তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরাতে পারেনি। তারা শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের মরদেহ ফেরত পাঠায়।অধ্যাপক আনোয়ারের লাশ দাফন গাউছিয়া কমিটির

নিরুপায় স্ত্রী মরদেহ নিয়ে যান রাঙ্গুনিয়া থানার পাগলা মামার মাজার প্রাঙ্গণে এবং আহাজারি করতে থাকেন। খবর পায় স্থানীয় গাউছিয়া কমিটির সদস্যরা বিষয়টি রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশকে জানানো হয়। পরে পুলিশ ও গাউছিয়া কমিটির সদস্যরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে রাতেই জানাজা পড়িয়ে পূর্ণ ধর্মীয় মর্যাদায় আনোয়ার হোসেনের মরদেহ দাফন করেন।

নিজের জন্মস্থান রাউজানের নোয়াপাড়ায় মরদেহ দাফনে বাধা এবং রাঙ্গুনিয়ায় দাফন করার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ ও গাউছিয়া কমিটির এমন মানবিক কাজকে সাধুবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী।

রাঙ্গুনিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মকর্তা আজ শিক্ষক আনোয়ারের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসার তথ্য দেন। রিপোর্ট পাওয়ার পর নিজ গ্রামের যারা রাতে মরদেহ দাফনে বাঁধা দিয়েছেন তাদের শাস্তির আওতায় আনার দাবী জানান অধ্যাপক আনোয়ারের পরিবার।

২৪ ঘণ্টা/আলীউর রহমান/রাজীব প্রিন্স

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *