উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর আশেপাশের এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি হচ্ছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
আজ বুধবার সকালে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
সেই সঙ্গে নদীবন্দরগুলোতে এক নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ বলেন, ‘সক্রিয় মৌসুমি বায়ু এবং উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর আশেপাশের এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি হওয়ায় আজ সকাল ১০টা থেকে আগামীকাল সকাল ১০টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলি মিটার) কিংবা অতিভারী (৮৯ মিলি মিটারের চেয়ে বেশি) বৃষ্টিপাত হতে পারে। ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগে ভূমি ধসের শঙ্কা আছে।’
তিনি বলেন, ‘রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব দিকে থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে। আগামী দুই থেকে তিন দিন বিচ্ছিন্নভাবে সারা দেশেই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে।’
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষজ্ঞ কমিটির মত অনুযায়ী, জুন মাসের প্রথমার্ধের মধ্যে সারা দেশে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু (বর্ষা) বিস্তার লাভ করার কথা। এ ছাড়া, মাসজুড়ে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এই মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি মৌসুমী নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। মৌসুমি ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের কিছু জায়গায় স্বল্প মেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
মে মাসে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৭ দশমিক এক শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে ঢাকা ও সিলেট বিভাগে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত ১৫ মে দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও এর আশে আন্দামান সাগর এলাকায় একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়। এটি ১৬ মে দুপুর ১২টার দিকে দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। ১৮ মে আরও ঘনীভূত হয়ে পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর পাশের এলাকায় সুপার সাইক্লোনে রূপ নেয়। ঝড়টির নাম দেওয়া হয় আম্পান। ২০ মে আম্পান সাগর দ্বীপের পূর্ব পাশ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করে। এ সময় দেশের কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণ হয়। ১৭ মে যশোর ও রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। মে মাসে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিক ছিল।
২৪ ঘণ্টা/এম আর
Leave a Reply