চিকিৎসা ও ওষুধ বিপণনে জড়িত অসাধুদের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধের দাবি ক্যাবের

চট্টগ্রামে স্বাস্থ্য সেবা ও ওষুধ বিপণনে জড়িত গুটিকয়েক অসাধুদের রাজনৈতিক পৃষ্টপাষোকতার কারনে আজ বেহাল দশা। সরকারী-বেসরকারী হাসপাতালে রোগী নাই, চিকিৎসক নাই, ফামের্সীতে ওষুধ নাই, অক্সিজেন এর দোকানে ওষুধ নাই। সর্বত্র হাহাকার আর শ্বাস নেবার দাবি।

আর এ সমস্ত অপকর্মকারীরা ক্ষমতাসীন দলের কিছু রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় তাদেরকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে জনগনকে জিম্মি করে জনগনের পকেট কাটছেন।

সেকারনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা করোনাকালীন সময়ে সরকারী বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতের কথা বললেও তারা সংকট তৈরী করে রোগী ভর্তি না করিয়ে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর সারি দীর্ঘ করেছেন। কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা সকাল সন্ধ্যা করোনায় জনদূর্ভোগ না বাড়ানো, চিকিৎসা, ত্রাণ ও অন্যান্য সেবা চিশ্চিতের জন্য কাজ করলেও একশ্রেণীর নেতাদের মদদে তারা এ সমস্ত অপকর্ম করে যাচ্ছেন। সেকারনে একজন চিকিৎসক নেতা ছাত্রলীগের আর একজন নেতাকে প্রকাশ্যে লাশ ফেলার হুমকি প্রদান করছেন।

ওষুধ, অক্সিজেন সিলিন্ডার সোনার হরিন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন বিষয়গুলি জানার পরও নিরব। বেসরকারী ক্লিনিকে রোগী ভর্তি না করানো ও হাজারী লেনে ওষুধের পাইকারী দোকানে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত একবার অভিযান পরিচালনা করলেও পরবর্তীতে আর অভিযান করতে পারেনি। তাই চিকিৎসা ও ওষুধ বিপণনে জড়িত অসাধুদের রাজনৈতিক মদদ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম।

বুধবার (২৪ জুন) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ন সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, ক্যাব যুব গ্রুপের সভাপতি চৌধুরী কে এনএম রিয়াদ ও সম্পাদক নিপা দাস উপরোক্ত দাবি জানান।

বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন করোনামহামারী যুদ্ধে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য সেবার সাথে জড়িতরাই মূল ভূমিকা পালন করে জাতিকে এই ভয়াবহ বিপর্যয় থেকে উদ্ধার করা করার নেতৃত্ব প্রদান করে আসছে। কিন্তু মাঝে মধ্যে গুটিকয়েক অসাধু ব্যবসায়ী ও চিকিৎসা পেশার সাথে জড়িতদের হঠকারী সিদ্ধান্তের কারনে করোনামহামারীতে জীবন বাঁচানো চিকিৎসক সমাজের ভাবমুর্তি প্রশ্নের সম্মুখীন।

কিন্তু করোনামহামারী শুরুর প্রাক্কালে চিকিৎসকের সুরক্ষা সামগ্রীর অভাব, পিপিই সংকটের কথা বলে গুটিকয়েক চিকিৎসা পেশার সাথে জড়িতরা এই মহামারীতে বেসরকারী ক্লিনিকরোগী ভর্তি, প্রাইভেট চেম্বারে দেখা বন্ধ করে দেন। ফলে প্রতিদিন চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় হাসপাতাল থেকে হাসপাতাল ঘুরে অ্যাম্বুলেন্সে বিনা চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর সারি দীর্ঘ হচ্ছে। বেসরকারী ক্লিনিকে রোগী ভর্তি নিতে হাইকোর্টের একটি আদেশ দেবার পরও পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি।

বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন চিকিৎসা সেবার সাথে জড়িত কিছু লোকের অতি উৎসাহে চিকিৎসক ও রোগীকে মুখোমুখি দাড় করানো হয়েছে। চিকিৎসক রোগীর ত্রাণ কর্তা। সংকট কালে মানুষের জীবন বাঁচাবে। আর এই ব্রত নেবার শপথ নিয়ে তারা চিকিৎসা পেশায় যোগদান করেছেন। আর সংকটকালীন সময়ে কিছু লোক গণপরিবহন শ্রমিকদের মতো মানুষকে জিম্মি করে দাবি আদায় করার নজির সৃষ্ঠি করে তাদের সমকক্ষ বানাতে চায়। মজার কাহিনী হলো রাজনৈতিক বিভেদ থাকলেও মানুষকে জিম্মি করতে সরকার ও বিরোধী দলের সমর্থক সকলেই ঐক্যবদ্ধ হন, বিষয়টি বেদনার। কারন চিকিৎসক ও চিকিৎসা পেশা ও ব্যবসার সাথে অন্য যে কোন পেশা ও ব্যবসার সামঞ্জস্য ও তুলনা করা সমুচিন নয়।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা না পাবার মূল কারণ কিছু চিকিৎসক একদিকে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক আবার অন্যদিকে বেসরকারী ক্লিনিকের মালিক। কিছু চিকিৎসকদের দু’মুখি আচরণের কারণে মানুষ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পাচ্ছে না, আর বেসরকারী ক্লিনিকে গিয়েও জিম্মি। চট্টগ্রামের কিছু বেসরকারী ক্লিনিকের মালিক ও কতিপয় বিএমএ নেতারা যোগসাজসে প্রশাসনকে নানা ভাবে বিভ্রান্ত করে কোভিড পরীক্ষার রেজাল্ট প্রদর্শন, করোনা সেবা দিলে সাধারন রোগীদের অসুবিধা হবে ইত্যাদি অযুহাতে কোন রোগী ভর্তি না করে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে পুরো চট্টগ্রাম নগর জুড়ে চিকিৎসা সেবার জন্য হাহাকার। অধিকন্তু সেবা না পেয়ে জনগন ক্ষুদ্ধ ও অসন্তোষের মাত্রা প্রতিনিয়তই বাড়ছে।

২৪ ঘণ্টা/এম আর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *