টনসিলের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে নয় ঘণ্টা প্রতিক্ষায় থেকে মারা গেলেন গর্ভবতী নারী

সাত মাসের গর্ভবতী নারী টনসিলের ব্যথা নিয়ে নয় ঘণ্টা হাসপাতালের দরজায় চিকিৎসার জন্য ঘুরে শেষ পর্যন্ত বিনা চিকিৎসায় মারাই গেলেন।

কোনো কারণ ছাড়াই করোনারোগী সন্দেহে দুই হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। পাশেও যায়নি কোনো ডাক্তার, নার্স।

উপায় না দেখে অন্তত সিজার করে বাচ্চাটা বের করে নেওয়ার জন্য স্বজনরা আকুতি জানালেও সবাই তাড়িয়ে দিল দুর দুর করে। ৯ ঘন্টার লড়াইগর্ভবতী শেষে ওই নারী বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

কক্সবাজারের চকরিয়ার বেতুয়াবাজার এলাকার রাবেয়া (৩২) সাত মাসের গর্ভবতী ছিলেন।

বেশ কিছুদিন আগে চকরিয়ায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তার ঘরে পানি উঠে যায়। ওই সময় পানি সরানোসহ ঘরের অন্যান্য কাজ করতে গিয়ে ঠান্ডা লেগে যায় তার।

রাবেয়ার ভাই দন্ত চিকিৎসক ডা. মিজান ২৪ ঘণ্টা ডট নিউজকে বলেন, ‘ঘর থেকে বন্যার পানি সরাতে গিয়ে সে টনসিলে আক্রান্ত হয়। টনসিল বেড়ে যাওয়ায় একপর্যায়ে তার খাওয়াদাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। তার শ্বাসকষ্টও দেখা দেয়। সিজার করে বাচ্চাটা বের করে নিতে পারলে হয়তো তাকে বাঁচানো যেত। একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ তাকে দেখে গাইনি ওয়ার্ডে রেফার করার পরেও তাকে গাইনি চিকিৎসা দেওয়া যায়নি। কেউ চেকআপ পর্যন্ত করেনি। এটা ডাক্তারের এই অবহেলায় মারা গেলো আমার বোন।

জানা যায় ওইদিন সকাল নয়টার দিকে জমজম হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয় মেডিসিন ওয়ার্ডে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে গাইনি ওয়ার্ডে রেফার করেন। কিন্তু করোনারোগী সন্দেহে গাইনি ওয়ার্ডে থাকা ডা. নাসিমা ও ডা. ফয়েজ রোগীকে গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি নিতে রাজি হননি। পরে সেখান থেকে রাবেয়াকে নিয়ে যাওয়া হয় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রাবেয়াকে ভর্তি করে রাখা হয় করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে। এখানে এসে রাবেয়ার অবস্থার আরও অবনতি হয়। তাকে গাইনি ওয়ার্ডে স্থানান্তর করতে চাইলে হাসপাতাল থেকে পরিবারের সদস্যদের বলা হয়, ‘এখানে চিকিৎসা হবে না, রোগীকে চট্টগ্রাম নিয়ে যান।’

কক্সবাজার সদর হাসপাতাল থেকে মালুমঘাট নেওয়ার পথে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে পেটে সাত মাসের বাচ্চাসহ নিয়ে রাবেয়ার মৃত্যু হয়।

২৪ ঘণ্টা/এম আর/এ আর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *