নগরীর প্রান্তিক শ্রেণিকে আর্থ-সামাজিক নিরাপত্তায় আনা হবে: চসিক মেয়র

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন পাথরঘাটা ওয়ার্ডস্থ বান্ডেল রোড সেবক কলোনীতে ১৪ তলা বিশিষ্ট ৩টি নির্মাণাধীন ভবনের অবশিষ্ট কাজ আগামী ২০ জুলাইয়ের মধ্যে শেষ করার জন্য ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের নির্দেশনা দিয়ে বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মীদের জন্য এই আবাসন কমপ্লেক্স সরকার অনুসৃত সারাদেশে প্রান্তিক কর্মজীবী জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক নিরাপত্তারই অংশ। এই আবাসন প্রকল্পের ৫৫৯ টি ফ্ল্যাট শিঘ্রই পরিচ্ছন্ন কর্মী পরিবারের কাছে হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের ক্ষেত্রে নতুন যুগের সূচনা ঘটবে।

তিনি জানান, বান্ডেল রোডস্থ সেবক কলোনি ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে তিনটি বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পাশাপাশি নগরীতে চসিকের আরো তিনটি সেবক কলোনীতে বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ কাজ সমাপ্তির পথে। এভাবে সকল পরিচ্ছন্ন কর্র্মীর মাথাগোঁজার ঠাই তৈরী করে দিয়ে মানুষের অন্যতম একটি প্রধান মৌলিক অধিকার বাসস্থানের চাহিদা পূরণ করতে আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

চট্টগ্রাম নগরীতে পর্যায়ক্রমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী প্রতিটি পরিবারকে আর্থ-সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ে আওতায় এনে সরকার দারিদ্র বিমোচনের যে লড়াই অব্যাহত রেখেছেন তা করোনাকালে আপাতত স্তিমিত হলেও কখনো গতি হারাবে না।

তিনি আরো বলেন, সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন বিভাগে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের মোট সংখ্যা ৩৬৩৯ জন। তাই তাদের আবাসনের চাহিদার তুলনায় তা পূরণ করার সামর্থ্য অপ্রতুল। তারপরও যারা নগরীকে পুত:পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন রাখছেন তাদের বাসস্থানের চাহিদা পূরণের বিষয়টিকে আমি অগ্রাধিকার দিই।

মেয়র আরো জানান যে, সেবক কলোনিতে নির্মিতব্য আবাসন কমপ্লেক্সে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র, চিত্তবিনোদন কেন্দ্র ও প্রার্থনার উপাসনালয় থাকবে।

তিনি আজ সকালে বান্ডেল রোডস্থ সেবক কলোনিতে নির্মাণাধীন আবাসন প্রকল্প পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন।

পরিদর্শনকালে চসিক কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্ণেল সোহেল আহমদ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মনিরুল হুদা, ঝুলন কান্তি দাশ, নির্বাহী প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম, সহকারী প্রকৌশলী সালমা খাতুন, উপ প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম, উপসহকারী প্রকৌশলী রিফাতুল করিম, তানজিম ভূইয়া, বান্ডেল হরিদাস যুবকল্যাণ সংঘের জগনাথ দাশ ঝর্না, সাধন দাশ, ডালিম দাশ ও অমর দাশ উপস্থিত ছিলেন।

চসিকের স্বাস্থ্যবিভাগে সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান করলেন ইউএনডিপি ও ইউকে এইড

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন বলেছেন, সম্প্রতি সারা বিশ্বে কোভিড-১৯ একটি মহামারী রূপ ধারণ করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশেও তা চরম আকার ধারন করেছে। সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে আমাদের দেশের প্রান্তিক মানুষজন বিশেষ করে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার বসবাসরত মানুষ। করোনা মহামারী বর্তমান অচল পরিস্থিতির কারণে কর্মহীন মানুষজন চরম দূর্দশার ভিতর দিয়ে দিন যাপন করছে এবং রয়েছে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতেও । এমন অবস্থায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ জরুরী স্বাস্থ্য সেবাসহ কোভিড-১৯ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় নানামুখী উদ্যোগ গ্রহন করেছে। এ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী পরিধান ও ব্যবহার করার কোন বিকল্প নেই।

আজ বিকেলে চসিক নগরভবনের কনফারেন্স হলে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক পরিচালিত ইউএনডিপি ও ইউকে-এইড এর পক্ষ থেকে সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণকালে মেয়র এসব কথা বলেন।

এসময় চসিক প্যানেল মেয়র ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ এ কে এম রেজাউল করিম, আইটি অফিসার মো. ইকবাল হাসান, মেমন মাতৃসদন হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. প্রীতি বড়ুয়া, ইনফ্রাক্টাকসার এন্ড হাউজিং অফিসার মো. সাইফুর রহমান চৌধুরী, আর্থ সামাজিক ও পুষ্টি বিষয়ক কর্মকর্তা মো. হানিফ, টাউন ফেডারেশন এর চেয়ারপার্সন কোহিনুর আক্তার, এলআইইউপিসি প্রকল্পের কর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন।

আর্চ বিশপ মজেস এম. কস্তা’র কফিনে সিটি মেয়রের শ্রদ্ধাঞ্জলি
তিনি সাম্য-মৈত্রী-কল্যাণের মঙ্গলালোক বর্তিকা:মেয়র

নগরীর পাথঘাটাস্থ জপমালা রাণী ক্যাথিড্রাল গীর্জায় শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এবং হাজারো মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন চট্টগ্রামের আর্চ বিশপ ও খ্রিস্টান সমাজের প্রধান ধর্মগুরু মজেস এম. কস্তা, সিএসসি। তাঁর মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন।

এ সময় মেয়র আর্চ বিশপের বর্ণাঢ্য ও পুতঃ পবিত্রময় শুদ্ধাচারী জীবনাচারণের কথা উল্লেখ করে বলেন, আর্চবিশপ মোজেস এম. কস্তা খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ধর্মগুরু হলেও তিনি চট্টগ্রামের সব ধর্মের, সব শ্রেণী-পেশার মানুষের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন। সর্বোপরি তিনি ছিলেন একজন সর্বজনীন সাম্য-মৈত্রী-কল্যাণের মঙ্গলালোক বর্তিকা। এ অসাম্প্রদায়িক চেতনার ধর্মগুরু চট্টগ্রামে শিক্ষা, চিকিৎসাসহ সেবামূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডেও নিজেকে জড়িত রেখেছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে চট্টগ্রামবাসী একজন সর্বজন স্বীকৃত সমাজ সেবক হারালো।

এ সময় চসিক কাউন্সিলর ইসমাইল বালী, হাসান মুরাদ বিপ্লব, জহর লাল হাজারী, শৈবাল দাশ সুমনসহ অন্যদের মধ্যে মো. জাহাঙ্গীর আলম, আনিসুর রহমান ইমন, পুলক খাস্তগীর ও গোপাল দাশ টিপু উপস্থিত ছিলেন।

২৪ ঘণ্টা/এম আর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *