চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, ভূ-প্রকৃতিগত ভাবে চট্টগ্রাম হচ্ছে একটি প্রাকৃতিক জনপদ। প্রায় ৭০ লক্ষ জনঅধ্যুষিত এই জনপদের কল্যাণ ও উন্নয়নে আমি আমার সামর্থ্য উজাড় করে দিয়েছি। নগরীর প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা, তা নিরসনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় কিছু মেগা প্রকল্প সংয্ক্তু হয়েছে। এগুলো বাস্তাবায়নের কাজ চলমান রয়েছে। তবে জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ওয়াসাসহ যে সরকারি স্বায়ত্ব-শাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো আছে তার পারস্পরিক সমন্বয় প্রয়োজন।
নগর উন্নয়নে একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে যেভাবে যা কিছু দরকার তা করতে আমি উদ্যোগী হয়েছি। আমি আশা করি এই প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতা থাকবে। এই প্রচেষ্টা বাস্তবায়নে পরবর্তীতে যারা দায়িত্ব পালন করবেন রাজনীতিক হিসেবে আমি যে অবস্থানে থাকি না কেন তাতে আমি একাত্ব হবো।
তিনি আরো বলেন, আমাদের এ নগরীর উপর প্রবাহিত ৩৬টি খাল পানি নিষ্কাশনের প্রধান নির্গমন পথ। এ নগরীতে যেগুলো পাহাড় পরিবেষ্টিত এলাকা রয়েছে তাথেকে যে মাটি নিচে নেমে আসে তার ফলে পানি নিষ্কাশন পথ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এজন্য একটি সঠিক পরিকল্পনা আগেই গ্রহন করা উচিত ছিল। তবে এখন যা হয়েছে তার বাস্তবায়ন যদি সম্ভবপর হয় তাহলে একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি সমন্বয়ের উপরেই গুরুত্ব দিই।
চট্টগ্রামের উন্নয়নের সাথে সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি ও আধাসরকারি সংস্থার কর্তৃপক্ষগণ সরকার নিযুক্ত ও নিয়োগকৃত। তবে জনপ্রতিনিধি হিসেবে মেয়র পদে থেকে জবাবদিহিতার সকল দায়ভার আমার কাঁধে চেপে বসেছে। এই দায় বহন করে আমি কি করতে পেরেছি বা কি করতে পারিনি তার মূল্যায়ন নগরবাসীর উপর ছেড়ে দিলাম।
তিনি আরো বলেন, পরিকল্পিত নগরায়নের ক্ষেত্রে যে কোন আবাসিক এলাকায় যুগোপযোগী যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত হলে যেখানে অধিবাসীদের জীবন স্বাচ্ছন্দ হবে। এই যোগাযোগ ব্যবস্থাপনাকে সক্রিয় রাখতেই আজ যে প্রকল্প শুরু হলো তার সুষ্ঠু ও যথাযথ বাস্তবায়ন সম্ভব হলে সকলেই উপকৃত হবেন।
মেয়র আজ সকালে শুলকবহর ওয়ার্ডস্থ নাছিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির ৪ ও ৫ নং সংযোগ সড়কে ব্রিজ নির্মাণ কাজ, চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অভ্যন্তরিন উন্নয়নকৃত রাস্তা ও দি চিটাগাং কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির ৪র্থ প্রকল্পের মাটি ভরাট কাজের উদ্ভোধনকালে এসব কথা বলেন।
মেয়র প্রকল্পের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও প্রকৌশলীদের নির্দেশ দেন।
এসময় কাউন্সিলর মোরশেদ আলম,সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর জেসমিন পারভীন জেসী, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, চসিক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো.কামরুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী মো.আবু সিদ্দিক, সহকারী প্রকৌশলী মিসবা উল আলম, নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির সেক্রেটারি মো. শাহাজাহান, মো. ইদ্রিস, যুবনেতা ওয়াহিদুল আলম শিমুল, এস এম মামুনুর রশিদ, আনিসুর রহমান,জাফর সাদেক,তাজ উদ্দিন মোহাম্মদ শিমুল, রাইসুল উদ্দিন,মেহাম্মদ রাশেদুল আমিন, আলাউদ্দিন আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ।
সিটি মেয়রকে স্মারকলিপি দিল
চট্টগ্রাম কমিউনিটি সেন্টার মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দীনের কাছে চট্টগ্রামের কমিউনিটি সেন্টার সমূহ পুনরায় চালু করার অনুমতিসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে স্মারক লিপি দিয়েছেন চট্টগ্রামের কমিউনিটি সেন্টার মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
আজ সকালে টাইগারপাসস্থ চসিক নগর ভবনে মেয়র দপ্তরে এই স্মারকলিপি গ্রহণকালে মেয়র বলেন, আমি একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আপনাদের সুবিধা-অসুবিধা ও দুর্ভোগের কথা জানি। করোনাকালে যে দুর্ভোগ শুরু হয়েছে তাতে আজ অনেক কাজ ও উন্নয়নের গতি থেমে গেছে। বিশেষ করে কমিউনিটি সেন্টারগুলো বন্ধ থাকার কারনে এর সাথে সংশ্লিষ্ট ডেকোরেশন শ্রমিক, বাবুর্চী,বয়সহ অনেকেই বেকার হয়ে দুরাবস্থায় জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। তাই আপনাদের দাবী দাওয়ার প্রতি আমার সহানুভুতি এবং দায়িত্ব নিয়ে কিছু করা দরকার। আমি আপনাদের কথা শুনতে এসেছি, দাবি-দাওয়া শুনেছি। আমি, আপনি, আপনারা সংকট জয় করে বেঁচে থাকলে সবকিছু পূরণ করতে জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় পাশে থাকব। এখন আমাদের প্রত্যেককে আগে বাঁচতে হবে এবং বেঁচে থাকার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজের ও সমাজের সুরক্ষা করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এলেই আবার নতুন বাংলাদেশ গড়বো।
তিনি তাদের আশ্বস্থ করে বলেন, শুধু কমিউনিটি সেন্টার মালিক, শ্রমিক নয় জীবন বাঁচাতে সকল জনগোষ্ঠীর জীবিকা নির্বাহে সংশ্লিষ্টদের শরণাপন্ন হয়ে আপনাদের চাওয়া পাওয়া তুলে ধরব। আশা করছি বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এই গুরুত্বপূর্ণ খাতকে রক্ষায় সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
এসময় চট্টগ্রাম কমিউনিটি সেন্টার মালিক সমিতির উপদেষ্টা, প্যানেল মেয়র কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, সভাপতি হাজী মো. সাহবুদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন চৌধুরী দুলাল, সহ-সভাপতি আবদুল মালেক, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, আব্দুল্লাহ মালিক, মো. মাসুদ, রাজেন দাশ গুপ্ত, খোকন দেবনাথ, নুরুল ইসলাম, মো. মাসুম, মো. গিয়াস উদ্দিন, এস এম মোস্তফা, মো. নাসের, সাজেদুল আলম চৌধুরী ও মো. সেলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
২৪ ঘণ্টা/এম আর
Leave a Reply