যশোরে ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

নিলয় ধর,যশোর প্রতিনিধি : যশোরে লাইসেন্স নবায়নের জন্যে বৈধভাবে পরিচালিত বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিদর্শনের পাশাপাশি অবৈধ প্রতিষ্ঠান গুলোতে সাড়াশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে যশোর স্বাস্থ্য বিভাগ।

শনিবার ৮ আগষ্ট সিভিল সার্জন ডাক্তার শেখ আবু শাহীনের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ টিম শহরের ২টি হাসপাতাল ও ১টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিদর্শন করেছে।

একতা এবং মর্ডান হাসপাতালের কার্যক্রম সন্তোষজনক হওয়ায় তাদের লাইসেন্স নবায়নের সুপারিশ করার সিন্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর যশোর ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামের প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। অভিযোগ- অবৈধভাবে এবং স্বাস্থ্য বিধি উপেক্ষা করে পরিচালিত হচ্ছিল। এই নিয়ে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ১৭টি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করলো (স্বাস্থ্য বিভাগ)।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান এই সব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সিভিল সার্জন ডাক্তার শেখ আবু শাহীন জানিয়েছে, বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলো বৈধভাবে পরিচালনার স্বার্থে লাইসেন্স নবায়নের জন্যে নিয়মিত পরিদর্শনের কাজ চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার সকালে একতা ও মর্ডান হাসপাতাল এবং যশোর ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিদর্শন করা হয়েছে।

টিমে ছিলেন যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালর সার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাক্তার আব্দুর রহিম মোড়ল, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার রেহেনেওয়ার রনি ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান।

হাসপাতাল ২টির কর্তৃপক্ষ অনলাইন আবেদনপত্রে যে তথ্য দিয়েছে তা যাচাই-বাছাইয়ে সত্যতা পাওয়া ও সরেজমিন পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম সন্তোষজনক হওয়ায় লাইসেন্স নবায়নের জন্যে সুপারিশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু যশোর ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অনলাইন আবেদনপত্রে দেওয়া তথ্যে জাল জালিয়াতি করাসহ অসংখ্য অনিয়ম ধরা পড়ায় সেটি স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, বলে সিভিল সার্জন জানিয়েছে।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানা যায়, সম্প্রতি ভিজিলেন্স টিম আকস্মিক পরিদর্শনে গিয়ে যশোর ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নানা অনিয়ম ও সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণার প্রমাণ পেয়ে শোকজ নোটিশ জারি করে। ৩ কর্মদিবসের মধ্যে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও তা অমান্য করে ব্যবসা পরিচালনা করছিল যশোর ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ। লাইসেন্সের জন্যে মালিকপক্ষ অনলাইনে আবেদন করেছে এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শনের নির্দেশনাও এসেছে।

শনিবার সিভিল সার্জন ডাক্তার শেখ আবু শাহীনের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ টিম পরিদর্শনে গিয়ে দেখতে পান নোংরা ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি পরিচালনা করা হচ্ছে। টিমের সদস্যরা জানিয়েছে, স্বাস্থ্য বিধি উপেক্ষা করে মানুষের সাথে অব্যাহত প্রতারণার সু-নির্দিষ্ট প্রমাণও পাওয়া যায়। বিভিন্ন প্যাথলজিক্যাল টেস্টের জন্যে মূল্য তালিকার থেকে বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে রোগীদের কাছ থেকে। প্যাথলজি বিভাগটি যে কক্ষে করা হয়েছে তা কোনোভাবেই আইন সম্মত নয়। এমনকি কোনো ডাক্তারও নিয়োগপ্রাপ্ত নেই রিপোর্ট প্রদানের জন্যে। এক্স-রে বিভাগটি পরিচালনা করা হয় টেকনোলজিস্ট ছাড়াই। অর্থাৎ অনলাইন আবেদনপত্রে মিথ্যা তথ্য দেওয়া হয়েছে বলে টিম অভিযোগ করে। পরে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

সিভিল সার্জন ডাক্তার শেখ আবু শাহীন আরও জানিয়েছেন, শনিবার চৌগাছা উপজেলা শহরের ৩টি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করা হয়েছে। সাথে ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার লুৎফুন্নাহার এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান ।

২৪ ঘণ্টা/এম আর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *